ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

২৮ অক্টোবর ঘিরে নগরবাসীর মধ্যে শঙ্কা!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২৩
২৮ অক্টোবর ঘিরে নগরবাসীর মধ্যে শঙ্কা!

ঢাকা: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি, জামায়াতসহ বিরোধী দলগুলো কেউ কাউকে ছাড় না দিয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেওয়ায় আতঙ্কিত নগরবাসী।  

দ্বাদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের এক দফা দাবিতে বিরোধী দলগুলোর ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ ঘিরে রাজধানীবাসীর মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

 

২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ থেকে সরকারকে পতনের বার্তা দিতে চায় বিএনপিসহ সমমনা জোট। অন্যদিকে সমাবেশের নামে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নৈরাজ্য চালাতে না পারে সেজন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দলের মুখোমুখি অবস্থানে আতঙ্কিত নগরবাসী।

পাল্টাপাল্টি মহাসমাবেশের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর সব জায়গায় একটাই আলোচনা, কী হতে যাচ্ছে ২৮ অক্টোবর? রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচির কারণে চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী, শ্রমিক দিনমজুরসহ সবার মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ বিপদে পড়তে পারেন এমনটিও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন নগরবাসী।  

মতিঝিলের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আবুল কাসেম। শনিবার (২৮ অক্টোবর) অফিস থাকায় অনেকটা আতঙ্কিত তিনি। রাজনৈতিক দলগুলোর পল্টন ও মতিঝিল কেন্দ্রিক কর্মসূচি থাকায় মনে মধ্যে ভয় বিরাজ করছে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মিরপুরের বাসা থেকে শনিবার অফিস করা নিয়ে আমি চিন্তিত। যেভাবে রাজনৈতিক দলগুলো কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকায় ঘোষণা দিয়েছে অফিস শেষ করে সুস্থভাবে বাসায় ফিরতে পারলেই হয়। এই ধরনের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে নিরীহ মানুষ বিপাকে পড়বে বলে তিনি মনে করেন।

শেখ আব্দুল কামাল টঙ্গীর একটি বেসরকারি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। ছুটি নিয়ে মিরপুরে বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন শনিবার সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকে কি না এই আশঙ্কায় ছুটির মধ্যেই শুক্রবার তিনি টঙ্গী ফিরে যাচ্ছেন। পরিবারের নিরাপত্তায় এমনটি করছেন বলে তিনি জানান।  

কামাল বাংলানিউজকে বলেন, আজই সড়কে যান চলাচল কম মনে হচ্ছে। আগামীকাল রাজপথ উত্তপ্ত থাকবে তাই রিস্ক না নিয়ে পরিবার নিয়ে ফিরে যাচ্ছি।

চাকরিজীবীদের পাশাপাশি ২৮ অক্টোবরের রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আতঙ্ক দেখা গেছে। অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন শনিবার তারা আড়ত থেকে সবজি আনবেন না, পরিস্থিতি বুঝে পরদিন (২৯ অক্টোবর) দোকানে মালামাল তুলবেন।

এ ব্যাপারে মিরপুরের সবজি বিক্রেতা সবুজ বাংলানিউজকে বলেন, আজ পাইকারি বাজার থেকে যে মালামাল এনেছি,যতটুকু অবশিষ্ট থাকে আগামীকাল তাই বিক্রি করবো। রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচির কারণে সড়কে যাতে ঝামেলায় পড়তে  না হয় এজন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

সমাবেশের একদিন বাকি থাকলেও প্রশাসন এখন পর্যন্ত সমাবেশের ব্যাপারে কোনো অনুমতি বা অনুমোদন দেয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী নির্দিষ্টস্থানেই তাদের সমাবেশ-মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।  

এদিকে, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ বাস্তবায়নের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চালাচ্ছে সরকার বিরোধী আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলগুলো। অপরদিকে, অনুমতি ছাড়া মহাসমাবেশ ঠেকানোর প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এই অবস্থায় প্রশাসন-রাজনৈতিক দলগুলো অনড় অবস্থানে আতঙ্কিত নগরবাসী।  

দিনটি নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন তারা। মিছিল, মিটিং, সভা-সমাবেশ প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। তবে রাজনৈতিক দলগুলো তাদে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি মধ্যে দিয়ে নগরজীবনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন এমনটাই প্রত্যাশা নগরবাসীর।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২৩
এসএমএকে/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।