ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

লালমনিরহাটে তিস্তার ভাঙ্গনে শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০১ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১০
লালমনিরহাটে তিস্তার ভাঙ্গনে শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে

লালমনিরহাট: গত দুই দিনে তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা এলাকার শতাধিক বসতভিটা নদী গর্ভে চলে গেছে। শতাধিক একর আবাদি জমি ও কয়েকটি ফলের বাগান বিলীন হয়ে গেছে।



তিস্তার ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে আরো পাঁচ শতাধিক বসতভিটা, কয়েকশ একর আবাদি জমি, ফলের বাগান ও সরকারি- বেসরকারি কয়েকটি স্থাপনা।
 
এদিকে নদী ভাঙ্গনের শিকার মানুষেরা আশ্রয় নিয়েছেন সরকারি রাস্তা, স্কুল-কলেজ এবং আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে। অনেক খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন খোলা আকাশের নীচে।

মহিষখোঁচা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘তিস্তা পাড়ের গ্রাম গোবর্ধন, বালাপাড়া ও গুচ্ছগ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করেছে। দুইদিনে শতাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে এবং আরো যাচ্ছে। ’

তিনি বলেন, ‘নদী ভাঙ্গনের এ ভয়াবহ অবস্থার কথা আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জানালেও এখনো কোন সাড়া মেলেনি। ’

ভাঙ্গন কবলিত গোবর্ধন গ্রামের সামাদ মিয়া (৫০) বললেন, ‘মোর বসতভিটা পাঁচবার ভাঙ্গার পর মুই চার শতক জমির উপর পঞ্চম বসতভিটা করি ছওয়া পোওয়া নিয়া বাঁচি আছনুং। রোববার বিকালে এইকনা ভাঙ্গি নিয়া গ্যালো তিস্তা। এ্যালা মুই বউ বাচ্চা নিয়া সরকারি রাস্তার উপর উঠিছং। ’
 
একই গ্রামের তাহের আলী (৪০) জানালেন, তার বসতভিটা তৃতীয় বারের মতো তিস্তার ভাঙ্গনের শিকার হলো। বসতভিটার সঙ্গে একটি আমের বাগানও নদী গর্ভে চলে গেছে। বর্তমানে তিনি দুই সন্তান, স্ত্রী ও বৃদ্ধা মাকে নিয়ে এক স্বজনের বাসায় উঠেছেন।

মোহর আলী (৪৫) বললেন, ‘এ্যাকনা বাঁশের ঝাড় আছিল তাও ভাঙ্গি গ্যাইছে। টুকটাক বাঁশ বেঁচিয়া চলছিনুং। এ্যালাযে মুই ক্যামন করি চলিম তাকে জানোং না। ’

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পারভেজ হাসান এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, তিস্তার ভাঙ্গন সম্পর্কে আমাকে অবহিত করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ’

সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতার জন্য জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন অফিসকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তবে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত ভাঙ্গনের শিকার মানুষগুলোর জন্য সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো সাহায্য সহযোগিতা পৌঁছে নি।

বাংলাদেশ সময় ১০৪১ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১০
প্রতিনিধি/এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।