ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মহানবমীতে মুখরিত সিলেটের মণ্ডপ 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২৩
মহানবমীতে মুখরিত সিলেটের মণ্ডপ  সিলেটের একটি মণ্ডপে চলছে পূজা। ছবি: মাহমুদ হোসেন

সিলেট: ঢাক-ঢোল, উলুধ্বনি, শঙ্খ, কাঁসর-ঘণ্টা আর ভক্তিমন্ত্রে মুখরিত দুর্গাপূজার মণ্ডপগুলো। স্থায়ী-অস্থায়ী মণ্ডপে দেবী দুর্গার আরাধনা আর অঞ্জলিতে ব্যস্ত পূজারী ও ভক্তরা।

সারা দেশের মতো সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সিলেটেও উদযাপন করছেন তাদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) মহানবমীতে সকাল থেকে বিভিন্ন পূজামণ্ডপে দেবীর নবমী বিহিত পূজা প্রশস্তা, পুষ্পাঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। অন্য দিনের তুলনায় এদিন ভক্ত ও দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি ছিল মণ্ডপগুলোতে।

পুরোহিতদের মতে, মহানবমীতে ভক্তদের দেওয়া ষোড়শ উপাচারের সঙ্গে ১০৮টি নীলপদ্মে দেবীদুর্গার পূজা-অর্চনা করা হয়। এছাড়া নীলকণ্ঠ, নীল অপরাজিতা ফুল ও যজ্ঞের মাধ্যমে মহানবমীর বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

পুরোহিতরা জানান, মহানবমীতে যজ্ঞের মাধ্যমে দেবীদুর্গার কাছে আহুতি দেওয়া হয়। ১০৮টি বেল পাতা, আম কাঠ, ঘি দিয়ে এই যজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়।

সনাতন ধর্মমতে, নবমীর পুণ্য তিথিতে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে বিশ্বে শুভ শক্তির প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন দেবী দুর্গা। তার হাতে বধ হয়েছিল মহিষাসুর, আর রাম বধ করেছিলেন রাবণকে।  

পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজার অন্তিম দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয় মহানবমীকে। তাই নবমীর রাতে মণ্ডপে মণ্ডপে বাজতে থাকে বিদায়ের সুর।

সিলেটের গোপালটিলা সার্বজনীন পূজা মন্ডপের পুরোহিত কাব্যতীর্থ রজত কান্তি চক্রবর্তী বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসবে রোববার (২২ অক্টোবর) দেবীর মহাঅষ্টমী বিহিত ও কুমারী পূজার সঙ্গে সন্ধিপূজা এবং আজ সোমবার (২৩ অক্টোবর) নবমী বিহিত অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) মহাদশমীতে বিহিত পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন শেষে সন্ধ্যা আরত্রিকের পর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই ধর্মীয় উৎসব।

এই পুরোহিত বলেন, মর্ত্যলোকে ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে এসেছেন দেবী। দশমীতে জল বিসর্জনে শিবের সঙ্গে স্বামীর গৃহে ফিরবেন ঘোটকেই সওয়ার হয়ে। শাস্ত্রমতে দু’টোই খারাপের ইঙ্গিত বহন করে।

পুরোহিত কাব্যতীর্থ রজত কান্তি চক্রবর্তী বলেন, দেবী অনেক রূপে আসেন। বৈষ্ণবী রূপে আসা শান্তির প্রতীক। আসুরিক শক্তিতে আসেন অসুর বদ করতে। ঘোটকে চড়ে আসা-যাওয়া মানে ছত্রভঙ্গ তথা হানাহানি-মারামারির ইঙ্গিত বহন করে। আর পালকীতে প্রস্থান মানে রোগ জীবাণু বেশি হওয়া। তাই শাস্ত্রে খারাপ ইঙ্গিত হলে বিসর্জনের পর প্রত্যেক মণ্ডপে শান্তির জন্য আরাধনা করা হবে।

পূজা উপলক্ষে এবার প্রতিটি মণ্ডপ সেজে উঠেছে নতুন সাজে। বর্ণিল আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে মণ্ডপের প্রতিটি সড়ক ও চারপাশ। মহানবমী শেষে মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।

এবার সিলেট জেলার ৬১৭টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তার মধ্যে সার্বজনীন ৫৬৯টি, পারিবারিক ৪৮টিতে হয়েছে পূজোর আয়োজন।

মহানগরীতে ১৫১টি পূজার মধ্যে সার্বজনীন ১৩৪টি ও পারিবারিক ১৭টি। জেলায় ৪৬৬টি পূজার মধ্যে সার্বজনীন ৪৩৫টি ও পারিবারিক ৩১টি।

সিলেট মহানগর পুলিশ সূত্র জানায়, শারদীয় দুর্গা পূজা উদযাপনকে কেন্দ্র করে সিলেট সিটি করপোরেশন থেকে ২৪ ঘণ্টার সেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে। তেমনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রতিটি মণ্ডপসহ নগরের রাস্তাঘাটে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও যানজট নিরসনে মধ্যরাত পর্যন্ত ট্রাফিকিং ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২৩
এনইউ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।