ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

৭ বছরে নোবিপ্রবি

মুহাম্মদ রহমত উল্যাহ, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪২ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১২
৭ বছরে নোবিপ্রবি

নোয়াখালী: নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ শুক্রবার। গতবছরের ধারাবাহিকতায় এবছরও এ দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।



“বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রকৃতি ও জনপদের মাঝে যে বিপুল ও অমিত সম্ভাবনা লুকায়িত, কেবলমাত্র আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ জনবল সৃষ্টির মাধ্যমেই তার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধন সম্ভব। ” এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ২০০১ সালে নোয়াখালীতে একটি পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০০১ সালের ১৫ জুলাই সরকারি গেজেটে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ‘নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০১’ জারি করা হয়।

পরবর্তীতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় দক্ষিণ বাংলার অবহেলিত এই উপকূলীয় অঞ্চলে ১০০ একর জমিতে গড়ে উঠে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন কার্যকর হয় ২০০৩ সালের ২৫ আগস্ট। পরবর্তীতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০০৬ সালের ২২ জুন একাডেমিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে ছয়টি বছর। আর এই ছয় বছরে শিক্ষা কার্যক্রমের একটি দিনও অপচয় করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ড. আবুল খায়ের এবং পরবর্তীতে ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাল ধরে এগিয়ে নেন।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর এই নবীন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা কৃষিবিদ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোনমি বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম সাঈদুল হক চৌধুরী।

কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স, ফার্মেসি, অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং,  মাইক্রোবায়োলজি এ পাঁটি অনুষদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যায়ের যাত্রা।

২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু হয় ইংরেজি ও গণিত বিভাগ। এরপর খোলা হয় ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশন সায়েন্স, অ্যানভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড হ্যাজার্ড স্টাডিজ এবং বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।

সম্প্রতি আরও চারটি বিভাগ খোলার অনুমোদন পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বিভাগগুলো হলো- ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি, ইকনোমিক্স অ্যান্ড পোভার্টি স্টাডিজ, বায়োটেকনোজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও কোস্টাল অ্যাগ্রিকালচার।

প্রথম চারটি বিভাগে মাস্টার্স কোর্সও চালু হয়েছে। স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বর্তমানে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। শিক্ষক রয়েছেন ৭২ জন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন প্রায় ১৭৫ জন। বর্তমান উপাচার্য যোগদানের পর প্রতিটি বিভাগে আসন সংখ্যা ১০টি করে বৃদ্ধি করা হয়েছে।

একাডেমিক কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করে তোলার জন্য অতি প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ বারোটি ল্যাবরেটরি এবং একটি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি গড়ে উঠেছে। উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রেণি কক্ষগুলোতে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর সংযোজন এবং ল্যাবরেটরিগুলোতে যন্ত্রপাতি ও লাইব্রেরিতে বই ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া শিক্ষার্থীদেরকে পড়াশোনা ও ভালো ফলাফলের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের অনার্স ফাইনাল পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ফলধারী শিক্ষার্থীকে অসামান্য কৃতিত্বের জন্য ভাইস-চ্যান্সেলর স্বর্ণ পদক দেওয়া হয়।  

শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার-ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ৩০টি কম্পিউটারের সমন্বয়ে একটি সর্বাধুনিক সাইবার সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে।

প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের চাহিদা পূরণে গুণগত মানসম্পন্ন ও তথ্য প্রযুক্তি সমৃদ্ধ শিক্ষায় দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে সেশনজট, ছাত্র রাজনীতি (অপরাজনীতি), সন্ত্রাস, ধ‍ূমপান, ইভটিজিং মুক্ত এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস ঘোষণা করা হয়েছে।

অধ্যাপক এ কে এম সাঈদুল হক চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে তার বাণীতে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন, সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষাসহ সব বিষয়ে যোগাযোগ ও রেলমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও এমপি একরামুল করিম চৌধুরী এমপিসহ রাজনৈতিক, সামাজিক নেতাদের আন্তরিক সহযোগিতা রয়েছে। ”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে এক দিনের জন্যও ক্লাস বন্ধ থাকেনি এবং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা যায়নি। এখানে টেন্ডারবাজিসহ অন্যান্য নিষিদ্ধ কার্যক্রম নেই বললেই চলে। ”

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১২
সম্পাদনা: ওবায়দুল্লাহ সনি, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।