ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

মনোকথা

আপনার সমস্যা-আমাদের সমাধান

লক্ষণ মিললেই সব সময় মানসিক রোগ নয়!

মনোকথা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৫
লক্ষণ মিললেই সব সময় মানসিক রোগ নয়! ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: মনোকথা আপনাদের ‍পাতা। আপনার মনস্তাত্ত্বিক নানা সমস্যা সমাধানে আমরা রয়েছি আপনার পাশে।

সমস্যা জানিয়ে জেনে নিন সম্ভাব্য সমাধান। মনোকথার এক পাঠক জানিয়েছেন তার সমস্যার কথা, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সমাধান জানানো হলো।

আপনার সমস্যা
Ami 7/8 bochor jabot manosik pblm e vugchi. amr kache mne hy amr brain abnormal vabe kaj korche. sijofreniya, depression, obsession er onk gulo lokkhn ache amr moddhe. amr chinta,abeg, onuvuti gulo pagol der moto. amr ei osavabikota majhe kichutei savabik chinta, onuvuti pacchi na. Sob kichu amr kase osavabik lage. nijer ostito bodh e nai amr moddhe. pagol r amr moddhe tofat hocche pagol ra bujhte pare na tara ki korche kinto ami amr osavabik, bisringkhol chinta, abeg onuvuti bujhte parchi kinto niyontron korte parchi na. amr mne hy amr brain abnormal vabe kaj korche. savabik vabe kaj korte parche na. amr chinta gulo prokashito hole manush amk pagol mne korbe. amr lokkhn gulo prokashito hocche kinto ami nije bujhte parchi, khub jontrona pacchi. ami r parchi na. amr majhe majhe suicide korte iccha kore. plzzzz help me. amr age 22.
 
amr osavabik, bisringkkhol chinta, abeg, onuvuti gulo amr prokash pacche na. kicchi prokash pay. jemon amr priyo ekjon mara jawar por amr kanna ase ni. onk vul jinish k thik mne hy, abar thik jinish k vul mne. Right shiddhanto nite pari na. amk help koren plzz.

আমাদের সমাধ্যান
চিঠি লেখার জন্য ধন্যবাদ। আপনি লিখেছেন, আপনার মনে হয় আপনার মস্তিষ্ক অস্বাভাবিকভাবে কাজ করে। এই জায়গাটা একটু খোলাসা করে বললে ভালো হয়। কিসের ভিত্তিতে এমন কথা বলছেন? এর আগে কি কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছেন? মস্তিষ্কের EEG/MRI বা এমন কোনো পরীক্ষা কি করানো হয়েছে?

যদি এখন পর্যন্ত কোনো চিকিৎসক আপনার রোগ নির্ণয় না করে থাকেন- তবে নিজের চিন্তা, আবেগ ও অনুভূতিগুলোকে পাগলের মতো বলে আপনি নিজেই নিজের উপর অবিচার করছেন।

শুধুমাত্র কতগুলো রোগের (সিজোফ্রেনিয়া, ডিপ্রেশন, অবসেশন) লক্ষণ পড়ে নিজেকে অস্বাভাবিক দাবি করাটা কতটুকু যৌক্তিক? যেখানে এই রোগগুলো সর্ম্পকে আপনার ন্যূনতম পেশাগত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা কোনোটাই নেই!

এই প্রসঙ্গে একটা গল্প মনে পড়লো। মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় সাইকিয়াট্রিক ওয়ার্ডে প্লেসমেন্ট থাকার সময় অনেক রোগের সঙ্গেই আমরা নিজেদের মিল খুঁজে পেতাম।

একটা উদাহরণ দেই: আমরা প্রত্যেকেই কখনও না কখনও বিষন্নতায় ভুগি। তার মানে কি আমরা সবাই বিষন্নতার রোগী? আপনার সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, আপনি নিজেকে রোগী ভাবতে ভালবাসেন। রোগ পুষে রাখেন নিজের মধ্যে। আপনার মনের একটা অংশ বলে “Don’t Be Well”। প্রথমেই আপনি নিজেই নিজেকে আবদ্ধ করে ফেলেন সুস্থ আর অসুস্থর বেড়াজালে।

নিজেকে অসুস্থ-অস্বাভাবিক ভাবাটা আপনার নেতিবাচক মানসিকতার “Comfort zone”, এভাবেই আপনি তৃপ্ত। একবার এই বৃত্ত ভেঙ্গে বেরিয়ে আসুন। নিজেই নিজেকে বলুন, “হ্যাঁ, আমার খারাপ লাগা আছে। কিন্তু কোন কারণে এই খারাপ লাগা?” কারণগুলো চিহ্নিত করুন।

যেমন:  কারণ = আমার খারাপ লাগছে >কেন? >মা বকা দিয়েছেন >কেন মা বকা দিয়েছেন? >কারণ আমি দেরি করে ঘুম থেকে উঠি >দেরি করে উঠলে কি হয়? >আমার ক্লাস মিস হয় >ফলে কার ক্ষতি হয়? >আমার >আমার ক্ষতি হলে কে ক্ষতিগ্রস্ত হবে? >প্রত্যক্ষভাবে আমি >তাহলে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হলে মা কেন বকে? >কারণ মা আমার ক্ষতি দেখতে চান না >কেন মা আমার ক্ষতি দেখতে চান না? >কারণ মা আমাকে ভালবাসেন।

এভাবে প্রতিটি খারাপ লাগার পেছনের কারণটি ধারাবাহিকভাবে খুঁজে দেখুন, যতক্ষণ পর্যন্ত না কোনো ইতিবাচক উত্তর পাচ্ছেন। মনে রাখবেন, নেতিবাচক ঘটনার মধ্যেও থাকে ইতিবাচকের ছোঁয়া। বের করে আনাটাই আপনার দক্ষতা। প্রতিটি মেঘলা দিনের পরে রয়েছে আলোক ঝলমলে দিন। আজ এখন থেকে নিজের দোষ খোঁজা বন্ধ করুন।

হ্যাঁ, আবার বলছি নিজেই বিচারকের আসনে বসে নিজেকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো বন্ধ করুন।

ভাবুন, “হ্যাঁ! আমি এমন করতাম আগে, কিন্তু এখন বিকল্প কি কি করতে পারি অপশন খুঁজি। ” আপনি যদি নিজেই নিজের কাছে গ্রহণযোগ্য না হন, তবে কেউ আপনাকে গ্রহণ করবে না।

আরেকটা কথা, নিজের অনুভূতি প্রকাশ করুন। রাগ হলে বলুন, হ্যাঁ আমি রাগ করেছি। সোজা কথা- সহজ ভাষায় সঠিক অনুভূতি প্রকাশ করুন। দেখবেন, মানসিকভাবে অনেক আরাম পাচ্ছেন। নিজে নিজে বলুন, আমার ভাবনাগুলো আমার। যতক্ষণ পর্যন্ত আমি নিজের বা অন্য কারও ক্ষতি করছি না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমার এসব ভাবনাতে কোনো দোষ নেই।

সুইসাইড নিজের ক্ষতি করে। তাহলে এটা নেতিবাচক ভাবনা। আপনি আগামী একমাস নিজের সর্ম্পকে যাবতীয় নেতিবাচক ভাবনা যদি বাদ দেন, দেখবেন আপনি বদলে গেছেন।

এটা কিভাবে সম্ভব?
শুধু নিজেকে বলুন আগামী এক ঘণ্টা, আমি নিজের সর্ম্পকে নেতিবাচক কোনো চিন্তা করবো না। এই এক ঘণ্টা দৃঢ়ভাবে মেনে চলুন। এরপর পরের এক ঘণ্টার চুক্তি করুন নিজের সঙ্গে।

দেখুন কেমন লাগে। শুভকামনা রইলো। আমরা প্রয়োজনে আপনার পাশে আছি।

প্রিয় পাঠক, ‘মনোকথা’ আপনাদের পাতা। আপনারা জানাতে পারেন বাংলানিউজের ‘মনোকথা’ পাতায় আপনি কি ধরনের প্রতিবেদন দেখতে চান। মনোরোগ নিয়ে যে কোনো মতামত ও আপনার সমস্যার কথা জানাতে পারেন আমাদের।

আমরা পর্যায়ক্রমে অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে আপনাদের প্রশ্নের জবাব জানিয়ে দেবো। আপনি চাইলে গোপন রাখা হবে আপনার নাম-পরিচয় এমনি কি ঠিকানাও।

সমস্যার কথা জানানোর সঙ্গে সমস্যার বিস্তারিত বিবরণ, আপনার নাম, বয়স, কোথায় থাকেন, পারিবারিক কাঠামো এবং এজন্য কোনো চিকিৎসা নিচ্ছেন কি না এ বিষয়ে বিস্তারিত আমাদের জানান। শুধুমাত্র সেক্ষেত্রেই সমস্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা জানানো সম্ভব হবে।

এছাড়া মানসিক সমস্যা সংক্রান্ত বা এ বিষয়ে বিশেষ যে কোনো লেখা যে কেউ পাঠিয়ে দিতে পারেন আমাদের।

আপনার সমস্যা, মতামত বা পরামর্শ ও লেখা পাঠানোর জন্য আমাদের ইমেইল করুন -[email protected]

প্রফেসর ডা. সানজিদা শাহরিয়া
কাউন্সিলর, বিসিআর পেইন অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৫
এটি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মনোকথা এর সর্বশেষ