সালেহপুর ব্রিজ: সাভারে যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তুরাগ নদীতে ডুবে গেছে। এ ঘটনায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত এক তরুণী নিহত হয়েছেন।
নিহত তরুণী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ তম ব্যাচ ও মাইক্রোবায়োলজির তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী মনোয়ারা হোসেন তারা (২২)।
সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজারের অদূরে সালেহপুর সেতুর কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৫২ সিটের এ বাসটিতে কমপক্ষে ৪৫/৫০ জন যাত্রী ছিলো বলে জানিয়েছেন ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া একাধিক যাত্রী। বাসটি নদীতে ডুবে যাওয়ার পরপরই এমন আট জন যাত্রী বাস থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হন।
বিকেল পর্যন্ত বাসটি অবস্থান শণাক্ত না হওয়ায় বাসের ভেতরে আটকে পড়া যাত্রীদের প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন উদ্ধারকারীরা।
দীর্ঘণেও ফায়ার ব্রিগেড বাসটির অবস্থান নির্নয়ে ব্যর্থ হওয়ায় ঘটনার সাড়ে তিনঘন্টা পর উদ্ধার অভিযানে নামানো হয় সেনা ও নৌ বাহিনীর সদস্যদের।
নৌবাহিনীর একজন ডুবুরী জানান, প্রচন্ড স্রোতের কারণে তলদেশ পর্যন্তই পৌঁছানো যাচ্ছেনা।
ফায়ার ব্রিগেডিয়ার মহাপরিচালক আবু নাইম মো:শহিদুল্লাহ জানান, সার্চ ক্যামেরা নামানো হয়েছে আশা করি শিগগির বাসটির খোঁজ পাওয়া যাবে। উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট কমান্ডার শহিদুল্লাহ জানান, সম্মিলিতভাবেই উদ্ধার অভিযান চলছে।
বিকেলে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেন, স্বরাষ্ট্র সচিব আব্দুস সোবাহান শিকদার, পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ, র্যাবের ডিজি মোখলেসুর রহমান, ডিএমপি কমিশনার একেএম শহীদুল হক, স্থানীয় সাংসদ তৌহিদ জং মুরাদ, জেলা প্রশাসক মুহিবুল হকসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উদ্ধার তৎপরতা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, দ্রুত উদ্ধারকাজ পরিচালনায় উদ্ধারকারীদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে ঘটনাস্থলে ভিড় করেছেন অসংখ্য মানুষ।
উদ্ধার অভিযান বিলম্বিত ও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন নিখোঁজযাত্রীদের স্বজনসহ এলাকাবাসী। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে লাঠিচার্জ করে পুলিশ তাদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেয়।
পুলিশ জানায়, রাজধানীর গুলশানের বাড্ডা থেকে ছেড়ে আসা বৈশাখী পরিবহনের যাত্রীবোঝাই বাসটি আমিনবাজার অতিক্রমের পর চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এতে বাসটি সড়ক থেকে প্রায় ৪০ ফুট গভীর পানিতে নিমজ্জিত হয়। প্রচন্ড স্রোত থাকায় ঘটনাস্থল থেকে সরে যাওয়ায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত উদ্ধারকারীরা বাসটির অবস্থান সনাক্ত করতে পারেননি।
দুর্ঘটনার পর সাতঁরে তীরে উঠতে সক্ষম হন এমন একজন যাত্রী পেশায় টাইলস মিস্ত্রি তপন (২৫) জানান, সাভার যাবার জন্যে তিনি শ্যামলী থেকে বাসটিতে উঠেছিলেন। আমিনবাজার অতিক্রমের পর সাহেলপুর সেতুর ওপর ওঠার আগেই বাসটি হটাৎ করে বামদিকে বাক নিয়ে পানিতে নিমজ্জিত হয়।
এদিকে দুর্ঘটনার পর গুলশানের বাড্ডা থেকে সাভারের রেডিও কলোনী পর্যন্ত বৈশাখী বাসের সকল কাউন্টারে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন কর্মচারীরা।
বাংলাদেশ সময় ১৭১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১০