ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মনোকথা

থেরাপি সবসময় উপকারী নয়!

মনোকথা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩২ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৪
থেরাপি সবসময় উপকারী নয়!

অনেকে বিভিন্ন সমস্যা কাউন্সেলিং বা থেরাপি নিয়ে থাকেন। কিন্তু সেটা যদি ভালো না হয় কিংবা ভুল প্রক্রিয়ায় করা হয় তাহলে উল্টো হিতে-বিপরীতই হতে পারে অর্থাৎ আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতিই করতে পারে।



সম্প্রতি এক গবেষণা শেষেই এমন তথ্য দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
নিয়ে খুব অল্প সংখ্যক গবেষণা হয়েছে, যদিও ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) এককভাবে এ ধরনের প্রচ‍ুরসংখ্যক রোগী পাচ্ছে। কগনিটিভ বিহেভিয়ার (সচেতন আচরণ) থেরাপি বিষণ্ণতা ও উদ্বেগের ক্ষেত্রে মানুষের মনে ওষুধের মতো কাজ করে।  

গবেষণায় জানানো হয়, প্যারি ও তার সহকর্মীরা সেফিল্ড ‌ইউনিভার্সিটির স্কুল অব হেল্থ অ্যান্ড রিলেটেড রিসার্চ (এসসিএইচএআরআর) এবং ডেভেলপমেন্ট অব সাইকোলজির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ডাটা ও থেরাপিস্টদের তালিকা নিয়মিত সংগ্রহ করাতেন। কাউন্সেলিংয়ের আগে ও পরে মানুষের বিষণ্ণতার স্তর কতটুকু ওঠানামা করে তা খুঁজে দেখার চেষ্টা করতেন। সেই সঙ্গে তারা থেরাপিস্ট এবং তাদের কাছে আসা রোগীদের সাক্ষাৎকার দিয়ে এটা ধরার চেষ্টা করতেন যে ভুলটা আসলে কোথায়, কীভাবে এবং কেন! 

যদিও গবেষকরা এ ফলাফলকে সাধারণভাবে দেখছেন এবং এর ফলাফল এখনো পর্যন্ত পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ করেননি, তথাপি বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। বিভিন্ন সাইকো থেরাপির মধ্যে তারা বিভিন্ন ধরনের বিষয় খুঁজে পেয়েছেন।

প্যারি বলেন, কিছু কিছু থেরাপিস্টের রোগীর তালিকায় হতাশাগ্রস্ত মনের রোগীর সংখ্যা প্রচুর। হতে পারে, তাদের সমস্যা আরও প্রকট ছিলো।  

প্যারি ব্যাখ্যা করে বলেন, থেরাপির সময় কারও কারও অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে। কিন্তু তারা যদি থেরাপি না নিতেন তাহলে হয়তো তাদের মৃত্যুও হতে পারে।

তিনি আরও বলেন,  হিতে বিপরীতের বিষয়ে থেরাপিস্ট এবং রোগী উভয়কেই আরও সচেতন হতে হবে। যারা এ ধরনের বিপদে আক্রান্ত তাদের আরও বেশি সহযোগিতা প্রয়োজন।

গবেষণায় গতিশীলতার জন্য প্যারির দলটি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতায় প্রচারণা চালানোর কাজে থাকা একটি ওয়েবসাইটের সহযোগিতা নেয়।

জনসচেতনতামূলক ওয়েবসাইটটির প্রতিবেদনে বলা হয়, কাউন্সেলিং কার্যকরী হয়। তবে  আমরা বোঝার চেষ্টা করছি কোন পরিস্থিতিতে তা ভুল পথে যায়।

চিকিৎসকদের ‘ভ্রান্ত আচরণ’ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওয়েবসাইটটি। থেরাপিস্টরা তাদের রোগীদের বিশ্বাসের অপব্যবহার কীভাবে করে এবং কী নিম্নমানের চিকিৎসা দেয় এ বিষয়টি সে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়।

সেখানে উল্লেখ করা হয়, রোগীরা সবসময়ই তাদের (থেরাপিস্টদের) ভুল চিকিৎসার ঝুঁকিতে থাকেন।

প্যারি বলেন, আমরা তাদের (রোগীদের) সঙ্গে আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে কথা বলেছি। তাদের মধ্যে খুব কমসংখ্যক মানুষই এমন ব্যক্তির হাতে পড়েছেন যারা (চিকিৎসকরা) রোগীর সঙ্গে ভালো আচরণ করেন না।

তিনি বলেন, আমরা খুব গভীরভাবে এ বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করেছি যে, কীভাবে একটি পেশার মধ্যে সে বেড়ে ওঠে এবং পরে সে বিষয়গুলোই পর্যবেক্ষণ করে।

তিনি জানান, একজন বৈমানিক বলেন, আমরা যদি দেখি যে, কেউ একজন উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় পড়েছে, তবে আমরা সবাই এর জন্য উদ্বিগ্ন থাকি। আমরা তখন বোঝার বা জানার চেষ্টা করি, কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটলো এবং এর আরও বিজ্ঞানসম্মত কারণ খোঁজার চেষ্টা করি। আরো সতর্ক হতে চেষ্টা করি যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের বড় কোনো ঘটনা না ঘটে।          

ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, থেরাপি সবসময় সবার ক্ষেত্রে কাজ করে না।   তারা বেশ কয়েকজন রোগীর কথা উদ্ধৃত (কোট) করেছেন এখানে।

প্রতিবেদনে প্রকাশিত ‘উদ্ধৃতি’তে দেখা যায়, এক ব্যক্তি বলেন, আমি উল্লেখ করার মতো কোনো ধরনের ফল ছাড়াই থেরাপি গ্রহণ অবস্থা থেকে বের হয়ে এসেছিলাম।

অন্য আরেকজন বলেন, আমি মনে করতে শুরু করেছিলাম আমি একটা ভুল করছি যার কারণে এটা কাজ করছে না।

আরেক রোগী বলেন, থেরাপিস্ট শব্দগতভাবে আমার চরিত্রে আক্রমণ করেছেন। পরের সপ্তাহে তিনি যদিও আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তিনি অনুযোগের সময় ফেটে পড়ছিলেন।

এসব বিষয়ে কীভাবে অভিযোগ জানাতে হবে সে ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছে ওয়েবসাইটটি।

বাংলাদেশ সময়: ০১২২ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মনোকথা এর সর্বশেষ