ঢাকা: রাশিয়ায় রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ে এক বাংলাদেশি নাগরিককে নির্যাতনের ঘটনায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী আন্তর্জাতিক চুক্তি-১৯৮৪ এর আওতায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে গত ২২ সেপ্টেম্বর এ অভিযোগ করা হয়।
শনিবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
তিনি জানান, বাংলাদেশি নাগরিক ড. অশোক গুপ্ত ২০০২ সালের ৩১ অক্টোবর এক চুক্তির মাধ্যমে রুশ সরকারের কিছু সম্পত্তি ২০ বছরের জন্য ইজারা নেন।
পরে ২০০৫ সালে সম্পত্তির ভাড়া দেওয়া নিয়ে জটিলতা হলে ২০০৯ সালের ১১ মার্চ ইজারা বাতিল করে রুশ সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাদীর পক্ষ থেকে দেওয়ানি আদালতে একটি মামলা করা হয়।
এরপর বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য রুশ সরকার আমন্ত্রণ জানালে গত ২০ জুন রাশিয়া যান বাদী অশোক গুপ্ত।
পরের দিন রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের অধীন জেনারেল ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনশিপ (বিদেশে অবস্থিত সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অফিসে যান তিনি।
এ সময় বিভাগের পরিচালক পলিকারপভ ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভোলখাভিতিনসহ অন্য কর্মকর্তারা তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করেন। সেইসঙ্গে জোর করে রুশ ভাষায় লেখা কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন।
এ ব্যাপারে অশোক গুপ্ত রাশিয়ার বিভিন্ন পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। উপায়ন্তর না দেখে দেশে ফিরে ২৯ জুন পল্টন থানায় এ ব্যাপারে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর অশোক গুপ্তের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনে এ অভিযোগ করেন।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন নির্যাতনবিরোধী চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে এ ধরনের বিরোধ নিরসনে কাজ করে। বাংলাদেশ ও রাশিয়া উভয়েই এ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ।
মনজিল মোরসেদ জানান, অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রুশ সরকারকে সুপারিশ করতে পারে কমিশন।
তিনি জানান, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনে এ ধরনের অভিযোগ এটিই প্রথম।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১০