ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বদলে গেছে রাঙামাটি-কাপ্তাই সংযোগ সড়ক

মঈন উদ্দীন বাপ্পী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০২৩
বদলে গেছে রাঙামাটি-কাপ্তাই সংযোগ সড়ক

রাঙামাটি: বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে পার্বত্য জনপদের অন্যতম জেলা রাঙামাটির চিত্র পর্যায়ক্রমে বদলে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারে ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাঙামাটি-কাপ্তাই সংযোগ সড়কটি ব্যাপকভাবে আধুনিকীরণ করা হয়েছে।

জেলা সদরের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল এলাকা কাপ্তাই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে এই সড়কটি। বর্তমানে এ সড়কটি ঘিরে ওই এলাকায় পর্যটন শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটছে।

প্রকৃতির রূপের রানি খ্যাত হ্রদ-পাহাড়ের জেলা রাঙামাটিতে এক সময় যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল নৌকা। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সেখানে সেতু ও সড়ক নির্মাণ করে দেওয়ায় যেন পুরো অঞ্চলের চেহারা বদলে গেছে।

রাঙামাটি-কাপ্তাই বিকল্প সংযোগ সড়কটি যেমন দুর্গম এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি এনেছে, তেমনি সেসব এলাকায় নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠার পেছনেও এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। সড়কটির ফলে স্থানীয়রা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। বর্তমানে এ সড়কটি পর্যটকদের কাছে বিনোদনের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। ওই সড়ক জুড়ে ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে উঠা বড় গাঙ, রাইন্যা টুগুন, বেড়ান্নে লেক এবং বার্গী লেক ভ্যালী’র মতো পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকরা আনন্দ খুঁজে নিচ্ছেন।

এছাড়া এ সড়কের পাশে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের গুরু সাধনানন্দ মহাস্থবিরের জন্ম স্থান ঘিরে গড়ে উঠা স্মৃতি মন্দিরটিও দেখতে আসছেন পর্যটকরা। সরকার দেশের সর্বোচ্চ অন্যতম বিদ্যাপীঠ রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছে ওই সড়কে। যে কারণে সড়কটি পর্যটকদের বিনোদনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পরিণত হয়েছে। এ সড়কটির কারণে চট্টগ্রাম কিংবা দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই উপজেলা হয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।

ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক আলাউদ্দিন শাহরিয়ার বাংলানিউজকে বলেন, এতো সুন্দর সড়ক আগে কখনও দেখিনি। আগে রাঙামাটি বেড়াতে আসতাম ঝুলন্ত সেতু দেখতে। আর এখন লোকমুখে শুনে এই সড়কটি দেখার জন্য এসেছি।

কুমিল্লা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক নীগার সুলতানা বলেন, পরিবারের সঙ্গে জীবনে প্রথমবারের মতো রাঙামাটি বেড়াতে এসেছি। স্বজনরা এ এলাকায় বসবাস করেন। সেই সুবাদে বেড়ানোর সুযোগ পেলাম। এই সড়কটি সত্যি অনেক সুন্দর।

জেলার সুধীজনরা বলছেন, এই সড়কটি ঘিরে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সুপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হলে জেলার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে আরও সমৃদ্ধিশালী হওয়া সম্ভব।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর রাঙামাটি সদর উপজেলা অফিস থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ১৩ জুন ভয়াবহ পাহাড় ধসে রাঙামাটি-কাপ্তাই সংযোগ সড়কটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। পরে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লি সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তিনটি নতুন সেতুসহ এই সড়কটি প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই লেইনে উন্নতি করা হয়। চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে সড়কটির কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার কথা আছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর রাঙামাটি সদর উপজেলার নির্বাহী প্রকৌশলী  প্রণব রায় চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, রাঙামাটি-কাপ্তাই সংযোগ সড়কটি বর্তমানে দুই লেইনে উন্নতি করা হয়েছে। ১৮ কিলোমিটার এই সড়কটি পুরো এলাকার চিত্র বদলে দিয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর রাঙামাটি জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী আহামদ শফি বলেন, সড়কটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। সারা দেশের উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাঙামাটিও এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সরকার স্থানীয় সরকার প্রকৌশলের অধীনে রাঙামাটিতে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।