ঢাকা: ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, আশাবাদ, প্রত্যাশা, উদ্যমতা জীবনের সবকিছুই সহজ করে তোলে। যখন আপনি আপনার কর্মক্ষেত্র, ব্যবসায় বা অন্য কোনো ব্যাপারে কর্মদক্ষতার কমতি দেখবেন তখন ইতিবাচক মনোভাব আপনার জন্য ‘সুপারচার্জ’এর মতো কাজ করবে।
এটা কখনো স্বতঃস্ফূর্তভাবে গড়ে ওঠেনা। এর জন্য প্রয়োজন কিছুটা চেষ্টা ও সদিচ্ছার মিলিত প্রচেষ্টা। তবে কিছু উপায় আছে, যেগুলো অনুসরণ করলে আপনি যে পরিস্থিতিতে যেখানেই থাকেন না কেন সর্বদা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে পারবেন।
স্মরণ রাখুন আপনি আপনার মনোভাবের নিয়ন্ত্রক
আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বা মনোভাবের প্রকাশ আপনার সামনে সংগঠিত নিত্যদিনের বিভিন্ন ঘটনা থেকে উদ্ভূত হয়না, এটি বরং আপনি নিজে কি সিন্ধান্ত নিচ্ছেন সেটি থেকে উদ্ভূত হয়।
যেমন ধরুন, কেউ একজন তার পরিচিত তিনজন মানুষকে একটি করে স্টিলের ব্রেসলেট উপহার দিল। প্রথম ব্যক্তি চিন্তা করলো এটি একটু মূল্যহীন বস্তু ছাড়া অন্য কিছু নয়, দ্বিতীয় জন ভাবলো এটি একটা অল্প দামের জিনিস। অন্যদিকে, তৃতীয় ব্যক্তি মনে করলো এটি প্রকৃতপক্ষে একটি অতুলনীয় বস্তু।
প্রতিটি ক্ষেত্রেই একজন ব্যক্তির সিদ্ধান্ত নির্ভর করে কীভাবে একটি ঘটনা ঘটছে, এ বিষয়টি ব্যক্তির নিজস্ব ব্যাখ্যার ওপর এবং এই মানসিকতা নিয়ন্ত্রণ করবে আপনার দৃষ্টিভঙ্গির ওপর।
যেকোনো ঘটনাকে ইতিবাচক উপায়ে গ্রহণ ও বিশ্বাস করুন
জ়ীবন ও কর্ম সম্পর্কে আপনার বিশ্বাস এবং বিধি-নিষেধের মাত্রা নির্ধারণ করবে আপনার সম্মুখে সংঘঠিত ঘটনাগুলো কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন তার ওপর। এই ভিত্তিতে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হবে। নিজের মধ্যে দৃঢ় বিশ্বাস তৈরির সিদ্ধান্ত নিন, যেটি খারাপ মনোভাব তৈরির চেয়ে ভালো মনোভাব তৈরি করবে।
উদাহরণসরূপ, বাসা থেকে বের হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছোটখাট একটা দুঃসংবাদ পেলেন, সেই মুহূর্তে অন্যরা সাধারণত চিন্তা করবে দিনটা হয়তোবা মাটি হয়ে গেল। কিন্তু আপানি চিন্তা করুন প্রতিটি ফোন কল একটি অপরটি হতে আলাদা এবং পরবর্তী সংবাদ পূর্বেরটি থেকে নিশ্চয়ই ভালো হবে।
ইতিবাচক চিন্তার একটি "লাইব্রেরি" তৈরি করুন
প্রতিদিন সকালে কমপক্ষে ১৫ মিনিট সময় ব্যয় করে কিছু উৎসাহমূলক ও প্রেরণামূলক বিষয় পড়ুন, দেখুন অথবা শুনুন। আপনি নিয়মিত এ কাজটি করার ফলে আপনার চিন্তা ও অনুভূতি শক্তিগুলো এমন কি আপনার মনও সর্বদা প্রস্তুত থাকবে যদিও কোনো ঘটনা বা কাজ আপনি ঠিক যেভাবে পছন্দ করেন বা চেয়েছেন সেভাবে সংঘঠিত না হয়।
তোষামেদকারী ও অভিযোগকারীদের উপেক্ষা করুন
তোষামেদকারী ও অভিযোগকারীরা পৃথিবীকে দেখে রঙিন চশমার মধ্য দিয়ে। তারা কোনো কিছু ভালো না করে বরং ভুল বিষয়ে বেশি কথা বলে। আর সর্বোপরি অভিযোগকারী ব্যক্তি অন্যের খুশি এবং সন্তুষ্ট সহ্য করতে পারে না।
আপনি যদি কখনো কোনো অভিযোগকারীকে আপানার অর্জিত কোনো সাফল্য সম্পর্কে বলেন সে আপনাকে অভিনন্দন জানাবে ঠিকই, কিন্তু তা হবে অন্তঃসারশূন্য। আর আপনি এটি অনুধাবন করতে পারবেন যখন তাকে আপনি আপনার দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থার কথা বলবেন।
বেশি বেশি ইতিবাচক শব্দ ব্যবহার করুন
আপনার মুখ থেকে উচ্চারিত শব্দগুলো শুধুমাত্র আপনার মস্তিষ্কে কি আছে তার প্রতিফলন নয়, বরং এগুলো হচ্ছে আপনার মস্তিষ্ক কীভাবে চিন্তা-ভাবনা করে সেগুলোকে প্রতিফলিত করে। সুতরাং, আপনি যদি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে চান আপনাকে অবশ্যই নিয়মিতভাবে ইতিবাচক শব্দ ব্যবহার করতে হবে।
ধরুন, কোনো এক কারণে আপনি রেগে আছেন বা বিচলিত বোধ করছেন, সেই মুহূর্ত আবেগি এবং নিরপেক্ষ শব্দ ব্যবহার করুন। ‘আমি এখন রেগে আছি’ বা ‘আমি এখন রাগান্বিত’ বাক্যের বদলে বলুন ‘আমি এখন কিছুটা বিরক্ত।
বাংলাদেশ সময়: ০৪০৪ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৪