ঢাকা: মানুষের স্মৃতির ওপর সঙ্গীতের অসাধারণ প্রভাব রয়েছে। এর প্রমাণ খুব সহজেই পাওয়া যায়, আমরা একটি পুরাতন গান শুনলে সেই সময়ের পুরোনো স্মৃতি আমাদের মনে পড়ে।
একটি জার্নালের এক প্রতিবেদনে তারা এ মত প্রকাশ করেন।
মনোবিজ্ঞানী বের্ড ও স্যামসন তাদের গবেষণায় দেখান, মস্তিষ্কে আঘাত পাওয়ার পরে পুরোনো স্মৃতি ফিরে পেতে সঙ্গীত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যে সময়ের স্মৃতি হারিয়ে গেছে মনে হচ্ছে, সমসাময়িক গান শুনলে হারানো স্মৃতি ফিরে আসতে পারে।
পাশাপাশি, স্মৃতির ধারণ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে সঙ্গীত। মনোবিজ্ঞানী অ্যালুরি বলেন, সম্প্রতি কয়েকজন ব্যক্তির ওপর একটি পরীক্ষা চালানো হয়। অংশগ্রহণকারীদের বিটেলস’র গান শোনানো হয়। এতে তাদের কেবল হারানো স্মৃতিই মনে পড়েনি, অনেক বড় আকারে দীর্ঘ সময়ের স্মৃতি ফিরে এসেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, সুর এবং ছন্দই পুরোনো স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
ক্রুমহ্যান্সের মতে, যে গানগুলোকে ক্লাসিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তা দুই প্রজন্ম পেছনের স্মৃতিও ফিরিয়ে এনে দিতে পারে। সাধারণত দেখা যায়, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক স্মৃতি হারিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু গানের সঙ্গে মানুষের স্মৃতি গভীরভাবে আটকে থাকে। তাই বৃদ্ধ বয়সেও দুই প্রজন্ম আগে অর্থাৎ কোনো বৃদ্ধ ব্যক্তির ছেলে বেলার স্মৃতি মনে করিয়ে দিতে পারে।
একইসঙ্গে তারা বলেন, গান বংশ পরম্পরায় আমাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে যায়। যে কারণে পুরোনো কোনো গান পূর্ব নতুন প্রজন্মের একজনের ভেতরে পূর্ব পুরুষের ছায়া এনে দিতে পারে।
ভিন্ন একটি গবেষণায় স্যাডি বলেন, পুরোনো স্মৃতি ফিরে আসার জন্য সুর বা ছন্দ নয় বরং গানের কথাই যথেষ্ঠ।
আরেকটি গবেষণায় মনোবিজ্ঞানীরা এক নারীর কেস স্টাডির উদাহারণ টেনে বলেন, একটি গান ক্রমাগত মাথার ভেতরে বাজছে, অথচ উনি জানেন না বা মনে করতে পারছেন না গানটি কোথায় শুনেছেন বা কিভাবে তার চেনা। এর অর্থ হলো গানটি গভীরভাবে তার মনে গেঁথে রয়েছে।
কেবল তাই নয়, সঙ্গীত ভাষা শিখতে সাহায্য করে। মনোবিজ্ঞানী লুক তার গবেষণায় দেখান, যেকোনো ভাষা শিখতে আমরা যে শব্দ ব্যবহার করি, তা সুর দিয়ে বললে বা সে ভাষার গান গাইলে অনেক দ্রুত আত্মস্থ হয়।
প্রিয় পাঠক, ‘মনোকথা’ আপনাদের পাতা। মনোরোগ নিয়ে যে কোনো মতামত ও আপনার সমস্যার কথা জানাতে পারেন আমাদের। আমরা পর্যায়ক্রমে অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে আপনাদের প্রশ্নের জবাব জানিয়ে দেবো। আপনি চাইলে গোপন রাখা হবে আপনার নাম-পরিচয় এমনি কি ঠিকানাও।
সমস্যার কথা জানানোর সঙ্গে সমস্যার বিস্তারিত বিবরণ, আপনার নাম, বয়স, কোথায় থাকেন, পারিবারিক কাঠামো এবং এজন্য কোনো চিকিৎসা নিচ্ছেন কি না এ বিষয়ে বিস্তারিত আমাদের জানান। শুধুমাত্র সেক্ষেত্রেই সমস্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা জানানো সম্ভব হবে।
এছাড়া মানসিক সমস্যা সংক্রান্ত বা এ বিষয়ে বিশেষ যে কোনো লেখা যে কেউ পাঠিয়ে দিতে পারেন আমাদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৪