ঢাকা: মানসিক রোগ, শারীরিক রোগের মতোই একটি রোগ। মানসিক রোগীদেরও র্মযাদা, সমান পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
শনিবার (১০ অক্টোবর) বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস-২০১৫ উপলক্ষে ট্রাস্টওয়ার্দি ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
এ বছর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য “মানসিক স্বাস্থ্যে মর্যাদাবোধ”।
বক্তারা আরও বলেন, বিভিন্ন কারণে বিশেষত সামাজিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কারণে অনেকেই অসুস্থতার শিকার হন। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিশ্বে প্রায় ৫০ বিলিয়ন বা মোট জনসংখ্যার ১২ থেকে ২৩ শতাংশ নারী-পুরুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত।
বাংলাদেশেও এর সংখ্যা কম নয়। ২০১৩ সালের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে শিশু-কিশোরদের মধ্যে মানসিক রোগের প্রকোপ ১৩.৫ থেকে ২৩ শতাংশ, অর্থাৎ গড়ে প্রায় ১৮ শতাংশ। যার মধ্যে মানসিক প্রতিবন্ধী প্রায় ৪ শতাংশ। অন্যদিকে প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে মানসিক রোগের প্রকোপ ৬.৫ থেকে ৩১ শতাংশ, অর্থাৎ গড়ে প্রায় ১৬ শতাংশ।
এই বিপুল জনগোষ্ঠীর জন্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসা ব্যবস্থা ও সুযোগ-সুবিধা অপ্রতুলই নয়, বরং নগণ্য। মানসিক রোগীদের জন্য দেশে মাত্র দুইটি বিশেষায়িত সাত শ’ শয্যার হাসপাতাল রয়েছে। পাশাপাশি দেশের হাসপাতালগুলোতে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক আন্তঃবিভাগ রয়েছে ৪০টি, যাতে শয্যা সংখ্যা মাত্র ৮১৩টি।
অন্যদিকে শিশু-কিশোদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক আন্তঃবিভাগ রয়েছে মাত্র একটি, যার শয্যা সংখ্যা মাত্র ২০টি। দেশে সাইকিয়াট্রিক চাইল্ড ক্লিনিক রয়েছে মাত্র দুইটি।
এর চেয়েও দুঃখজনক মানসিক স্বাস্থ্যখাতে সরকারি ব্যয় বার্ষিক স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ০.৪৪ থেকে ০.৫০ শতাংশ। অথচ দেশের উন্নয়কে তরান্বিত করতে হলে সমাজের এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে।
বক্তারা বলেন, বহু আগেই মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ের উন্নয়ন এবং চিকিৎসা সেবার জন্য আইন বা নীতিমালা হওয়ার প্রয়োজন ছিল। যা গত ৪০ বছরেও করা সম্ভব হয়নি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সহায়তায় ‘বাংলাদেশ মানসিক স্বাস্থ্য আইন- ২০১৪’ নামে একটি খসড়া আইন তৈরি করা হলেও এখন পর্যন্ত তার বাস্তবায়ন হয়নি।
আলোচনা সভা থেকে মানসিক রোগীদের সম্মান ও মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে ‘বাংলাদেশ মানসিক স্বাস্থ্য আইন- ২০১৪’ এর দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা।
এ সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৫
এটি