পিরোজপুর : পিরোজপুরের অভাবী কৃষকরা বিক্রি করে দিচ্ছেন তাদের ফসলি জমির মাটি। এতে সাময়িকভাবে কৃষক লাভবান হলেও দীর্ঘ সময়ের জন্য জমি হারাচ্ছে উর্বরতা।
জানা গেছে, প্রতিবছর মাঠ থেকে ধান ওঠার পর পরই এই মাটি কেনাবেচা শুরু হয়।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, নতুন রাস্তা নির্মাণ, নিচু জায়গা ভরাট করা, ঘরবাড়ি তৈরি ও পুকুর পাড় উঁচু করাসহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজের জন্য এ মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে।
পিরোজপুর শহরের ভাইজোড়া এলাকার চাষী সুলতান মিয়া বলেন, আগে পতিত জমির মাটি বিভিন্ন কাজে ব্যাবহার করা হত। কিন্তু চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ফসলি জমির মাটি কেনাবেচা শুরু হয়েছে।
শহরের বাইপাস এলাকার কৃষক আল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘টাকার খুব প্রয়োজন ছিলো তাই এ বছর এক বিঘা জমির মাটি ২০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। দুই ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে গেছে। শহরের লোকজন নতুন ঘরের ভিটি তৈরির জন্য এ মাটি নিয়েছে।
র্দীঘ দিন ধরে মাটি কেনাবেচা ব্যাবসায় জড়িত আব্দুল হালিম জানান, শহরে নতুন বাড়ির ভিটি করা জন্য প্রচুর মাটি প্রয়োজন হচ্ছে। গত ৫ বছর ধরে এ ব্যাবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে।
শহরের শিকারপুর এলাকার আর এক ব্যবসায়ী সালাম জানান, ১৭/১৮ বছর ধরে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছি। মানুষ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরে মাটির চাহিদাও বাড়ছে।
এদিকে মাটি বিক্রি করা জমিতে ফসল ভালো হয় না বুঝতে পেরে অনেক কৃষকই মাটি বিক্রি বন্ধ করেছেন। শহরের আলামকাঠী এলাকার মনিরুজ্জামান বলেন, দুই বছর আগে ১৫ কাঠা জমির মাটি বিক্রি করেছিলাম তারপর থেকে সে জমিতে আর ভালো ফসল হয় না। তাই তিনি আর জমির মাটি বিক্রি করেন না।
পিরোজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জগৎপ্রিয় দাস বলেন, মাটির উর্বরাশক্তি থাকে উপরিভাগ থেকে ১৫-২০ ইঞ্চির মধ্যে। তাই জমির ওপর থেকে মাটি সরিয়ে ফেলায় উর্বরাশক্তি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে য়ায়।
তিনি বলেন, মাটি কেটে নেওয়া জমির উর্বরাশক্তি ফিরে আসতে ১০-১৫ বছর সময় লাগে। মাটি বিক্রি করে সাময়িক অভাব দূর হলেও ক্ষতি হয় অনেক বেশি। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় : ১১৩০ ঘ. ২৭ জুন ২০১০
প্রতিনিধি/এজে