ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

মনোকথা

পেনিক ডিজঅর্ডারট!

ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৩
পেনিক ডিজঅর্ডারট!

ভাইয়া সালাম নিবেন। আমি বাংলানিউজে আপনার ‘পেনিক ডিজঅর্ডার’ বিষয়টি সম্পর্কে পড়ে আশাহত হই।

আজ দু’বছর হতে চলছে আমার ‘পেনিক ডিজঅর্ডার’ চলছে। আমার বয়স ৩৩। এখানে অনেক বড় বড় ডাক্তার দেখিয়েছি। কিন্তু ডাক্তার দেখে বলেছে কোনো রোগ নেই। আমাকে ট্রিপটিন ২৫ রাতে একটা, সঙ্গে ইনডেভার ১০ সকালে ও রাতে একটা করে খেতে বললেও কোনো উপকার পাইনি। গত কোরবানি ঈদে প্রেসার ধরা পড়ে, তখন ডাক্তার রাতে একটা করে ওসারটিল ৫০ ও ট্রিপটিন ২৫ খেতে বলে এবং ইনডেভারটা বন্ধ করতে বলে।

পেনিক ডিজঅডার্র প্রতিনিয়ত জ্বালা দিচ্ছে। হার্ট অল্পতে দুর্বল। অল্পতে ক্লান্তি, বুক ধরফড়ানি, খুব ভয় লাগে। টেনশন হলে ঘন ঘন পায়খানা প্রসাব হয়, পেটে গ্যাস জমে। আমি আপনাকে নিয়ে আশাবাদি, আমি ভাল হব। আপনি ভালমতো ইমেইল পরে প্রেশক্রিপশন করে কি ওষুধ খেলে ভাল হব ফিরতি ইমেইলে জানাবেন। আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, আপনি ওষুধ দিয়ে উপকার করলে আল্লার কাছে আপনার জন্য দোওয়া করব। আপনি আমাকে মানসিক যাতনা থেকে রেহাই দিন। আল্লাহ আপনার সহায় হউন।

উত্তর: আপনাকে ধন্যবাদ, বাংলানিউজ পড়ার জন্য এবং প্রশ্ন করার জন্য। শুরুতেই অন্য একটি কথা দিয়ে শুরু করি। ডাক্তার কত বড় সেটা বিষয় নয়। ডাক্তার যত বড়ই হোন না কেন, সঠিক ডাক্তার না দেখালে তার চিকিৎসা সঠিক ভাবে হবে না। মনের রোগের জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞকেই দেখাতে হবে।

আপনি লেখা থেকে বুঝে নিয়েছেন আপনার ‘পেনিক ডিজঅর্ডার’ হয়েছে। কিন্তু এক জায়গায় আপনি লিখেছেন, অল্পতেই আপনি দুর্বল হয়ে যান এবং ক্লান্তি লাগে। এটা অন্য কোনো সমস্যার জন্য হয় কিনা সেটাও দেখে নিতে হবে। আমি আপনাকে বলবো প্রথমে একজন হার্টের ডাক্তার দেখাতে। অথবা কমপক্ষে হার্টের একটা ইকোকার্ডিওগ্রাম করাতে। যদি সেখানে কোনো সমস্যা না পাওয়া যায় তবেই পেনিক ডিজঅর্ডারের চিকিৎসা নিতে হবে।

আপনার ডায়াবেটিস বা অন্য কোনো রোগ আছে কিনা বোঝা গেলো না। যা হোক আপনি পেনিক ডিজঅর্ডারের আগের লেখাটি আবার ভালো করে পড়বেন। সেখানকার কথাগুলো ভালো করে খেয়াল করার চেষ্টা করবেন। আপাতত আপনি ট্যবলেট সিটালোপ্রাম (আরপোলাক্স) ২০ মি.গ্রা. সকালে একটা এবং ট্যাবলেট ক্লোনাজিপাম (রিভোট্রিল) .৫মি.গ্রা., সকালে অর্ধেক ও রাতে অর্ধেক শুরু করতে পারেন।

মনে রাখতে হবে, শুধু ওষুধ চালিয়ে গেলেই হবে না। সময়মতো আবার ফলোআপ কর‍াতে হবে। তিন সপ্তাহ পর আবার কারো সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।

আর একটা কথা পেনিক ডিজঅর্ডার শুধু ওষুধে পুরোপুরি নাও সারতে পারে। সঙ্গে প্রয়োজনীয় কিছু পরামর্শ দরকার হয়। কখনো কখনো সঙ্গে সাইকোথেরাপিও দরকার হয়। যেটি আরেকটি চিকিৎসা পদ্ধতি। দুটি এক সঙ্গে হলে খুবই ভালো। কিন্তু আপনি যেহেতু দূরে থাকেন। কমপক্ষে সময় মতো কোনো একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন।

প্রিয় পাঠক, ‘মনোকথা’ আপনাদের পাতা। মনোরোগ নিয়ে যে কোনো মতামত ও আপনার সমস্যার কথা জানাতে পারেন আমাদের। আমরা পর্যায়ক্রমে অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে আপনাদের প্রশ্নের জবাব জানিয়ে দেবো। আপনি চাইলে গোপন রাখা হবে আপনার নাম-পরিচয় এমনি কি ঠিকানাও।

আপনার সমস্যার কথা জানানোর সঙ্গে সমস্যার বিস্তারিত বিবরণ, আপনার নাম, বয়স, কোথায় থাকেন, পারিবারিক কাঠামো এবং এজন্য কোনো চিকিৎসা নিচ্ছেন কি না এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান। শুধুমাত্র সেক্ষেত্রেই আপনার সমস্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা জানানো সম্ভব হবে।

আপনার সমস্যা, মতামত বা পরামর্শ জানাতে আমাদের ই মেইল করুন-[email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মনোকথা এর সর্বশেষ