ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রমজানে দেশি ফল খাওয়ার আহ্বান ভোক্তা অধিদপ্তরের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৩
রমজানে দেশি ফল খাওয়ার আহ্বান ভোক্তা অধিদপ্তরের

ঢাকা: ডলার সংকট এবং এলসি বন্ধ থাকায় আসন্ন রমজানে ভোক্তাদের দেশি ফল খাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান এই আহ্বান জানিয়েছেন।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) ‘পাইকারি ও খুচরা ফল ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯’ বিষয়ক মত বিনিময় সভায় তিনি এই আহ্বান জানান। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে এই মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডিজি বলেন, গ্রামের একেবারে প্রত্যন্ত বাজারে গেলেও থরে থরে বিদেশি ফল সাজানো দেখা যায়। এতে দেশ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বেরিয়ে যাচ্ছে। অথচ আমাদের দেশীয় ফলের প্রাচুর্যতাও কম নয়। পুষ্টির দিক দিয়েও দেশি ফল কোনো অংশে কম নয়, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি।

তাই এবার রমজানে ভোক্তাদের বিদেশি ফলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশি ফল খাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এজন্য দেশি ফলের উৎপাদন বাড়াতে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরই রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা একটি চ্যালেঞ্জের বিষয়। এবার ডলার সংকটের কারণে চ্যালেঞ্জ আরও বেশি হবে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যবসায়ী ও ভোক্তাসহ সব সংস্থার সম্পৃক্ততা দরকার। যাতে এই সময় সবাই সহনশীল আচরণ করে এবং খাদ্য সাশ্রয় করতে পারি।

তবে রমজানে চাহিদা মেটাতে খেজুর, মাল্টা, আঙুর, কমলার মতো কিছু বিদেশি ফল আমদানির জন্য এলসি খোলার সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, এর বাইরে যেসব বিলাসী ফল রয়েছে সেগুলোর আমদানি নিরুৎসাহিত করা হবে।

ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রধান বলেন, রমজান উপলক্ষে টিসিবি ১০ হাজার টন খেজুর আমদানি করবে। সেগুলো টিসিবির ট্রাকে বিক্রি করা হবে। এছাড়া যেসব ফল ইতোমধ্যে আমদানি করা হয়েছে, সেগুলো বন্দর থেকে দ্রুত খালাসে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে শুধু দেশি ফল দিয়ে রমজানের চাহিদা মিটবে না বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। সভায় বাংলাদেশ ফ্রেসফ্রুট ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ বছর রমজান মার্চের শেষে হবে। এ সময় দেশীয় ফলমূল খুব একটি বেশি থাকে না। শুধু তরমুজ, কলা, আনারস, পেয়ারা ও বরই পাওয়া যাবে। দেশীয় ফলের ভরা মৌসুম শুরু হয় মে মাসে। তখন ফল আমদানি না করলে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু এখন ফল আমদানি না করলে চাহিদা মেটানো যাবে না।

তিনি বলেন, দেশে ফলের যে চাহিদা তার মাত্র ৩৫-৪০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হয়। বাকি ৬০-৬৫ শতাংশ আমদানি করতে হয়। এছাড়া রমজানে ৪০ হাজার টন ফল আমদানি করতে হয়। কিছু ফল ইতোমধ্যে আমদানি করলেও এলসি বন্ধ থাকায় চাহিদা অনুযায়ী আমদানি করা যায়নি। ফলে চাহিদা অনুসারে যোগান না থাকলে দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সরকার, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও জনগণ যদি মনে করে, রমজানে বিদেশি ফলের প্রয়োজন আছে, তাহলে এলসি খুলে দিতে হবে এবং সহজে ফল আমদানির সুযোগ দিতে হবে। আর যদি মনে করে দেশি ফল দিয়েই চাহিদা মেটানো যাবে তাহলে আমদানির প্রয়োজন নেই। এটা তাদের সিদ্ধান্ত।

মত বিনিময় সভায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, উপ-পরিচালক আতিয়া সুলতানা, শাহনাজ সুলতানা, ঢাকা মহানগর ফল আমদানি-রপ্তানিকারক ও আড়তদার ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম শেখসহ রাজধানীর বিভিন্ন ফল মার্কেটের ব্যবসায়ী এবং ক্যাব ও এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৩
এসসি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।