ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গোলাম আযম ও সাকাকে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত আগামী সপ্তাহেই

জাকিয়া আহমেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১০
গোলাম আযম ও সাকাকে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত আগামী সপ্তাহেই

ঢাকা: যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর গোলাম আযম ও  বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে (সাকা চৌধুরী) গ্রেপ্তারের জন্য আগামী সপ্তাহেই আবেদন জানানো হবে।   আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে এই আবেদন জানাবেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটররা।



ট্রাইব্যুনালের কয়েকজন প্রসিকিউটর ও তদন্ত কর্মকর্তা বাংলানিউজকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, এই দুই জনের বিষয়ে অনেক দিন ধরেই তদন্ত চলছে। সেই তদন্ত কাজে অনেকটাই সফলতা এসেছে। আগামী সপ্তাহেই তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

এদিকে, মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সাকা চৌধুরীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তদন্তে রোববার দ্বিতীয় দফা চট্টগ্রাম যাচ্ছেন তদন্ত সংস্থার কয়েকজন কর্মকর্তা।

এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সাকা ও জামায়াত নেতা দিগন্ত মিডিয়ার চেয়ারম্যান মীর কাশিম আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে চট্টগ্রাম গিয়েছিল তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউটররা।

যুদ্ধাপরাধের তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আগামী সপ্তাহটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে তাদের মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ওই সপ্তাহেই আবেদন করা হতে পারে। ’

সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোন্ সুনির্দিষ্ট ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত চলছে---এ রকম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট ১৯৭৩ অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের সময় যেকোনো মানবতাবিরোধী কাজের জন্য ৩ এর ২ ধারা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ’

এ সংক্রান্ত তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে আমরা দ্বিতীয় দফায় তদন্ত করতে চট্রগ্রাম যাবো। ’

আরও অপরাধের সুনির্দিষ্ট এবং যৌক্তিক প্রমাণের খোঁজেই তারা চট্রগ্রাম যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

প্রথম দফার তদন্তে রাউজানে সাকার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া যায়। এসবের মধ্যে সাকার বিরুদ্ধে শ্রী কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নতুন চন্দ্র সিংহকে হত্যার অভিযোগ করেন তার ছেলে প্রফুল্ল চন্দ্র সিংহ।

এদিকে, একই সপ্তাহে মতিউর রহমান নিজামীর নিজ জেলা পাবনাতেও তদন্ত করতে যাচ্ছেন অপর তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক খান।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী রোববারই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। ’

অপরদিকে, গোলাম আযমের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তাদের হাতে গ্রেপ্তার করার মতো অনেক তথ্য-প্রমাণ এসেছে বলেও জানান রাজ্জাক খান।

সম্প্রতি বিভিন্ন তদন্তে ১২ যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ পায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

তারা হলেন- জামায়াতের সাবেক আমীর গোলাম আযম, বর্তমান আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা , শীর্ষ নেতা আবুল কালাম আজাদ, মীর কাশেম আলী, আবদুস সুবহান, শাহ আব্দুল হান্নান এবং বিএনপিনেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জয়পুরহাটের আবদুল আলীম।

এদের মধ্যে নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদী, কামারুজ্জামান, কাদের মোল্লা আন্তর্জাতিক অপরাধ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। বাকিদের শিগগিরই একই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৃহস্পতিবার একান্ত বৈঠক করেন সাকা চৌধুরী। যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলে বিএনপি কি পদক্ষেপ নেবে সে আলোচনাই ছিলো ওই বৈঠকের প্রধান বিষয়। এ সময় তাকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করা হলে বিএনপি চেয়ারপারসনকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।