ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এমপি প্রিন্সের পিএস মাসুদ দম্পতির নামে দুদকের মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২৩
এমপি প্রিন্সের পিএস মাসুদ দম্পতির নামে দুদকের মামলা শেখ রাসেল আলী মাসুদ ওরফে ভিপি মাসুদ ও স্ত্রী নাছরিন আক্তার

পাবনা: পাবনা-৫ আসনের (সদর) সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্সের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) শেখ রাসেল আলী মাসুদ ওরফে ভিপি মাসুদ ও তার স্ত্রী নাছরিন আক্তারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

পিএস মাসুদ পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং তার স্ত্রী নাছরিন আক্তার পাবনা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) হিসেবে চাকরি করেন।

দুদক পাবনার সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. খাইরুল হক বাদী হয়ে এই পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৮-৯, জুলাই ১৯, ২০২৩। দুদক পাবনা কার্যালয়ে এ মামলা দুটি করা হয়।

মামলার নথিসূত্রে জানা গেছে, পাবনা সদরের রামচন্দ্রপুর মহল্লার আব্দুল করিমের ছেলে শেখ রাসেল আলী মাসুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয় দুদক থেকে। গত ০৩ এপ্রিল সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ দেওয়া হয়। ৪ এপ্রিল তিনি সম্পদ বিবরণী ফরম স্বাক্ষরসহ উত্তোলন করলেও পরবর্তীকালে তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (বিবরণী নেওয়ার ২১ দিনের মধ্যে) দাখিল করেননি।

দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য। তার সার্বিক আয় অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ২৯ লাখ ৭৫ হাজার ৯২৯ টাকার স্থাবর ও ৪১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৪২ টাকার অস্থাবরসহ মোট ২ কোটি ১০ লাখ ৭২ হাজার ৮৭৮ টাকার সম্পদের সন্ধান পায় দুদক। তিনি বিভিন্ন সময় মোট ২৮ লাখ ২৩ হাজার ৮০৬ টাকা পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় করেছেন। অর্থাৎ তার মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৩৮ লাখ ৯৬ হাজার ৬৮৪ টাকা। এই সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ১ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার ৭০৫ টাকা। সব মিলিয়ে তার ১ কোটি ২৯ লাখ ৭৫ হাজার ৯৭৯ টাকা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।

অপরদিকে, পিএস মাসুদের স্ত্রী পাবনা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) নাছরিন আক্তার দুদকের জারিকৃত সম্পদ বিবরণী ফরম উত্তোলন করলেও কমিশনে দাখিল না করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ২৭ লাখ ২ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রেখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তাকেও একই তারিখে ৩ এপ্রিল সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করা হয়। তিনি ৪ এপ্রিল সম্পদ বিবরণী ফরমসহ আদেশটি স্বাক্ষরপূর্বক গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থাৎ বিবরণী নেওয়ার ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণটি কমিশনের দাখিল না করে তিনি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

দুদক সমন্বিত কার্যালয় পাবনার উপ-পরিচালক মো. খাইরুল হক বলেন, তারা উভয়েই জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

খাইরুল হক আরও বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ আছে তাদের স্বামী-স্ত্রীর জ্ঞাত বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে আনিত অপরাধ প্রতীয়মান হয়েছে। এখন মামলার সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শেখ রাসেল আলী মাসুদ বলেন, আমি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। আমাকে বরাবরই একটি মহল বিভিন্নভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। তারই অংশ হিসেবে দুদক আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।  

দুদকের সঙ্গে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র কিসের? -জানতে চাইলে মাসুদ বলেন, আমাকে গত ৬ বছর ধরে দুদকসহ একটি মহল বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে।  

সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি কেন? -এমন প্রশ্নেন জবাবে মাসুদ বলেন, আমরা বিবরণী দিয়েছি, কিন্তু তারা (দুদক) মামলা করবেই -এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি আইগতভাবে মামলা মোকাবিলা করব।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।