ঢাকা: শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঢাকার আরবান গেরিলা দল ক্র্যাক প্লাটুনের দুঃসাহসিক সদস্য সৈয়দ হাফিজুর রহমানের নাম তালিকাভুক্ত করে গেজেট প্রকাশে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে করা রিটের প্রাথমিক শুনানির শেষে রোববার (২২ জানুয়ারি) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
রুলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় শহীদ সৈয়দ হাফিজুর রহমানের নাম তালিকাভুক্ত করে গেজেট প্রকাশে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব খুঁজে বের করতে একটি স্বাধীন ও স্থায়ী কাউন্সিল গঠনে নিষ্ক্রিয়তা কেন স্বেচ্ছাচারী, অসৎ উদ্দেশ্যপূর্ণ, অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক (ডিজি), মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মহাপরিচালক, ঢাকার জেলা প্রশাসককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বাকির হোসেন মৃধা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল বাশার। রিটটি দায়ের করেন আইনজীবী মো. বাকির হোসেন মৃধা।
পরে আইনজীবী মো. বাকির হোসেন মৃধা জানান, স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও ক্র্যাক প্লাটুনের দুর্ধর্ষ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সৈয়দ হাফিজুর রহমান বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি না পাওয়া কেবল দুঃখজনকই না, লজ্জার বিষয়। মুক্তিযুদ্ধে ঢাকার ক্র্যাক প্লাটুনের একাধিক চরম ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশনে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। ঢাকায় এক রাতে সফলভাবে ছয়টি স্থানে মাইন বিস্ফোরণে অসামান্য কৃতিত্ব আছে হাফিজুর রহমানের।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্রের দশম খণ্ডে উল্লেখ আছে এই গেরিলা মুক্তিযোদ্ধার কৃতিত্ব। সর্বশেষ গত বছর ২৮ নভেম্বর সৈয়দ হাফিজুর রহমানের ছোট ভাই সৈয়দ মোসাদ্দেকুর রহমান ভাইয়ের স্বীকৃতি ও নাম অন্তর্ভুক্তি চেয়ে মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। তাই ওই আবেদনটি যুক্ত করে জনস্বার্থে রিটটি করেছি। আদালত রুল জারি করেছেন।
এছাড়া গত বছরের অক্টোবরে সৈয়দ হাফিজুর রহমানকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার। ‘হাফ এ সেঞ্চুরি গন/চেসিং রিকগনিশন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির জন্য হাফিজুর রহমানের পরিবারের সদস্যরা ৮ বার আবেদন করলেও তাতে সাড়া মেলেনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৩
ইএস/এমজে