একটি শিশু জন্মের পর থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত একেক বয়সে একেক রকম আচরণ করে। আস্তে আস্তে একটু একটু করে অনেক কিছু বুঝতে শেখে।
মানসিক বিকাশ
আট বছর বয়স থেকেই একটি শিশু চারপাশের মানুষ এবং পরিবেশ সম্পর্কে তার আত্মবিশ্বাসী মনোভাব প্রকাশ করা শুরু করে। শিশুটি নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে আরো বেশি আগ্রহ দেখায় এবং চলমান বিষয়ে সে তার মতামত প্রকাশ করতে চায়।
কী বাড়ি, কী স্কুল সব জায়গায়ই ৮ বছর বয়সী বাচ্চারা বন্ধুদের সঙ্গ উপভোগ করে এবং খেলার বিভিন্ন গ্রুপ কিংবা অন্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে যোগ দিতে উৎসাহ বোধ করে। এ বয়সী বাচ্চারা সাধারণত স্কুলে যেতে এবং বন্ধু কিংবা ক্লাসমেটদের সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড করতে পছন্দ করে। তবে বাবা মাকে বাচ্চাদের স্কুলে না যাওয়ার বিভিন্ন কারণ সম্পর্কেও সচেতন থাকেত হবে, যেমন কঠোর শাস্তি কিংবা পড়াশুনার কঠিন কোনো বিষয়।
বন্ধু
এ বয়সী বাচ্চাদের ভেতরে কোনো গ্রুপের সদস্য হওয়ার প্রকৃতিগত প্রবল একটি ইচ্ছা কাজ করে। যদি কিনা এটা কোনো একটি স্যোশাল মিডিয়া কিংবা খেলার টিম হয়। কিন্তু এ ইচ্ছাটা অন্তর্নিহিত থাকে এবং এটা তখনই প্রকাশিত হয় যখন সে তার সমপর্যায়ের কাউকে পায়।
আপনার সন্তানকে সমবয়সীদের সঙ্গে চলার বা সমবয়সী বাচ্চাদের খারাপ দিকগুলো সম্পর্কে সচেতন করুন, যাতে সে সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
আট বছর বয়সেই বাচ্চারা প্রথম সমলিঙ্গের বন্ধুদের দিকে ঝুঁকে পড়তে শুরু করে। অর্থাৎ এ সময় থেকে তারা নিজেদের লিঙ্গের বন্ধু বানাতে উৎসাহিত হয়। সেই সঙ্গে পরিবারের এবং পরিপার্শ্বের কারণেই তাদের ভেতরে এক ধরনের বোধ গড়ে ওঠে যে এই কাজটা ছেলের জন্য এটা মেয়েদের জন্য।
আট বছরের একটা শিশু যদি রাতে ঘুমানোর জন্য বন্ধুর বাড়ি থেকে নিজের বাড়ি ফিরে যেতে চায় তবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আট বছরের অনেক বাচ্চাই মা-বাবা কিংবা পরিবারের অন্য কারও সঙ্গে বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর সময় একসঙ্গে থাকতে চায়। তারা তখনো বন্ধুদের বাসায় রাত কাটানোর জন্য নিজেদের উপযুক্ত ভাবে না।
নৈতিকতা এবং নিয়ম
ধরুন সন্ধ্যায় আপনার বাচ্চাকে পড়াতে বসেছেন, কোনো একটি বিষয় পড়ানো শুরু করতেই হয়তো সে বললো এটা তো এভাবে না, এভাবে হবে, টিচার বলেছে। আপনি হয়তো মনে করবেন সে অবাধ্য হয়ে গেছে। আসলে আপনি শুনে হয়তো খুশিই হবেন যে নৈতিকতা এবং নিয়মানুবর্তিতার মতো বিষয়গুলো এ বয়সেই বাচ্চারা মানতে শুরু করে, কখনো তা অনেক কঠোর ভাবেই। এ বয়সী বাচ্চাদের ভালো-খারাপ , সত্য-মিথ্যা এবং অন্যান্য বিষয়ে ধারণা তৈরি হয়। তবে তা তখনো ততটা স্বচ্ছ নয়।
গিভিং-শেয়ারিং এবং সহানুভূতি
এ বয়সী বাচ্চারা একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্যের মনোভাব কেমন হতে পারে বা সে কেমন ফিল করতে পারে তা বুঝতে পারে। এসময় তারা অন্যের অধীনে থাকতে আরো বেশি দক্ষ হয়ে ওঠে।
যখন একটি শিশু বড় হতে থাকবে এবং সে তার পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে মিশবে তখন তার মধ্যে যেমন স্বার্থপরতা, রূড় আচরণ দেখা যাবে তেমনি অন্যের প্রতি সদয় এবং সহযোগীতামূলক মানসিকতার এক বিচিত্র সমাহার দেখা যাবে।
সঠিক পথ দেখানো এবং ছোট বেলা থেকেই ভালো শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে পরিবার তার সন্তানকে ভালো ব্যবহার এবং তাদের উচ্চ নৈতিকতার বাহক করে গড়ে তুলতে পারেন। আর এ আট বছর এ কারণেই গুরুত্বপূর্ণ যে এ বয়সেই শিশুরা ভালো মন্দের প্রভাব যুক্তি দিয়ে বুঝতে শেখে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৪