ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মনোকথা

হীনমন্যতা থেকেই মুটিয়ে যাওয়া

মনোকথা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২১ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৫
হীনমন্যতা থেকেই মুটিয়ে যাওয়া ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ‘নির্বোধ! আমি একটা গাধা। কী যে করি না আমি! আসলে কেউ আমাকে পছন্দ করে না।



অধিকাংশ মানুষই কখনও কখনও এ ধরনের কথা বলে থাকেন। প্রতিদিনের কর্মকাণ্ডে আমাদের প্রত্যেকেরই নানা ভুল হয়। আর তখনই এমন মনোভাব আমাদের ভেতরে কাজ করে।

ভুল এড়ানো সম্ভব না হলেও, নিজেদের সম্পর্কে এমন মনোভাব এড়ানো সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন মনোভাব এড়ানোও ‍উচিত। কারণ আমাদের শরীর ও মনে এর খুবই খারাপ প্রভাব রয়েছে।

মনে হতে পারে একবার বলে ফেললাম তো কী এমন হলো! কিন্তু একবার বলার পরে থেমে গেলেও আমাদের মস্তিষ্কে কথাগুলো ঘুরতে থাকে। ‍আর এর

প্রভাব পড়ে জীবন-যাপনে। হীনমন্যতার কারণে খাওয়ায় অনিয়ম দেখা দেয়। পাশাপাশি মুটিয়ে যায় মানসিক চাপে।

সাধারণত চারটি সাধারণ মন্তব্য শোনা যায়-
প্রতিটি বিষয়ে ভালো ও খারাপ থাকলেও কোনো কাজ সঠিকভাবে করতে না পারলে ব্যক্তি মন্তব্য করে বসেন, তার জীবন পুরোটাই বৃথা। বিশেষজ্ঞরা একে বলছেন পোলারাইজিং (Polarizing)।

অনেক বড় লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথে ছোট ছোট বাধায় ব্যক্তি হতাশ হয়ে পড়েন। বিশেষজ্ঞরা একে বলছেন ক্যাটাস্ট্রফিজিং (Catastrophizing)।

প্রতিটি খারাপ বিষয়ের জন্য নিজেকে দায়ী করা। কোনো কারণে বন্ধুরা দাওয়াতে আসতে পারেনি, ব্যক্তি মন্তব্য করেন, আসলে কেউ আমাকে পছন্দ করে না। বিশেষজ্ঞরা একে বলছেন রেশোনালাইজেশন (Rationalization)।

ভ্রমণ শেষে আনন্দ করা বাদ দিয়ে অনেকে ফিরেই ত্রুটি নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। এতে মূলত আনন্দ মাটি হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা একে বলছেন ফিল্টারিং (Filtering)।

এ ধরনের মন্তব্য কেবল মানসিক চাপই নয়, বিষণ্নতার দিকেও ঠেলে দিতে পারে। এতে অপুষ্টি ও হৃদরোগ দু’টিরই ঝুঁকি বাড়ে।

বিষয়গুলো থেকে বের হয়ে আসতে হলে যা করতে হবে:
নিজের সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন এবং লক্ষ্যে অটল থাকুন।

গবেষণাটিতে নেতৃত্ব দেন ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের মনোবিশেষজ্ঞ ইথান ক্রস।

তিনি বলেন, যেসব ব্যক্তি অন্যের সঙ্গে কথা বলার সময় ‘আমি’ এবং ‘আমার’ শব্দ ব্যবহার করেন, তারা নিজের সম্পর্কে ভালো মন্তব্য করার সময় নিজের নাম ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে নিজের সম্পর্কে ভালো মনোভাব আন‍া সহজ হবে।

প্রতিদিন আপনি কি কি করছেন তা বিশ্লেষণ করুন, ডায়েরিতে লিখতেও পারেন। অবশ্যই সম্প্রতি মনে হওয়া নিজের সম্পর্কে খারাপ মন্তব্যগুলো বাদ দিন।

ব্রিটিশ মনোবিশেষজ্ঞ চার্লস ফার্নফের মতে, আপনার মনে আসা নিজের সম্পর্কে খারাপ ধারণাগুলো কেন সঠিক নয় তা লিখুন। যদি আপনার মনে হয়, ‘কেউ আপনাকে পছন্দ করে না’ সে ক্ষেত্রে আপনি লিখতে পারেন এমন কি করা যেতে পারে যে অন্যেরা আপনাকে গুরুত্ব দেবে।

সম্প্রতি একটি জার্নালে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রিয় পাঠক, ‘মনোকথা’ আপনাদের পাতা। মনোরোগ নিয়ে যে কোনো মতামত ও আপনার সমস্যার কথা জানাতে পারেন আমাদের। আমরা পর্যায়ক্রমে অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে আপনাদের প্রশ্নের জবাব জানিয়ে দেবো।

আপনি চাইলে গোপন রাখা হবে আপনার নাম-পরিচয় এমনি কি ঠিকানাও।

সমস্যার কথা জানানোর সঙ্গে সমস্যার বিস্তারিত বিবরণ, আপনার নাম, বয়স, কোথায় থাকেন, পারিবারিক কাঠামো এবং এজন্য কোনো চিকিৎসা নিচ্ছেন কি না এ বিষয়ে বিস্তারিত আমাদের জানান। শুধুমাত্র সেক্ষেত্রেই সমস্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা জানানো সম্ভব হবে।

এছাড়া মানসিক সমস্যা সংক্রান্ত বা এ বিষয়ে বিশেষ যে কোনো লেখা যে কেউ পাঠিয়ে দিতে পারেন আমাদের।

আপনার সমস্যা, মতামত বা পরামর্শ ও লেখা পাঠানোর জন্য আমাদের ইমেইল করুন- [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৩ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৫
এটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মনোকথা এর সর্বশেষ