ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৪৩২, ২২ আগস্ট ২০২৫, ২৭ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

ফরিদপুরে রোগীর পেটে গজ-মলমূত্র রেখে সেলাই!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:০২, আগস্ট ২৭, ২০২৩
ফরিদপুরে রোগীর পেটে গজ-মলমূত্র রেখে সেলাই!

ফরিদপুর: ফরিদপুরের ভাঙ্গায় এ্যামি আক্তার (১৮) নামে এক রোগীরে অপারেশনের পর পেটে গজ ও মলমূত্র রেখে সেলাই করে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে গ্রীন (প্রা.) হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে।  

রোববার (২৭ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রোগী এ্যামি আক্তারের স্বামী তুষার মিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

 

তুষার মিয়া ভাঙ্গা উপজেলার হাসামদিয়া মধ্যপাড়া গ্রামের মাহবুব মিয়ার ছেলে।  

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ মার্চ প্রসূতি এ্যামি আক্তারকে সিজারের জন্য ভাঙ্গা গ্রীন (প্রা.) হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। সিজারিয়ানের অপারেশনের পর ২৭ মার্চ হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিছুদিন পর এ্যামি অসুস্থ হয়ে পড়লে পুনরায় ওই হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কোনো রোগ নির্ণয় করতে পারেননি। পরে তাদের বলে দেওয়া হয় রোগীর থাইরয়েডের সমস্যা আছে। তবে রোগীর অসুস্থতা বাড়তে থাকে এরপর গত ২২ আগস্ট তাকে ঢাকায় নিয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে অপারেশনের পর রোগীর পেট থেকে পুরোনো ও পচা গজ-মলমূত্র পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে এ্যামির স্বামী তুষার মিয়া বলেন, সিজারের পর আমার স্ত্রীর পেটে গজ-মলমূত্র রেখে সেলাই করে দেন চিকিৎসক। পরে আমাদের ছাড়পত্র দিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর পরে আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে ভাঙ্গায় ওই হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারা কোনো রোগ নির্ণয় করতে ও চিকিৎসা সেবা দেননি। পরে ঢাকায় ল্যাবএইডে নিয়ে মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে নতুন করে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর তার পেটের মধ্যে থেকে গজ-মলমূত্রসহ নানা কিছু পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, আমার স্ত্রী এখনও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। আমি এর যথাযথ বিচার চাই।

এ ব্যাপারে ভাঙ্গা গ্রীন (প্রা.) হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, পাঁচ মাস আগের ঘটনা। এতোদিন পরে এ নিয়ে অভিযোগ কেন? তাছাড়া ওই রোগী ও তার লোকজন হাসপাতালে এসেছিলেন। এক কথায় তাদের অভিযোগ সঠিক নয়। আর পেটে গজ-ব্যান্ডেজ থাকলে এতদিনে রোগী সুস্থ থাকার কথা নয়। সিজারের সময় আমাদের হাসপাতাল থেকে কোনো সমস্যা হয়নি।

এ বিষয়ে ভাঙ্গা গ্রীন (প্রা.) হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজারিয়ান অপারেশন করা ডাক্তার তামান্না আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার পরে আমরা এসিল্যান্ডের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটির অন্য দুই সদস্য রাখা হয়েছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও ভাঙ্গা থানার ওসি।  

ইউএনও বলেন, সাত কর্মদিবসের মধ্যে এ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।