ঢাকা: আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর দাহ্য কেমিকেল (রাসায়নিক) কারখানা ও গুদাম অপসারণ অভিযান রোববার আবার শুরু করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানকালে অগ্নিনির্বাপন ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা না থাকায় লালবাগের দুটি গুদামের জরিমানা আদায় করেছেন আদালত।
ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহম্মদ আল-আমিনের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন, র্যাব ও দমকল বাহিনী রোববার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে এলিফেন্ট রোড থেকে এ অভিযান করে।
এলিফেন্ট রোডে এর আগে যে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তা মেনে গুদাম কর্তৃপক্ষ কেমিকেল সরিয়ে নিয়েছে বলে জানান অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা। কারখানাগুলো এলিফেন্ট রোডের ৩৪৭, ৩৪৯ ও ৩৬৮ হোল্ডিং নম্বরে এ ছিল।
এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত যায় লালবাগ এলাকার হোসেনি দালান রোডে। সেখানে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা না থাকায় আবদুল গাফফার অ্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেডকে দুই লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে প্রতিষ্ঠানের ইনচার্জ মো. শহীদুল্লাহকে দুই মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ সময় একই মালিকের আরেকটি গুদামে অভিযান চালিয়ে একই কারণে ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে প্রতিষ্ঠান ম্যানেজার নাসিরুল ইসলাম খানকে দুই মাস বিনামশ্র কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
পরে জরিমানার অর্থ নগদ পরিশোধ করায় মামলা তুলে নেওয়া হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম মোহম্মদ আল-আমিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপন আইন-২০০৩ এর ১৮ ধারা অনুযায়ী কারখানাগুলোকে এ জরিমানা করা হয়েছে। ’
পরে আদালাত নিমতলী এলাকার নজরুল এন্ড ব্রাদার্স নামে একটি কেমিকেল গুদামে অভিযান চালায়। সেখানে দাহ্য কেমিকেল পাওয়ায় সেটিকে সীলগালা করা হয় এবং প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের জন্য ফায়ার সার্ভিসকে নির্দেশ দেন আদালত।
তবে অপসারণের জন্য ২০ ধরনের দাহ্য রাসায়নিকের পদার্থের যে তালিকা নির্দিষ্ট করে দেয় বিস্ফোরক অধিদপ্তর অভিযানে সে ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এর আগে পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে দাহ্য ও বিপজ্জনক রাসায়নিকের গুদাম ও কারখানার বিরুদ্ধে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ১৭ জুন দুই মাসের জন্য স্থগিত করে সরকার। পরে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে এ সময়সীমা ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।
প্রাথমিকভাবে পুরান ঢাকা থেকে সব ধরনের রাসায়নিকের গুদাম ও কারখানা কারখানা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হলেও পরে অপসারণের জন্য ২০ ধরনের দাহ্য রাসায়নিকের পদার্থের তালিকা নির্দিষ্ট করে দেয় বিস্ফোরক অধিদপ্তর।
উল্লেখ্য, গত ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটি আগুনের ভয়াবহতার কারণ হিসেবে দাহ্য ও বিপজ্জনক রাসায়নিকের গুদাম ও কারখানাকে দায়ী করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১০