ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মনোকথা

বিশেষ শক্তিতে সন্তানকে চেনেন মা

মনোকথা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২০ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৪
বিশেষ শক্তিতে সন্তানকে চেনেন মা ছবি: প্রতীকী

বাবা, চাচি, ভাই-বোন, দাদা-দাদি এমনকি সৎ বাবা-মাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে একটি শিশুর জন্য। কিন্তু মায়ের বিষয়টি একদমই আলাদা।



সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা মা-সন্তানের পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য খুঁজে পেয়েছেন। যখন একটি শিশু পরিষ্কারভাবে একাধিক সম্পর্ক বুঝতে থাকে, তখনও মায়ের প্রতি তার আলাদা একটি আকর্ষণ থাকে।
01_1
জার্মান মনোস্তাত্বিক কার্ল জুং লিখেছেন, একটি শিশুর প্রথম শিক্ষা আসে মায়ের কাছে থেকে। অর্থাৎ আত্মবোধ জন্ম নেওয়ার আগেই একটি শিশু বোঝে ‘মাম’ বিষয়টিকে। প্রায় প্রতিটি পরিচিত সংস্কৃতিতেই মা শব্দটি কাছাকাছি- মা, মম, মাম্মি, মামা ইত্যাদি। জন্ম নেওয়ার পর থেকে পরিচর্যার সময় বারবার ‘মা’ শব্দটি শুনতে শুনতে গড়ে ওঠে এই মৌলিক সম্পর্ক।

সম্পর্কে আরো একটি মৌলিক বিষয় ঘটে মা’দের মধ্যে। যার মূল বিষয় হলো ‘গন্ধ’। একটি গবেষণায় দেখা গেছে ৯০ শতাংশের বেশি মা সন্তানের সঙ্গে ১০ মিনিট কাটানোর পরে গন্ধেই সন্তানদের চিনতে পারেন। সময় বাড়িয়ে এক ঘণ্টা করলে এই সংখ্যা শত ভাগ হয়ে যায়। শিশুও তার মাকে গন্ধ দিয়েই চেনার ক্ষমতা রাখে।

ভিন্ন একটি গবেষণায় দেখা গেছে যখন শিশু তার মায়ের শরীর থেকে খাবার গ্রহণ করে তখন তারা শান্ত হয় এবং কম যন্ত্রণা অনুভব করে। পরিচর্যার সময় শরীর তার শক্তিশালী অক্সিটসিন হরমোন (love hormone) নিঃসরণ করে। মূলত যে কারণে মা এবং সন্তান একে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়।  
সন্তান জন্ম দেওয়ার পরে মায়ের মস্তিস্কের বিভিন্ন জায়গায় পরিবর্তন দেখা দেয় এবং প্রাকৃতিকভাবেই মা সন্তানের প্রতি স্নেহময়ী হয়ে ওঠেন। সন্তান এবং মায়ের এই সম্পর্ক কতটা গাঢ় হবে তা নির্ভর করে শিশুকালীন বিকাশের ওপর। প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থাতেও যার প্রভাব থাকে।
2_22_22_2
তবে এ সব কিছুই সুন্দর ভাবে সম্ভব যদি মা ও শিশু সুস্থ থাকে। মা সুস্থ থাকলেই একটি সুস্থ সন্তানের জন্ম হবে। আর একটি শিশুর সুন্দর ও সুস্থ মানসিকতা গঠনে একজন মায়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

শিশু ও মাতৃমৃত্যু হ্রাসে জরুরি প্রসূতি সেবা, মিডওয়াইফারি প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়োগ প্রদান, গরিব ও দুস্থ মায়েদের জন্য মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কিম, কমিউনিটি ভিত্তিক স্কিলড বার্থ অ্যাটেনডেন্ট, পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম, ইপিআইসহ ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সরকার।

সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিও ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হ্রাস এবং মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশু স্বাস্থ্যের বিষয়ে প্রভুত অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে।

এরই মধ্যে মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাসে উন্নীত করা হয়েছে। এর ফলে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হার দ্রুত হ্রাস পেয়েছে। এ সাফল্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এজন্য জাতিসংঘ এমডিজি পুরস্কার ও সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে বাংলাদেশ।

সুস্থ থাক মা আর সুন্দর হোক শিশুর মানসিক বিকাশ। মা ও শিশুর ‌আত্মিক বিকাশ অটুট থাক মুত্যুর আগে পর্যন্ত। স্নেহ আর নির্ভরতার অনন্য মেলবন্ধন বজায় থাক মা আর প্রতিটি সন্তানের।    

বাংলাদেশ সময়: ১০১৮ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মনোকথা এর সর্বশেষ