ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সখ্য গড়ে অজ্ঞান করে লঞ্চযাত্রীর সব লুটে নিতেন শাওন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২৩
সখ্য গড়ে অজ্ঞান করে লঞ্চযাত্রীর সব লুটে নিতেন শাওন  গ্রেপ্তার মলমপার্টির সদস্য শাওন

চাঁদপুর: যাত্রী সেজে লঞ্চের অন্যযাত্রীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতেন রোজেন শিকদার শাওন। এরপর কৌশলে যাত্রীকে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে তার সর্বস্ব লুটে পালাতের।

এটাই ছিল শাওনের পেশা। সহজ সরল অনেক লঞ্চযাত্রী শাওনের খপ্পরে পড়ে টাকা, স্বর্ণ ও মালামাল হারিয়েছেন।

অবশেষে মলমপার্টির এই সক্রিয় সদস্য রোজেন শিকদার শাওন পুলিশের জালে আটকা পড়েছে।

শনিবার (২৬ আগস্ট) রাতে এক ভুক্তভোগী নারীর সহযোগিতায় চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে শাওনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় নৌথানা পুলিশ।

মলমপার্টির এই ভয়ংকর সদস্য শাওনের বাড়ি বরিশালে। গৌরনদী থানার হোসনাবাদ এলাকার মৃত জয়নাল শিকদারের ছেলে তিনি। ।  

জানা যায়, গত মাসে রাবেয়া বেগম নামে এক নারী ও মো. আমিন খান নামে যুবককে চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে অজ্ঞান করে সঙ্গে থাকা স্বর্ণ ও নগদ টাকা নিয়ে যায় শাওন। এরপর চাঁদপুর নৌ থানায় মামলা দায়ের করেন ঘটনার শিকার নারী রাবেয়া বেগম। ওই ঘটনায় শাওনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে চেতনানাশক ওষুধ (ট্যাবলেট) জব্দ করা হয়।

রোববার (২৭ আগস্ট) বিকেলে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান।

তিনি বলেন, আসামি রোজেন শিকদার শাওন রাত থেকে বিকেল পর্যন্ত নৌ থানা হেফাজতে ছিল। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে জেলহাজতে পাঠানোর জন্য চাঁদপুর সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই রাত সাড়ে ১২টার দিকে চাঁদপুর থেকে এমভি সুন্দরবন-১২ লঞ্চে বরিশাল যাচ্ছিলেন সদর উপজেলার তরপুরচন্ডী ইউনিয়নের তেঁতুলতলা মিজি বাড়ির মো. শফিক মিজির স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৫০)। তার সঙ্গে ছিলেন ভাতিজা মো. আমিন খান (২০)। লঞ্চে পরিচয় হয় শাওনের সঙ্গে। রাবেয়া বেগম বুঝতেই পারেননি শাওন মলমপার্টির সদস্য। খুব কম সময়ে সহযোগিতার কথা বলে রাবেয়া এবং আমিনের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেন শাওন। এরপর তাদেরকে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করেন।

রাবেয়া বেগম জানান, অজ্ঞান হওয়ার পর তার পরনে থাকা ৫ আনা ওজনের কানের দুল, গোল্ড প্লেটের তৈরি চেইন, ভাইয়ের স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সঙ্গে থাকা ৬৮ হাজার টাকা নিয়ে যায় শাওন। লঞ্চের লোকজন সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করান।  

ভুক্তভোগী রাবেয়া বলেন, হাসপাতালেও প্রতারক শাওন উপস্থিত হয়। আমাদের চিকিৎসার কথা বলে সেখান থেকে বাড়ির ঠিকানায় আমার ভাই উসমান খান থেকে ৩ হাজার টাকা, ভাতিজা কাশিম খান থেকে ২ হাজার টাকা ও আমার ছেলে মিলন হোসেনের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা বিকাশে নিয়ে যায় শাওন। এই ঘটনার পর বেশ কয়েকদিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার পর প্রতারক ও মলমপার্টির সদস্য শাওনকে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে খুঁজতে থাকি। অবশেষে ২৬ আগস্ট দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে দেখতে পাই। নৌ পুলিশকে খবর দিলে তারা এই প্রতারককে আটক করে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২৩
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।