ঢাকা, সোমবার, ১ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিনা কারণে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তালা দেওয়ার অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩
বিনা কারণে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তালা দেওয়ার অভিযোগ

ঢাকা: কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই রাজধানীর বনানীতে প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট লিমিটেড নামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে তালা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার আবুল খায়ের।

প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার আবুল খায়ের বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ব্যবহার করে প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট লিমিটেড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান ও তালা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তা দখলের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। একটি কুচক্রী মহল বেআইনিভাবে বন্ধ করে তালা ঝুঁলিয়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করতে আইন আদালতকে তোয়াক্কা করা হয়নি, শুধু ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে জোরপূর্বক তা করা হয়েছে। আমাদের এ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ও ভবনটি দখল করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।

গত ২০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এনে হাসপাতালটি তালাবদ্ধ করে দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেখানে সরকারি অফিসে টাকা দিয়েও ফাইল নড়ানো যায় না, সেখানে সরকারি ফাইল কীভাবে এত দ্রুত গতিতে নড়ে? এত তাড়াহুড়ো করার উদ্দেশ্য, নিশ্চয়ই এখানে ওপর মহলের হাত আছে।

প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক অভিযোগ করে আরও বলেন, অভিযানের দিন আসা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লোকজন আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ দেখাতে পারেননি। শুধু বলেছেন, আপনারা দ্রুত মালামাল সরিয়ে নেন। এজন্য তারা কোনো কাগজপত্রও দেখাতে পারেনি। তারা আমাদের লাইসেন্স স্থগিত করতে পারে, কার্যক্রম বন্ধ করতে পারে কিন্তু আমরা কবে মালামাল সরিয়ে নেব তা তো বলতে পারে না। তারা যেহেতু মালামাল সরিয়ে নিতে বলেছে, অবশ্যই তাদের অন্য অভিপ্রায় আছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি প্রতিষ্ঠানটি ৬ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে। ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান তা কিনেছে। অথচ এই সম্পত্তির দাম ৪৫ কোটি টাকার বেশি হবে। ফলে সরকার কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আরেকটি কথা, নামমাত্র মূল্যে এই সম্পত্তি কিনে নিলেও তারা আমাদের বাড়ি ছাড়ার কোনো নোটিশ দেয়নি। বরং তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

খন্দকার আবুল খায়ের জানান, প্রতিষ্ঠানটিতে এখন প্রায় ২০০ কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত। এছাড়াও ৫০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়মিত চেম্বার করে উন্নত চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু চলতি বছরের গত ১৮ মে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি পরিদর্শন দল সেখানে যান। এরপর ১৮ মে তারিখ দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে চিঠি পাঠানো হয়।

একই সঙ্গে কোনো প্রকার কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ও লাইসেন্স স্থগিত করার আদেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আপিল করলে তা অগ্রাহ্য করে ৭ জুন তাদের চিঠি দেয়। পরে নিয়মানুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আপিল করলেও তারা রহস্যজনকভাবে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে।

পরে তারা এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেন। রিটটি এখন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। হাইকোর্ট খুললে সেটির শুনানি হবে বলেও জানান খন্দকার আবুল খায়ের।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩
পিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।