ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা করে ঘুষ নিলেন প্রশিক্ষক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা করে ঘুষ নিলেন প্রশিক্ষক

বাগেরহাট: বাগেরহাটে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) স্কিলস-২১ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স করে দেওয়ার কথা বলে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে।

ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি (আইএমটি) বাগেরহাটে চলমান এ কোর্সের ২৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৮ থেকে ২০ জনের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে।

যারা টাকা দেয়নি তারা পাশ করতে পারবে না এমন হুমকিও দেওয়া হয়েছে। আইএলও‘র ড্রাইভিং প্রশিক্ষক মো. রুবেলের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির দ্বিতীয় ব্যাচের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

মো. সাব্বির হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি বাগেরহাটে আইএলও‘র চার মাসের ড্রাইভিং কোর্স সম্পন্ন করলে আমরা আইএলও থেকে চার হাজার ২০০ টাকা পাই। ভর্তির সময় বলা হয়েছিল, ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আমাদের কোনো টাকা লাগবে না। কিন্তু এখন আমাদের কাছ থেকে ড্রাইভিং পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার জন্য জন্য তিন হাজার টাকা করে নিয়েছেন প্রশিক্ষক মো. রুবেল। শুধু আমি না, প্রায় সবাই এ টাকা দিয়েছেন রুবেল স্যারকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, বিআরটিএ'তে টাকা দেওয়া লাগবে বলে আমাদের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। আমিসহ প্রায় ১৮-২০ জন শিক্ষার্থী তিন হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু এটা যদি জানাজানি হয় আমাদের ফেল করিয়ে দেওয়া হতে পারে। এজন্য কেউ মুখ খুলছে না।

বারুইখালী গ্রামের বাসিন্দা মো. নুরুজ্জামান নামের এক প্রশিক্ষণার্থী বলেন, একটি ট্রাক চালকের সহযোগী হিসেবে কাজ করায় ঢাকায় ছিলাম। রুবেল স্যার ফোন করে বিআরটিএ‘তে দেওয়ার জন্য তিন হাজার টাকা চেয়েছিলেন। কাছে টাকা নেই জানালে, তিনি বলেন টাকা না দিলে ফেল করিয়ে দিবেন। পরে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি তাদের কাছ থেকেও তিন হাজার করে টাকা নেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে প্রশিক্ষক মো. রুবেল বলেন, আমি কোনো টাকা নেইনি। তবে তার কাছে পূর্ণাঙ্গ নাম জানতে চাইলে তিনি তার নাম বলেন নি।

এদিকে বিআরটিএ-তে লাইসেন্সের জন্য সরকারি ফি ছাড়া কোনো টাকা নেওয়া হয় না দাবি করে প্রতিষ্ঠানটির বাগেরহাট কার্যালয়ের পরিদর্শক রনজিত কুমার হালদার বলেন, বিআরটিএ‘র লাইসেন্স প্রদানের জন্য আমরা কোনো টাকা নেই না। যদি কেউ বিআরটিএ‘র নাম ভাঙ্গিয়ে টাকা নেয়, তাহলে সে দায় দায়িত্ব তাদের।

আইএলও‘র স্কিলস-২১ প্রকল্পের সমন্বয়ক ইলিয়াস রহমাতুল্লাহ বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি অবগত নন। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি বাগেরহাটের অধ্যক্ষ মো. জিয়াউল হক বলেন, এভাবে টাকা নেওয়ার নিয়ম নেই। যদি কোনো শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দেন, তা হলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিলে তাদের ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ দিয়ে শিক্ষার্থীরা কেন ঝুঁকির মধ্যে থাকবে- এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, লিখিত অভিযোগ ছাড়া আমরা কিভাবে ব্যবস্থা নিব। অনেকেই তো অনেক কথা বলে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।