ঢাকা, শনিবার, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খুনের পর ১৭ বছর নানা পরিচয়ে আত্মগোপনে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৩
খুনের পর ১৭ বছর নানা পরিচয়ে আত্মগোপনে র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার শওকত আলীসহ

ঢাকা: ২০০৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শিশু আতিকুর রহমান শাকিলকে (১৪) নৃশংসভাবে হত্যা করেন মো. শওকত আলীসহ (৩৪) তার সহযোগীরা।

ওই হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. শওকত আলীকে (৩৪) দীর্ঘ ১৭ বছর পর চাঁদপুর থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

 

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সকালে র‍্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র এএসপি মো. ফজলুল হক বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গ্রেফতার শওকত আলী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানার মো. হাছন আলীর ছেলে।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি শওকত আলীকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার শওকত আলী জানান, এই ঘটনার পর নিজের নাম পরিবর্তন করে প্রথমে ঢাকায় একটি লন্ড্রিশপে এবং পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন কাজ করে আত্মগোপনে ছিলেন। সর্বশেষ চাঁদপুরে একটি বেকারি পণ্যের সেলসম্যানের কাজ করতেন।

সিনিয়র এএসপি মো. ফজলুল হক জানান, শওকত আলী এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।  

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, ২০০৬ সালের ১ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানার আড়াইবাড়ি এলাকায় একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মো. শওকত আলীসহ অন্য আসামিরা সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আতিকুর রহমান শাকিলকে মারধর করেন। শাকিলের মা এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে তারা শাকিলের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং শাকিলের রক্ত দিয়ে গোসল করার হুমকি দেন।  

পরে ১৫ অক্টোবর রাতে শাকিল তারাবির নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাওয়ার পথে শওকত আলী সহযোগীদের নিয়ে তাকে অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী জাহের মিয়ার ধান ক্ষেতে নৃশংসভাবে হত্যা করেন। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য শাকিলের পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়।  

পরে এই ঘটনায় কসবা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ১১ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জেলা আদালতে বিচারের পর চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুন্যালে মামলাটির বিচারের জন্য ব্যবস্থা নেয়। ট্রাইব্যুনালে দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০০৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ১১ জন আসামির মধ্যে একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামি পলাতক রয়েছেন।  

২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল হাইকোর্ট এই মামলায় মো. শওকত আলীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় বহাল রাখেন। হাইকোর্টের রায় ঘোষণার সময়ও তিনি পলাতক ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৩
এসজেএ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।