ঢাকা, শনিবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা, সেই মাদরাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৩
ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা, সেই মাদরাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু

বগুড়া: বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় ধর্ষণের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টায় আহত মাদরাসা শিক্ষার্থী মারুফা (১৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকালে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিহত মারুফার চাচা কামরুজ্জামান।

মারুফা বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের নান্দুড়া গ্রামের মাসুদুর রহমানের মেয়ে এবং নান্দুড়া ফাজিল মাদরাসার আলিম প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

মারুফার চাচা কামরুজ্জামান জানান, দীর্ঘ এক মাস ১০দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারুফার মৃত্যু হয়। এর আগে দুপুরের দিকে ভাতিজি মারুফার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। পরে দুপুর ১টার দিকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে সে। এরপর রাত ৮টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় গত ৯ সেপ্টেম্বর শিবগঞ্জ থানায় তার ভাই ও মারুফার বাবা মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম (২৮) নামে এক জনকে গ্রেপ্তার করে। মামলার বাকি দুই আসামি রঞ্জু (৪০) ও নাঈম (২৩) পলাতক রয়েছেন।  

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ সেপ্টেম্বর মারুফার বাবা-মা তার নানা বাড়িতে বেড়াতে যায়। এ কারণে বাড়িতে সে একা ছিলেন। দুপুরে জুমার নামাজের সময় বৃষ্টি শুরু হওয়ায় অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম তাদের বাড়িতে যায়। এ সময় ওই ছাত্রী বাড়িতে একা রয়েছে জানতে পেরে তাকে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে সে অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুড়িয়ে হত্যার উদ্দেশে বাড়ির বারান্দায় থাকা চটের বস্তাসহ বেশ কিছু কাপড় ওই ছাত্রীর শরীরের ওপর রেখে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়। আগুনের তাপে জ্ঞান ফিরলে সে চিৎকার শুরু করে।  

পরে স্থানীয় লোকজন বাড়িতে এসে তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। ঘটনা জানার পর এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত সাইফুলকে গণপিটুনি দিয়ে আটক করে। পরে পুলিশ এসে থানা হেফাজতে নেয়।

মারুফার বাবা মাসুদুর রহমান বলেন, ঘটনার দিন মেয়ের এমন দুঃসংবাদ পেয়ে তারা সরাসরি হাসপাতালে ছুটে আসি। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, আগুনে তার হাত-পাসহ শরীরের অধিকাংশ জায়গা পুড়ে গেছে। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান সেখানকার চিকিৎসকরা।

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ জানান, ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিক্ষার্থী মারা গেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ বগুড়ায় আনা হবে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার রয়েছে। বাকি দুইজন পলাতক।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৩
কেইউএ/এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।