ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

মনোকথা

জানান আপনার সমস্যা ও মতামত

ছেলেটি ইন্টেলেকচুয়াল ডিজঅ্যাবিলিটিতে ভুগছে

ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৪
ছেলেটি ইন্টেলেকচুয়াল ডিজঅ্যাবিলিটিতে ভুগছে

আমি আমার এক ছোট ভাইয়ের সমস্যা বলতে চাই। আমি আসলে নিশ্চিত হতে চাই তার কোনো সমস্যা আছে কিনা।

তার বয়স ১৪ । ও যখন আরও ছোট ছিল, অস্বাভাবিক দুষ্টামি করত। কিন্তু তাতে আমরা ওকে শুধু দুষ্ট বাচ্চা মনে করতাম যে বড় হলে ঠিক হয়ে যাবে।

কিন্তু বড় হওয়ার পর তার আচরণ অস্বাভাবিক লাগে। সে সরাসরি কথা বলার সময় তাকায় না। এক কথাই বারবার জিজ্ঞেস করতে থাকে। কোনো প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিতে পারে না। কেউ কথা বলতে আসলে বা তাকে ডাক দিলে সে পালিয়ে যায় বা লুকিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

উল্লেখ্য, যে সে পড়াশোনায় খুবই কাঁচা। সাধারণ জিনিস তাকে ১০ বার বুঝালেও সে বুঝতে পারে না। তার বাড়তি শিক্ষকের ব্যবস্থাও করা হয়। কিন্তু কোনো উন্নতি নেই।

তার মা বাবা খুবই চিন্তিত বিষয়টি নিয়ে । তার ওপর তার তেমন কোনো বন্ধু বান্ধবও নেই। উলটো তার সাথের সবাই তার টিফিন খেয়ে ফেলে এবং তার জিনিসপত্র লুকিয়ে তাকে বিরক্ত করে। যার প্রতিবাদও সে করে না।

তার বয়সি ছেলেদের কথাবার্তা, আচরণের সাথেও তার কোনো মিল নেই। খাওয়া-দাওয়া ,অন্যদের প্রতি ব্যবহারে ,প্রাত্যহিক জীবনের জ্ঞানে তার ম্যাচুরিটি যেন অনেক কম।

এটা কি সময়ের সাথে সাথে ঠিক হয়ে যায়? অনেকের কি ম্যাচুরিটি দেরিতে আসে?

ধন্যবাদ আপনাকে আপনার বিষয়টি তুলে ধরার জন্য।

সমস্যাটির বিষয়ে আরো অনেক কিছু জানার ছিলো। যেমন, ছেলেটির জন্মের সময় কোনো অসুবিধা হয়েছিলো কিনা? ঠিকমতো কথা বলা, হাঁটা, দাঁড়ানো, দাঁত ওঠাসহ বড় হবার লক্ষণগুলো ঠিক ছিলো কিনা?
QUIZ_BN
জন্মের পরপর খিঁচুনী বা এ জাতীয় কোনো অসুখ হয়েছে কিনা, যার ফলে ব্রেইন সেল মরে যায়। তবে, এটা বোঝা গেলো ওর বুদ্ধি সমবয়সী অন্য বাচ্চাদের চেয়ে কম। অন্যদের সাথে মেশার ক্ষমতাও কম আছে। লিখেছেন তার বয়সী ছেলেদের কথাবার্তাও আচরণের সাথে তার কোনো মিল নেই। প্রাত্যহিক জীবনেও ম্যাচুরিটি কম।

উপরের কথা থেকে এটা স্পষ্ট যে, ছেলেটির কোনো না কোনো সমস্যা অবশ্যই আছে। সেটা ভবিষ্যতে ঠিক হবার মতোই হোক কিংবা অপরিবর্তিতই থাকুক। বিষয়টিকে একেবারে স্বাভাবিক ভেবে বসে থাকাটা ঠিক নয়। যত দ্রুত সম্ভব একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ কিংবা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন।

একটা বিষয় জানা জরুরি, এমন সমস্যা অনেক কারণেই হতে পারে। তার কোনোটা সময়মতো সঠিক চিকিৎসা হলে ভালো হয়ে যায়। কোনোটা আবার হয়তো থেকেই যায়। দুই ক্ষেত্রেই চিকিৎসার বিশেষ কিছু নিয়মকানুন ও পদ্ধতি আছে। সময়মতো এবং সঠিক ভাবে সেসব প্রয়োগ করতে পারলে ছেলেটির জন্য ভালোই হবে।

ছেলেটি খুব সম্ভব মেন্টার রিটার্ডেশন বা ইন্টেলেকচুয়াল ডিজঅ্যাবিলিটি সমস্যায় ভুগছে। অটিজম এর একটা ভ্যরাইটি, নাম অ্যাসপারজার্স ডিজিজ সেটিও হতে পারে। যদি ইন্টেলেকচুয়াল ডিজঅ্যাবিলিটি সেটির কারণ বের করে যদি ঠিক করার মতো কারণে হয়, তবে কিন্তু ছেলেটি অনেক ভালো হতে পারে। অনুরোধ করবো দ্রুত কোনো একজন বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন এবং সঠিক করণীয়টি জেনে নিন।

ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব
সহযোগী অধ্যাপক, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মনোকথা এর সর্বশেষ