ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নদী-পরিবেশ নিয়ে দেশে আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৩
নদী-পরিবেশ নিয়ে দেশে আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই

ঢাকা: জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান বলেছেন, নদী, পানি, পরিবেশ নিয়ে দেশে আইন আছে, তবে তার প্রয়োগ নেই। প্রয়োগ করার মানুষ নেই; আর মানুষ থাকলেও তাদের সাহস নেই।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়ামের আয়োজনে ঢাকা শহরের পানি, বায়ু ও শব্দ দূষণ বিষয়ক পরিবীক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই তৃতীয় ডাটা ভ্যালিডেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিলের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহম্মদ নজরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন এবং স্টেট অব ঢাকা এনভায়রনমেন্ট রিপোর্ট নিয়ে বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন কনসোর্টিয়ামের দূষণ পরিবীক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে একটি স্টেট অব ঢাকা এনভায়রনমেন্ট রিপোর্ট তৈরির লক্ষ্যে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম এপ্রিল, ২০২১ থেকে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ দশটি এলাকা থেকে শব্দ এবং বায়ু মানের নমুনা সংগ্রহ করেছে। এছাড়াও বুড়িগঙ্গা এবং ধলেশ্বরী নদীর ডায়িং, নৌযান এবং ট্যানারি দূষণের চারটি এলাকা থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। সেই সঙ্গে নদী পাড়ের সাধারণ মানুষ ও নাগরিক সমাজের মতামত গ্রহণ ও এ সংক্রান্ত নীতি, আইন ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনা পর্যালোচনা করে আসছে। এসব বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত ও মতামতগুলো ডাটা ভ্যালিডেশন কর্মশালায় উপস্থাাপন করা হয়েছে।

কর্মশালায় সংগৃহীত গবেষণালব্ধ তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহম্মদ কামরুজ্জমান মজুমদার এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক মো. নূরুল ইসলাম। কর্মশালায় উপস্থাাপিত প্রতিবেদনের ওপর বিশেষজ্ঞ মতামত দেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মুনির হোসেন চৌধুরী এবং ঢাকা ওয়াসার মাইক্রোবায়োলোজি ও ল্যাব প্রধান ড. মো.আলমগীর হোসেন।

প্রধান অতিথি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান বলেন, এই অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত তথ্য ও উপাত্ত দেশের সব নদীর চিত্র তুলে ধরে না, তবে এটিকে ঢাকার নদীর চিত্র তুলে ধরে এমন প্রতিনিধিত্বকারী তথ্য হিসাবে বিবেচনা করা যায়। যারা এই কাজটি করেছেন তারা প্রশংসার দাবি রাখেন। তবে দখলের কারণে দূষনের তীব্রতা কতখানি বেড়েছে তা এই তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে পাওয়া যায়নি, তাই নদী দখল নিয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য আমার পারমর্শ থাকবে।

তিনি বলেন, নদী, পানি, পরিবেশ নিয়ে দেশে আইন আছে, তবে তার প্রয়োগ নেই। প্রয়োগ করার মানুষ নেই। আর মানুষ থাকলেও তাদের সাহস নেই। প্রত্যেকটা বিভাগের জাবাবদিহির জায়গা নিশ্চিত করতে হবে, তাহলে পরিবেশ নিয়ে কাজ করে পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকার চারদিকে যে ৪টি নদী আছে সেগুলো দূষণ ও দখলের কারণে মৃত। অথচ আদালত নদীকে জীবন্ত সত্ত্বা ঘোষণা করেছেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনারের চিফ অব পার্টি মাইনুদ্দিন আহমেদ।

ডাটা ভেলিডেশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউএসএআইডি বাংলাদেশের সিভিল সোসাইটি অ্যাডভাইজর সুমনা বিনতে মাসুদ। মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা বায়ু, শব্দ ও নদী দূষণ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৩
এইচএমএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।