ঢাকা: সমন্বয়ের অভাব আর তেমন কোনো সাফল্য ছাড়াই শেষ হয়েছে দাহ্য রাসায়নিক (কেমিকেল) কারখানা ও গুদাম অপসারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত প্রথম দিনের অভিযান।
অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা এবং লাইসেন্স না থাকায় দুটি গুদামকে জরিমানা ও সিলগালা করার মধ্য দিয়ে শেষে হয়েছে দিনব্যাপী এ অভিযান।
ঢাকা জেলা প্রশাসনের মুখ্য নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট মোহম্মদ আল-আমিনের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন, র্যাব ও দমকল বাহিনী যৌথভাবে অভিযান পরিচালিত হয়।
দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ চিহ্নিত করতে সক্ষম বিশেষজ্ঞের অভাব আর রাসায়নিক গুদামের হালনাগাদ তালিকা না থাকায় সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য করা গেছে অভিযানে।
দুপুর পৌনে একটার দিকে এলিফ্যান্ট রোডে অভিযান শুরু হয়। তবে গুদাম কর্তৃপক্ষ সরকারি নির্দেশ মেনে আগেই রাসায়নকি সরিয়ে নিয়েছে বলে জানান অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা।
পুরান ঢাকা রেখে কেন এলিফ্যান্ট রোডে অভিযান? জবাবে অভিযানের প্রসিকিউশন প্রতিষ্ঠান (অভিযোগ উত্থাপনকরী প্রতিষ্ঠান) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক জহুরুল আমিন বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল তাই এ এলাকায় অভিযান চালানো হয়, এরপর আমরা পুরান ঢাকায় যাবো। ’
এসময় দাহ্য রাসায়নিকের কারখানা ও গুদামের হালনাগাদ তালিকা না থাকায় অভিযান প্রায় একঘণ্টা স্থগিত থাকে। এক পর্যায়ে অভিযান প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে পুরোনো তালিকা ও উপস্থিত সাংবাদিকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়।
এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের প্রধান মোহম্মদ আল-আমিন বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। কিন্তু প্রসিকিউশন ফায়ার সার্ভিস অভিযোগ দিলেই আমরা ব্যবস্থা নিতে পারবো। ’
তালিকার ব্যাপারে জহুরুল আমিন বলেন, আমাদের হালনাগাদ করা তালিকা আছে তবে তা আনা হয়নি। ’
কেন আনা হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সকালেই অভিযানের বিষয়টি জানতে পেরেছি, তাই সবকিছু ঠিকমতো আনা হয়নি। ’
তিনি জানান, রাজধানীর সাত থেকে ৮শ’র মতো কেমিকেল কারখানা ও গুদামের তালিকা তাদের থাকলেও বিস্ফোরক অধিদপ্তর ঘোষিত ২০টি কেমিকেলের গুদাম বা কারখানার কোনো তালিকা তাদের নেই।
এরপর লালবাগের দু’টি গুদামে অভিযান চালানো হয়। সেখানে আবদুল গাফফার অ্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেডের দুটি গুদামে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা না থাকায় তিন লাখ টাকা জরিমানা করে আদালত।
তবে গুদাম দুটিতে থাকা প্লাস্টিক তৈরীর কাঁচামাল চিহ্নিত ২০টি রাসায়নিক পদার্থের একটি কিনা তা পরীক্ষা করতে বেগ পেতে হয় অভিযান পরিচালনাকারীদের। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে জহুরুল আমিন বলেন, ‘এ ধরনের অভিযান পরিচালানায় যে ধরনের বিশেষজ্ঞ দরকার সে সরকম কোনো বিশেষজ্ঞ নেই ফায়ার সার্ভিসে। ’
পরবর্তী অভিযান কবে হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে নির্ধারিত কোনো দিনক্ষণ জানাতে পারেননি তিনি।
তিনি বলেন, ‘অভিযান অব্যহত থাকবে, প্রত্যেক সপ্তাহে অন্তত একটি হবে, সেটি আগামীকালও হতে পারে। আর তা হবে উচ্চ পর্যায়ের নিদের্শেই। ’
বিস্ফোরক অধিদপ্তর থেকে দেওয়া ২০ ধরনের দাহ্য রাসায়নিকের পদার্থের যে তালিকা দেওয়া হয়েছিল সে ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পাওয়া যায়নি অভিযানে।
অভিযানের সফলতা সম্পর্কে ম্যাজিস্ট্রেট মোহম্মদ আল-আমিন বলেন, ‘দাহ্য কেমিকেলের সন্ধান পেলে ভালো হতো। এ ধরনের অভিযান অব্যহত থাকবে এবং আশা করছি ফায়ার সার্ভিস দাহ্য কেমিকেলের গুদাম ও কারখানার সন্ধান করবে এবং তালিকা হালানাগাদ করবে। ’
অভিযানের সমন্বয়হীনতার ব্যাপারে জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১০