ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

মনোকথা

হারিকেন ক্যাটরিনার ১০ বছর

শহরজুড়ে বিষণ্নতা-সিজোফ্রেনিয়া

মনোকথা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৫
শহরজুড়ে বিষণ্নতা-সিজোফ্রেনিয়া

ঢাকা: ২০০৫ সালে হারিকেন ক্যাটরিনা আঘাত হানার পরে যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের শহর নিউ অরলিন্সে উদ্ধারকর্মীরা টেক্সাস থেকে আসেন দুর্যোগ পরবর্তী সেবা দিতে। সে সময় একদল ব্যক্তি সার্বিক অবস্থা ক্যামেরাবন্দিও করেন।



বিভিন্ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ক্যাটরিনার প্রভাব ক্যালিফোর্নিয়ার ক্রিসেন্ট শহরের অবকাঠামোর ওপর পড়েনি। তবে ওই অঞ্চলের মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে পড়ে। যার ফলাফল বিষণ্নতা, উদ্বিগ্নতা, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ও সিজোফ্রেনিয়া।

২০০৭ সালের একটি জরিপে দেখা যায়, এক হাজারের বেশি অধিবাসীর মধ্যে দুর্যোগ পরবর্তী মাসে ১৭ শতাংশ মানুষ গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন ও বছরের পর বছর তারা এসব সমস্যার সঙ্গে যুদ্ধ করে চলেছেন।

প্রিন্সটোন ইউনিভার্সিটির গবেষক ক্রিস্টিনা প্যাক্সন ২০১২ সালে নিউ অরলিন্সের ওপর গবেষণা শেষে বলেন, ওই অঞ্চলের মানুষ তখন পর্যন্ত স্বাভাবিক মানসিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারেনি। বিশেষত পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেসের মাত্রা অনেক বেশি তাদের মধ্যে।

এদের মধ্যে একজন ছিলেন প্যাট। যিনি উদ্ধারকর্মী ও সাংবাদিক প্রত্যেককেই গুপ্তচর আখ্যায়িত করে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান।

গবেষকরা মনে করেন, অনেক বিষয় কোনো গবেষণা ও প্রমাণ ছাড়াই বলে দেওয়া সম্ভব। যেমন ওই দুর্যোগের সময় প্যাট সেখানে না থাকলে তিনি সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হতেন না।

রাষ্ট্রপ্রধানদের উচিত কেবল অবকাঠামোগত ও বাণিজ্যিক বিমা না করে দুর্যোগ পরবর্তী দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চিকিৎসা বিমার প্রবর্তন করা।

প্যাট বলেন, দুর্যোগ পরবর্তী একমাসের বেশি সময় তিনি বিদ্যুৎবিহীন ছিলেন। শৌচাগারের কাজ করে পুকুরের পানি দিয়ে। খাবার বলতে ছিলো স্যুপ। মোবাইল করার সুযোগ ছিলো না। অল্প সিগন্যালে কেবল টেক্সট করা যেত, ফলে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিলো এটা। অথচ স্বজনদের খোঁজ নেওয়া খুবই জরুরি ছিলো তখন।
ছয় মাস পরেও শহর ছিলো প্রায় ফাঁকা। অনেক মানুষ আর ফেরেনি। বন্যার পানিতে ভেসে আসা আবর্জন‍ায় তখনও সড়ক ভরে রয়েছে। জীবনযাপন করা কঠিন হয়ে গিয়েছিলো।

অন্য সবার মতো তিনিও বিষণ্ন হয়ে পড়েন। এরপর প্যানিক অ্যাটাক শুর‍ু হয়। দুর্যোগ পরবর্তী সময় অনেকে আত্মহত্যা করেন। ২০১৪ সালে তার ছোটবেলার বন্ধুকেও হারান এর ধারাবাহিকতায়। অসুস্থতার কারণে তার বাবা-মায়ের সংসার ভেঙে যায়। মানুষগুলো কেমন হিংস্র হয়ে পড়ে। ভয় হতে থাকে যেকোনো কিছুই হতে পারে, যোগ করেন প্যাট।

বর্তমানে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও মানসিক সমস্যা যাদের হয়েছে তারা আর আগের মতো হতে পারেননি। এ ঘটনা থেকে প্রতিটি দেশের শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন মনোবিজ্ঞানীরা।

প্রিয় পাঠক, ‘মনোকথা’ আপনাদের পাতা। আপনারা জানাতে পারেন বাংলানিউজের ‘মনোকথা’ পাতায় আপনি কি ধরনের প্রতিবেদন দেখতে চান। মনোরোগ নিয়ে যে কোনো মতামত ও আপনার সমস্যার কথা জানাতে পারেন আমাদের।

আমরা পর্যায়ক্রমে অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে আপনাদের প্রশ্নের জবাব জানিয়ে দেবো। আপনি চাইলে গোপন রাখা হবে আপনার নাম-পরিচয় এমনি কি ঠিকানাও।

সমস্যার কথা জানানোর সঙ্গে সমস্যার বিস্তারিত বিবরণ, আপনার নাম, বয়স, কোথায় থাকেন, পারিবারিক কাঠামো এবং এজন্য কোনো চিকিৎসা নিচ্ছেন কি না এ বিষয়ে বিস্তারিত আমাদের জানান। শুধুমাত্র সেক্ষেত্রেই সমস্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা জানানো সম্ভব হবে।

এছাড়া মানসিক সমস্যা সংক্রান্ত বা এ বিষয়ে বিশেষ যে কোনো লেখা যে কেউ পাঠিয়ে দিতে পারেন আমাদের।

আপনার সমস্যা, মতামত বা পরামর্শ ও লেখা পাঠানোর জন্য আমাদের ইমেইল করুন- [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৫
এটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মনোকথা এর সর্বশেষ