ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

স্কুলে মেয়ের সঙ্গে সহপাঠীর ঝগড়া, রেগে শিক্ষার্থীর পা ভাঙলেন বাবা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৩
স্কুলে মেয়ের সঙ্গে সহপাঠীর ঝগড়া, রেগে শিক্ষার্থীর পা ভাঙলেন বাবা আল-আমিন

গাইবান্ধা: স্কুলে খেলার সময় মেয়ে নুসরাতের সঙ্গে সহপাঠীর ঝগড়া-হাতাহাতির জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আল-আমিনের (৯) পা ভেঙে দিয়েছেন বাবা নুরুন্নবী মিয়া।  

শুনতে অবাক হলেও এমনটাই ঘটেছে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের রায়তী নড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

 

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।  

আল-আমিন রায়তী নড়াইল গ্রামের গোলাম কাদেরের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ভ্যানচালক।  

অমানবিক নির্যাতনের শিকার আল-আমিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্লাস্টারে ভাঙা পা নিয়ে বিছানায় শুয়ে-বসে সময় কাটছে শিশু আল-আমিনের। শিশুটিকে ছুঁতে পারছে না দুরন্তপনা। হাসির বদলে ব্যথায় কাতর আল-আমিনের সঙ্গী এখন শুধুই কান্না। ঘুরে ফিরে মায়ের কাছে তার একটাই প্রশ্ন? কবে খোলা হবে পায়ের প্লাস্টার, কবে আগের মতো স্কুলে গিয়ে সবার সঙ্গে খেলতে-দৌড়াতে পারবে সে।

আল-আমিনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) যথারীতি স্কুলে যায় সআল-আমিন। ক্লাস শেষে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সহপাঠী নুসরাতের সঙ্গে খেলা করছিল সে। সে সময় দু’জনের মধ্যে ঝগড়া-হাতাহাতি হয়। সহপাঠী নুসরাতের বাড়ি বিদ্যালয় সংলগ্ন হওয়ায়, সে দৌড়ে গিয়ে তার বাবা নুরুন্নবীকে জানায়।  

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নুরুন্নবী স্কুলে এসে আল-আমিনকে টেনে-হিঁচড়ে মারধর করতে থাকেন। এক পর্যায়ে শিশুটির গলা ধরে শূন্যে তুলে বাইরের বারান্দায় পাকা মেঝেতে আছাড় দেয়। এতে আল-আমিনের ডান পায়ের হাঁটুর হাড় ভেঙে যায়। শিশুটির আত্মচিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসার আগেই অবস্থা বেগতিক দেখে অভিযুক্ত নুরুন্নবী দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে।  

বিষয়টা নিশ্চিত করে বিদ্যালয়েরর প্রধান শিক্ষক মমিনুল ইসলাম সরকার শামীম জানান, ঘটনার পর পরই শিশুটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে সভাপতি ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

বৈঠকে অভিযুক্ত নুরুন্নবী আহত শিশুটির চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের পাশাপাশি পরিবারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। পাশাপাশি একজন শিক্ষক প্রতিদিন আহত শিশুটির বাড়িতে গিয়ে এক ঘণ্টা করে পাঠদানের বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে। তবে আহত শিশুটির বাবা এসব প্রস্তাবে সন্তুষ্ট নন বলেও জানান তিনি।

এদিকে, দুই সহপাঠীর মারামারির জেরে শিশুর পা ভাঙার বিষয়ে কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হয়নি অভিযুক্ত নুরুন্নবী।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।