চট্টগ্রাম: বর্ধিত বেতন-ফি প্রত্যাহারের আন্দোলন নিয়ে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর একপক্ষে আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও অন্যপক্ষ বৈঠক প্রত্যাখান করে মঙ্গলবার থেকে ক্লাশ ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষ নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরবেন বলে জানা গেছে।
শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক ড. এফ ইমাম আলীর মধ্যস্থতায় দুপুর সাড়ে ৩টায় বৈঠকে বসেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা । রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত একটানা ছয় ঘণ্টা চলে এ বৈঠক।
বৈঠকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘বর্ধিত বেতন ফি বিরোধী সাধারণ ছাত্রছাত্রীবৃন্দ’ এর সমন্বয়ক তবারক হোসেনের নেতৃত্বে ৬ জন সাধারণ ছাত্র অংশ নেন। প্রশাসনের পক্ষে প্রক্টর ড. জসীম উদ্দিন চৌধুরী ও ছাত্র-উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন চৌধুরীসহ কয়েকজন শিক্ষক অংশ নেন।
বৈঠকে দশ শতাংশ হারে বেতন-ফি বৃদ্ধি এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রত্যাহারের বিষয়ে ঐক্মত্য হয়।
প্রক্টর অধ্যাপক ড.জসীম উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তারা দশ শতাংশ বেতন বাড়ানো মেনে নিয়েছেন। আমরা মামলাগুলো ইতিবাচকভাবে দেখার আশ্বাস দিয়েছি। ’
আন্দোলনকারী সংগঠনের সমন্বয়ক তবারক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রশাসন এবং শিক্ষকদের আশ্বাসের উপর আস্থা রেখে আমরা আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছি। ’
অন্যদিকে আন্দোলনকারী সংগঠনের সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি দীপঙ্কর মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের প্রধান দাবি ছিল ছাত্র নিপীড়নকারী উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ। এ দাবি নিয়ে সমন্বয়ক অভিযুক্ত প্রক্টরের সঙ্গে বৈঠকে বসায় আমরা সেটা প্রত্যাখান করেছি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত উপেক্ষা করে বৈঠকে বসার এখতিয়ার সমন্বয়কের নেই। ’
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে দীপঙ্কর মজুমদারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন নেতা ক্যাম্পাসের শিক্ষক ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে মঙ্গলবার থেকে ক্লাশ ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, গত ২ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্ধিত বেতন ফি প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওইদিনই জরুরি সিন্ডিকেট বৈঠক ডেকে রমজান ও ঈদের ছুটি এগিয়ে এনে বিশ্ববিদ্যালয় ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১০