ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পাবনায় মাসকলাই চাষীদের মাথায় হাত : বীজ ডিলাররা অভিযুক্ত

আবুল কালাম আজাদ, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১০
পাবনায় মাসকলাই চাষীদের মাথায় হাত : বীজ ডিলাররা অভিযুক্ত

পাবনা : পাবনায় ভারতীয় নিম্নমানের বীজ দিয়ে মাসকলাই আবাদ করায় হাজার হাজার বিঘা কলাই ক্ষেত এখন গো-খাদ্যে পরিণত হয়েছে। হাত পড়েছে কৃষকের মাথায়।



কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, বিএডিসির কিছু অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে অনুমোদিত ডিলাররা যোগসাজোশ করে ভারত থেকে আনা নিম্নমানের বীজ সরবরাহ করে কৃষকদের এই ক্ষতি করেছেন। ’

ওইসব অসাধু ডিলারদের ডিলারশিপ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তারা।

সূত্র জানায়, জেলার পাবনা সদর, আটঘরিয়া, চাটমোহর, ঈশ্বরদী, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, সাঁথিয়া, বেড়া ও সুজানগর উপজেলায় এবারে ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে মাসকালাইয়ের আবাদ করা হয়। স্বল্প সময়ে সার ও কীটনাশক ছাড়া লাভবান হওয়া যায় বলে গতবারের চেয়ে এবার ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ বেশি হয়েছে। কিন্তু নিম্নমানের বীজের কারণে গাছে কোনো ফুল আসছে না।

জেলার মাসকালাই চাষীরা অভিযোগ করে বলেন, ডিলাররা ভালো ও উন্নতমানের বীজের নাম করে ‘বাগড়া’ নামে নিম্নমানের ভারতীয় বীজ বিএডিসির প্যাকেটে সরবরাহ করে। বিএডিসির কিছু অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজোশে তারা কৃষকদের এই ক্ষতি করেছে। ’

জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি তিগ্রস্ত হয়েছে পাবনা সদর উপজেলার ভজেন্দ্রপুর, মনিদহ, রামচন্দ্রপুর, মালিগাছা, মনোহরপুর, ঘরনাগড়া, রূপপুর, বাঙ্গাবাড়িয়া, রানীগ্রাম, গয়েশপুর, হামিদপুর, জোয়ারদহ, উগ্রগড় এবং আটঘরিয়া উপজেলার শ্রীকান্তপুর, রামনগর, সড়াবাড়িয়া, মাজপাড়া, বেরুয়ান হিদাশকোল, একদন্তসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের চাষীরা।

এসব এলাকায়  মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠে মাসকলাইয়ের বড় বড় গাছ হয়েছে। কিন্তু হলুদ হয়ে যাচ্ছে। ফুল ধরার উপযুক্ত সময় হলেও গাছে ফুল ধরছে না। চাষীরা কোনো উপায় না দেখে মাসকলাইয়ের গাছ তুলে গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
এদিকে বিক্ষুব্ধ মাসকলাই চাষীরা বুধবার সদর থানার টেবুনিয়া বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে সমাবেশের জন্য মাইকিং করলেও অসাধু ডিলার ও প্রভাবশালীদের কারণে সমাবেশ করতে পারেনি। অন্য একটি মাইক দিয়ে সমাবেশ বন্ধের ঘোষণা করা হয়।

স্থানীয় চাষীরা বলেন, ভারতীয় নিম্নমানের সরবরাহ করা বীজ ‘বাগড়া’ এক প্যাকেট অর্থাৎ এক কেজির দাম ৮০ থেকে ১ শ’ ১০ টাকা। চাষীরা কম দাম ও বীজের মান ভাল শুনে এই বীজ বপন করেই আজ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

সদর উপজেলার জোয়ারদহ গ্রামের চাষী বাবুল আকতার বলেন, আমি এবার ৪/৫ বিঘা জমিতে মাসকালাই আবাদ করেছিলাম। কিন্তু ফল না ধরায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। ’

একই এলাকার আয়েজ প্রামানিক বলেন, ‘আমি ২ বিঘা জমিতে মাসকালাই আবাদ করে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। লাভ দূরে থাক আবাদের খরচই উঠবে না। ’

এ ব্যাপারে টেবুনিয়া ডাল ও তৈল বীজ খামারের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শওকত আলী বলেন, ‘বিএডিসি থেকে বীজ নিয়ে চাষীরা প্রতারিত হয়েছেন এমন অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। ’

তিনি আরও বলেন, ‘খামারের জমিতেও একই বীজ দিয়ে আবাদ করে ভাল ফলন হয়েছে। তবে লিখিত অভিযোগ এলে বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

বাংলাদেশ সময় : ২৩২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।