ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মনোকথা

বদভ্যাস ত্যাগ ও স্বাস্থ্যসম্মত অভ্যাসে সঙ্গীর ভূমিকা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৫
বদভ্যাস ত্যাগ ও স্বাস্থ্যসম্মত অভ্যাসে সঙ্গীর ভূমিকা

মেদহীন, নিরোগ শরীর ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে কে না চায়! কিন্তু এজন্য চাই বদাভ্যাস ত্যাগ করা ও স্বাস্থ্যসম্মত অভ্যাস গড়ে তোলা। বিভিন্ন কারণে যা অনেকেরই গড়ে তোলা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

এমন ব্যক্তিদের জন্য এবার সুখবর নিয়ে এসেছে সম্প্রতি করা একটি গবেষণা।

গবষেণাটিতে বলা হয়, স্বাস্থ্যসম্মত অভ্যাস গড়ে তুলতে তারাই বেশি সফল হয়, যাদের সঙ্গীও এক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তনে সক্ষম।

স্বাস্থ্য সচেতনতা ও সুস্বাস্থ্যের জন্য দম্পতির সম্মিলিত প্রয়াস বেশি কার্যকরী, গবেষণা এ তথ্যও দেয়া হয়।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন (ইউসিএল)-এর বিজ্ঞানীদের করা ওই গবেষণায়, ব্যক্তির দ্রুত ধূমপান ত্যাগে সক্রিয় হতে বা বাড়তি ওজন কমানোর সঙ্গে তার সঙ্গীর ক্রিয়াকলাপের সম্পর্ক বিষয়ে লক্ষ্য রাখা হয়।  

জার্নাল ইন্টারনাল মেডিসিনে প্রকাশিত এ গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, ব্যক্তি দ্রুততম সময়ের মধ্যে তার বদভ্যাস ত্যাগে বেশি সফল হবেন, যদি এক্ষেত্রে তার সঙ্গী একই ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যায়।

গবেষণায় দেখা যায়, পুরুষ সঙ্গীটি ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করলে ধূমপায়ী নারীদের মধ্যে ৫০ শতাংশ দ্রুত এ বদভ্যাসটি ত্যাগ করতে উৎসাহী ও সক্রিয় হয়ে ওঠে।

যাদের সঙ্গী ইতোমধ্যে ধূমপান ছেড়ে দিয়েছে, এমন নারী ধূমপায়ীদের মধ্যে ৫০ শতাংশ তাদের সঙ্গীর সঙ্গে এ বদভ্যাস পরিত্যাগ করতে পারে। ১৭ শতাংশ নারী, যাদের পুরুষ সঙ্গী এরই মধ্যে ধূমপান ছেড়েছে এবং ৮ শতাংশ নারী, যাদের সঙ্গী নিয়মিত ধূমপায়ী- এমন নারীদের উপর সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণায় বলা হয়, মানুষ তার সঙ্গীর আচরণ দ্বারা সমানভাবে প্রভাবিত হয়। এবং ব্যক্তি দ্রুত ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগে বা অতিরিক্ত ওজন কমাতে বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে, যদি এক্ষেত্রে তার সঙ্গী একই বদভ্যাসটি পরিবর্তন করে ফেলে।

বিবাহিত বা একসঙ্গে বসবাসকারী পঞ্চাশোর্ধ্ব তিন হাজার সাতশ’ বাইশ দম্পতির উপর এ গবেষণা চালানো হয়।

ক্যানসার রিসার্চ ইউকে’র হেলথ রিসার্চ সেন্টার ইউসিএলের পরিচালক ও গবেষণার সহ-লেখক প্রফেসর জন ওয়ার্ডলি বলেন, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন দীর্ঘস্থায়ী রোগে মৃত্যুর বিশ্বব্যাপী একটি অন্যতম কারণ।

তিনি আরও বলেন, জীবনধারণের ক্ষেত্রে প্রধান ঝুঁকি হলো ধূমপান, বাড়তি ওজন, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহন, এবং অ্যালকোহল পান। আর এসব বদাভ্যাসের পরিবর্তন ক্যান্সারসহ অনেক রোগের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

ইইসিএলের এ গবষেণার প্রধান লেখক ডা. সারাহ জ্যাকসন বলেন, নতুন বছরে দ্রুত ধূমপান ত্যাগ,  ব্যায়াম ও অতিরিক্ত ওজন কমাতে পরিকল্পনা করে নেমে পড়ার এখনই সময়। এবং এটি আপনার সঙ্গীর সাথে মিলে করুন, যা আপনার বদভ্যাস পরিত্যাগ ও জীবনযাপনে ইতিবাচক পরিবর্তনের সাফল্য বহুলাংশে বাড়িয়ে দেবে।

ক্যানসার রিসার্চ ইউকে’র হেলথ ইনফরমেশন বিভাগের প্রধান ডা. জুলি সার্প বলেন, জীবনযাপনে পরিবতর্ন সাধন, স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও ক্যানসার ঝুঁকি থেকে রক্ষায় বড় ধরনের সাফল্য আনতে পারে। এবং এ গবেষণায় দেখা গেছে, যখন কোনো দম্পতি একসঙ্গে বদভ্যাস ত্যাগ ও জীবনযাপনের এ ইতিবাচক পরিবর্তনে অংশ নেয়, তখন অনেক বেশি সাফল্য আসে।

সঙ্গীর উপযুক্ত সমর্থন ব্যক্তিকে কিছু ভালো অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করে। যেমন, যদি আপনি ওজন কমাতে চান এবং আপনার কোনো বন্ধু বা সহকর্মীও একই ইচ্ছা পোষণ করে, তবে লাঞ্চের বিরতিতে বা কাজের পরে আপনারা একে অপরকে দৌড় বা সাঁতারে উৎসাহিত করতে পারেন।  

এক্ষেত্রে সঙ্গী বা সহকর্মীর সমর্থন ধূমপানের মতো বদাভ্যাস ত্যাগ করতেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

ধূমপান না করে নিজেকে সুস্থ রাখা, স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা এবং নিজেকে সক্রিয়া রাখা ক্যানসারের যে কোনো ধরনের ঝুঁকি থেকে আপনাকে রক্ষা করবে। আর এজন্য আপনার সঙ্গী, সহকর্মী বা বন্ধু একে অপরকে সব থেকে বেশি উৎসাহী করে তুলতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মনোকথা এর সর্বশেষ

welcome-ad