ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

তাপস হত্যাচেষ্টা মামলায় রহস্যের জট

সাঈদুর রহমান রিমন / মুরসালিন হক জুনায়েদ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১০
তাপস হত্যাচেষ্টা মামলায় রহস্যের জট

ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাংসদ ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস হত্যাচেষ্টা মামলা রহস্যের জটে ঢাকা পড়েছে। মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ তদন্তের শুরুটা জোরেশোরে করলেও কিছু স্পর্শকাতর কারণে এখন কোনো তৎপরতাই নেই।


 
জানা গেছে, বোমা হামলার ঘটনার সঙ্গে কয়েকজন সেনা সদস্যের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে হঠাৎ করেই এ তদন্তে ভাটা পড়ে।

ঘটনার প্রায় এক বছর পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ‘তদন্তে স্পর্শকাতর কিছু তথ্য বেরিয়ে আসায় সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু সে বিষয়ে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা না পাওয়ায় হাত গুটিয়ে বসে থাকা ছাড়া কোনো উপায় নেই। ’

মামলা তদন্ত কর্মকর্তা মো. আকবর হোসেন তৎকালীন মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) ছিলেন। এখন তিনি এসি (রেশন স্টোর) এর দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি জানান, ব্যারিস্টার তাপসের ওপর বোমা হামলার রহস্য উদঘাটনে অনেকখানি এগিয়ে গেছে গোয়েন্দা পুলিশ। বোমা হামলার সঙ্গে সেনা সদস্যদের সংশ্লিষ্টতার বিষয় উঠে আসায় সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়সহ সরকারের দায়িত্বশীল মহলকে জানানো হয়।

তিনি বলেন, ‘অভিযুক্ত সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ ও কয়েকজন সেনা সদস্যের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তদন্ত করতে পারলেই মামলার অভিযোগ (চার্জ) গঠনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে। ’

উল্লেখ্য, এ মামলা তদন্তের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি পরিবারের সাত সদস্যকে কয়েক দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

ঘটনার ১০ দিনের মাথায় কয়েকজন জুনিয়র সেনা কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা আলোচনায় আসে। অভিযুক্ত একজন সদ্য চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দারসহ কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেন।

অন্যদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদনে সাংসদ তাপস হত্যাচেষ্টার সঙ্গে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার যোগসূত্র থাকার বিষয়ে ইঙ্গিত দেওয়া হয়।

 এ দু’টি বিষয় যোগ হওয়ায় তদন্ত তৎপরতা স্থবির হয়ে পড়ে।

ধানমণ্ডি-১২ আসনের সাংসদ ও শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাইয়ের ছেলে তাপস গত বছরের ২১ অক্টোবর মতিঝিলে বাংলার বাণী ভবনের নিচে পেতে রাখা দূর নিয়ন্ত্রিত বোমা হামলার শিকার হন।

এতে ১৩ জন আহত হলেও অল্পের জন্য রক্ষা পান তাপস। এর পরের দিন তাপস বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

ডিবি সাতজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

এরা হচ্ছেন-মেজর ডালিমের ভাই কামরুল হক স্বপন, কর্নেল রশিদের মেয়ে মেহনাজ রশিদ, ফ্রিডম পার্টির দু’ কর্মী আব্দুর রহিম ও শেখ সফিউলাহ সফু, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মহিউদ্দিনের দু’ ছেলে নাজমুল হাসান ও মাহবুবুল হাসান এবং বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনি মেজর (অব.) বজলুল হুদার চাচাতো ভাই আতাউল হুদা।

আসামিরা সবাই এখন জামিনে আছেন। অথচ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন এখনও চূড়ান্ত করতে পারেনি ডিবি।

বাংলাদেশ সময় : ১৭২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।