ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

লর্ড এভেবুরির সন্তোষ: লন্ডনে বাংলাদেশ সেমিনার ভণ্ডুলের ঘটনায় আটক ৩ জনের জামিন

লন্ডন করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১০
লর্ড এভেবুরির সন্তোষ: লন্ডনে বাংলাদেশ সেমিনার ভণ্ডুলের ঘটনায় আটক ৩ জনের জামিন

লন্ডন: গত ১৬ জুলাই লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের মিলনায়তনে বাংলাদেশ বিষয়ক সেমিনার ভণ্ডুলের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ব্রিটিশ পুলিশ সম্প্রতি দু’ বিএনপি কর্মীসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করলেও জামিনে ছাড়া পেয়েছেন তারা।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চার নম্বর ব্যক্তিকে আগামী ১১ অক্টোবর পুলিশ স্টেশনে হাজির হওয়ার  নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।



পুলিশের ধারণা, এ চারজনই ওই ঘটনার মূল নায়ক।

লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি মিজ হাজেলের নেতৃত্বে তিন ব্যক্তিকে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পুলিশ স্টেশনে ডেকে নিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে পুলিশ ওই সেমিনারের ধারণ করা ভিডিও ফুটেজসহ উপস্থিত সবার নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সভাপতি সুলতান শরীফ ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি কমরউদ্দিনকে বিভিন্ন সময় পুলিশ স্টেশনে আমন্ত্রণ জানিয়ে ভিডিও ফুটেজ থেকে সন্দেহভাজন অনেকের ছবি দেখানো হয়। সেইসঙ্গে তাদের পরিচিতি জানতে তাদের সহযোগিতা চাওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের পুলিশ স্টেশনে ডেকে এনে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রথমে তারা অভিযোগ অস্বীকার করেন।

পরে অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে তাদের ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়। এরপরও তারা সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এ পর্যায়ে তারা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে চার ঘণ্টা হাজতবাসের পর আইনজীবী এসে তাদের জামিনে মুক্ত করেন।

সেমিনারের আয়োজক ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, সন্দেহভাজন চতুর্থ ব্যক্তিকে আগামী ১১ অক্টোবর পুলিশ স্টেশনে ডেকে পাঠানো হয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তার কাছে অভিযুক্তদের নাম ও পরিচয় জানতে বাংলানিউজ’র প থেকে ই-মেইল করলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

তবে একটি বিশ্বস্ত সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, এদের মধ্যে তিনজন বিএনপি কর্মী ও একজন আওয়ামী লীগ কর্মী।

সেমিনার সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায় আওয়ামী লীগ কর্মীকে ভিডিও ফুটেজে হাতে চেয়ার ধরে থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেন, ‘নিজেকে ও দলীয় নেতাদের রা করতেই আমি চেয়ার হাতে নিয়েছিলাম। ’

পুলিশ তাকেও গ্রেপ্তার করে এবং পরে জামিনে মুক্তি দেয়।

ঘটনার চার নম্বর সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ মামলার অভিযোগপত্র দাখিলে ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের পরামর্শ চাইবে বলে জানা গেছে।

ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস (সিপিএস) সংগৃহীত তথ্য-প্রমাণ দেখে সম্মতি দিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দেওয়া হবে।

এদিকে, এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করায় ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং অল পার্টি পার্লামেন্টারি হিউম্যান রাইট্স গ্র“প (পিএইচআরজি)’র ভাইস চেয়ার লর্ড এভেবুরি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা সুজিক সেনকে করা ই-মেইল বার্তায় লর্ড এভেবুরি বলেন, ‘আপনার সহযোগিতায় পুলিশ ১৬ জুলাইয়ের ঘটনার মামলায় যথেষ্ট অগ্রগতি করতে পেরেছে জেনে আমি খুবই আনন্দিত। আশা করি ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস দোষীদের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে সম হবে। ’

উল্লেখ্য, বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ কর্মীদের সংঘর্ষে সেমিনারটি ভণ্ডুল হয়।

এ ঘটনায় আহত হন লন্ডন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল হক বাদশাসহ কমপে ৭ জন।

আহতদের মধ্যে যুবলীগ নেতা আব্দুল মমিন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কোষাধ্য ঝলক পাল ও যুবলীগ কর্মী রুহুল আমিনও ছিলেন।

সেমিনারে আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী জিম ফিটজ পেট্রিক, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা মশিউর রহমান, বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. মঈন খান, বিরোধীদলীয় নেতা  বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা শওকত মাহমুদ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আব্বাস ফয়েজ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।