ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রেকর্ড ভেঙে ৬ মাসে কেরুর ২৩৩ কোটি টাকার মদ বিক্রি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৩
রেকর্ড ভেঙে ৬ মাসে কেরুর ২৩৩ কোটি টাকার মদ বিক্রি

চুয়াডাঙ্গা: গত বছরের মতো এবারও মদ বিক্রিতে রেকর্ড গড়েছে দেশের রাষ্ট্রায়াত্ত্ব চিনিকল কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। ২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসের হিসাব অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি শুধু মদ বিক্রি করেছে ২৩২ কোটি ৯৬ লাখ টাকার।

এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১২ মাসে মোট মদ বিক্রি হয়েছিল ৩৬৭ কোটি টাকার। গত ৬ মাসে যে পরিমাণ মদ বিক্রি হয়েছে তা গত বছরের ২১ শতাংশ বেশি। এটিই এখন পর্যন্ত কেরুর সর্বোচ্চ বিক্রি। চলতি অর্থবছর শেষে এবারও সর্বোচ্চ আয়ের রেকর্ড গড়ার প্রত্যাশা করছে কেরু কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লিমিডেট। দেশে বিদেশি মদের আমদানি কমায় মদ বিক্রিতে রেকর্ড গড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। অনুমোদিত বারগুলোতে দেশি মদের সংকট মোকাবিলায় কেরুর মদের চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ। ফলে বিক্রি ও আয় দুটোই বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মদ বিক্রিতে আয় হয়েছে ২৩২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আয় হয়েছিল ১৯২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় এবার ৪০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বেশি আয় হয়েছে। এবারে আগের বছরের তুলনায় আয় বেড়েছে ২১ শতাংশ।

২০২১-২২ অর্থ বছরে বিভিন্ন ইউনিট থেকে ৪২৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা আয় করে রেকর্ড করে কেরু। শুধু ডিস্টিলারি ইউনিট বা মদ বিক্রি হয় ৩৬৭ কোটি টাকার। যা কেরুর ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আর এই ইউনিট থেকে ১০০ কোটি টাকারও বেশি মুনাফা লাভ করে কেরু। তবে, বড় ধরনের লোকসান হয় চিনি ইউনিটে যা প্রায় ৫০ কোটি টাকা। ওই বছর রাজস্ব আদায় ও কোম্পানি পরিচালনাসহ সব খরচ বাদে কোম্পানির প্রকৃত মুনাফা হয়েছে ৬৭ কোটি ৮২ লাখ ৯১ হাজার টাকা। চলতি ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রায় ৭৯ কোটি টাকা লাভের প্রত্যাশা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

গত ২৪ ডিসেম্বর কেরুর ২০২২-২৩ আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করা হয়। ২০২২-২৩ মৌসুমে ৫৩ কার্যদিবস মিল চালু রাখার লক্ষ্য রয়েছে।

মদের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় ১০ লাখ প্রুফ লিটার বেশি মদ বিক্রি করেছে কেরু। কেরুর রয়েছে ইয়েলো লেবেল মল্টেড হুইস্কি, গোল্ড রিবন জিন, ফাইন ব্র্যান্ডি, চেরি ব্র্যান্ডি, ইম্পেরিয়াল হুইস্কি, অরেঞ্জ কুরাকাও, জারিনা ভদকা, রোসা রাম ও ওল্ড রামের মতো মদের নয়টি ব্র্যান্ড। কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ঢাকা, চট্টগ্রাম ও চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় তিনটি বিক্রয়কেন্দ্র আছে।

সারাদেশে কেরুর ১৩টি ওয়্যারহাউস ও তিনটি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। এরইমধ্যে কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় নতুন দুটি বিক্রয়কেন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।

দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন জানান, দেশে বিদেশি মদের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করায় কেরুর মদের চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ। দেশে অ্যালকোহলের চাহিদা মেটাতে বিয়ার তৈরির লক্ষ্যে কেরুর দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপন করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এটি বাস্তবায়ন করা হলে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি সমৃদ্ধ হবে দেশের অর্থনীতি। নতুন করে মদের পাশাপাশি কেরুর বিয়ার তৈরির চিন্তা রয়েছে সরকারের।

প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নের লক্ষ্যে ১০২ কোটি ২১ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে উৎপাদন প্রক্রিয়া করা হবে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে। এতে উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad