ঢাকা, শনিবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মা ইলিশ ধরতে গিয়ে আটক হলে জেলে কার্ড বাতিল: চাঁদপুরের ডিসি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৩
মা ইলিশ ধরতে গিয়ে আটক হলে জেলে কার্ড বাতিল: চাঁদপুরের ডিসি

চাঁদপুর: চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান বলেছেন, ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সরকার ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এসময়ে যেসব জেলে অবসরে থাকবেন, তাদের জন্য সরকার খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চালের ব্যবস্থা করেছে।

আইন অমান্য করে কোনো জেলে নদীতে নেমে মা ইলিশ ধরতে গিয়ে আটক হলে তাকে আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি জেলে কার্ড বাতিল করা হবে। এটি আমরা স্থানীয়ভাবে চিন্তা করছি।

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মোলহেড বঙ্গবন্ধু পর্যটন কেন্দ্রে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়নে সচেতনতামূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আপনারা (জেলেরা) যদি সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলেন, তাহলে আমাদের কঠোর হতে হবে না এবং আইন প্রয়োগ করতে হবে না। আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে- এ বছর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশসহ সবাই সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা নেব। কারণ গত বছর জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে বহু জেলে আটক হয়েছেন এবং জেল-জরিমানা হয়েছে। আপনারা যদি আইন না মানেন, তাহলে আমরা সর্বোচ্চ সাজা দিতে বাধ্য হবো।

ডিসি বলেন, এ বছর কোস্টগার্ডকে আমরা বলেছি, মতলব উত্তর উপজেলায় একটি অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করতে। শিগগিরই সেখানে ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। হাইমচর মৎস্য বিভাগ নতুন স্পিডবোট পেয়েছে। এখন থেকে অভিযানে জনপ্রতিনিধিরা সম্পৃক্ত হবেন।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা নদীতে অভিযান না চালালেও স্থলভাগে আমাদের পুলিশ কাজ করবে। পরিবহন অবস্থায় যাকে পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশেষ করে বাজার ও আড়তে যাদের পাওয়া যাবে, তারাও আইনের আওতায় আসবেন। কারণ অবৈধ কোনো কিছু বাজারেও বিক্রি করা যাবে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চাঁদপুর অঞ্চলের নৌ পুলিশের সুপার (এসপি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, বিগত তিন বছর কাজ করে আমার কিছুটা হলেও অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রত্যেক অভিযানে জেলেরা নদীতে নামবেন না বললেও পরে দেখা যায়, দলে দলে নেমে মাছ ধরেন। আইন অমান্য করে জেলার বাইরে থেকেও জেলেরা আসেন। তারা আমাদের তাদের শত্রু মনে করেন। মারমুখী হয়ে আমাদের পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ করেন। বিগত অভিযানে আমাদের তিনজন সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। ইলিশ সম্পদ সবার। ইলিশ বড় হলে এ জেলেরাই ধরবেন। তাদের জন্য আমাদের এতো কষ্ট করে অভিযান করতে হয়। আমি আশা করব, আপনারা সবাই মিলে এ অভিযান করতে সহযোগিতা করবেন।

হাইমচর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রশীদের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন-চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফরিদা ইলিয়াছ, সিনিয়র মৎস্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রুমানা ইসলাম, স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর সফিকুল ইসলাম, মৎস্যজীবী নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক দেওয়ান, শাহ আলম মল্লিক ও তছলিম বেপারীসহ অনেকে।

সভাশেষে অতিথিদের অংশগ্রহণে মোলহেড থেকে একটি নৌ র‌্যালি তিন নদীর মোহনা ও আশপাশের এলাকায় টহল শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।