ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়া থেকে মফিজুল সাদিক

নীল জলরাশি, পাহাড় ও সেতু ঘেরা ব্যস্ত পেনাং

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৫
নীল জলরাশি, পাহাড় ও সেতু ঘেরা ব্যস্ত পেনাং ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

Mofizul_sadikপেনাং(মালয়েশিয়া) থেকে: মালয়েশিয়ার প্রধান ও এশিয়ার বিখ্যাত দ্বীপ পেনাং। নীল জলরাশি, পাহাড় ও বিশাল সেতুর বন্ধনে আবদ্ধ পেনাং দেখতে কুয়ালালামপুর থেকে বুধবার রাত ১২টায় রওনা হলাম।

কুয়ালালামপুর থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টার দীর্ঘ যাত্রা শেষে পৌঁছালাম পেনাংয়ে। বাসের ভাড়া ৪০ রিঙ্গিত। সূর্য উঠার আগেই পৌঁছে গেলাম পেনাং বাস স্টেশনে।
 
পৌঁছেই পড়লাম বৃষ্টির বাগড়ায়। অবশ্য এটি এখানকার নিত্যদিনের ঘটনা। বাস স্টেশন থেকে ট্যাক্সি ক্যাবের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম কমতা টেসকোতে। সূর্য না উঠলেও তীব্র জ্যাম দেখা গেলো পেনাংয়ে। জ্যাম সম্পর্কে জানতে চাইলে মালয় ট্যাক্সি চালক এহতেসাম বললেন, দোয়াপুনা আমপাদজাম তারাসেনাং পেনাং, তার কথায় বুঝতে পারলাম পেনাং সব সময় ব্যস্ত থাকে। সকালে বাচ্চাদের স্কুল যাওয়া থেকে শুরু করে বন্দরে সব সময় পণ্য আমদানি ও রফতানির কারণে পেনাং ব্যস্ত থাকে।
 
পেনাং দুই ভাগে বিভক্ত। একটি পেনাং, অন্যটি পুলাউ পেনাং। পেনাং এর চারপাশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জাকজমকপূর্ণ ঐতিহ্য এবং প্রাচুর্য দেখেই মুগ্ধ হলাম। পেনাংয়ের অদূরে বিশাল পাহাড়ের সবুজ ছায়া পড়েছে নীল জলরাশিতে। দেখে মনে হচ্ছে, নীল জলরাশি, পাহাড় ও বিশাল সেতুর মায়ায় আবদ্ধ পেনাং। পুলাউ পেনাং থেকে ১ দশমিক ২০ রিঙ্গিত ফেরি ভাড়া দিয়ে সমুদ্র অতিক্রম করে পৌঁছালাম পেনাং।
 
খুব সকালে পেনাং যাওয়ার জন্য হাজারো মানুষের ভিড়। প্রতি ১০ মিনিট পর পর পুলাউ পেনাং থেকে ছেড়ে যাচ্ছে ফেরি। মানুষ, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল পারাপারের জন্য তৈরি করা হয়েছে আলাদা সারি।
 
গভীর সমুদ্রে বিশাল জেটি তৈরি করা হয়েছে। এখানে আমদানি পণ্য খালাস করা হচ্ছে। বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পণ্য খালাস কার্যক্রম দুই ভাগে বিভক্ত। তেল ও খাদ্য সামগ্রীসহ কন্টেইনারের জন্য আলাদা ভাগ। পেনাং বন্দরে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অর্ধশতাধিক স্টিলের সাইলো নির্মাণ করা হয়েছে।
 
গভীর সমুদ্র বন্দর থেকে জেটির মাধ্যমে পণ্য খালাসের জন্য ভূ-খণ্ড থেকে গভীর সমুদ্রে যেন আরও একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। বড় বড় ক্রেনের মাধ্যমে খালাস করা হচ্ছে পণ্য।
 
অস্ট্রেলিয়া, চায়না, সিঙ্গাপুরের কয়েকটি বড় বড় জাহাজ দেখা গেলো। পেনাং বন্দরের কন্টেইনার খালাস স্থানের কাছে রেল ও উন্নত মানের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা দেখা গেছে। বিশাল সেতুকে কেন্দ্র করে নির্মাণাধীন অসংখ্য সড়ক ও উড়াল সেতু দেখে অনেকেই গোলক ধাঁধাঁয় পড়ে যেতে পারেন।
 
তবে কুয়ালালামপুর থেকে রেল মাধ্যমে পেনাং বন্দরে এলে সেতু পার হতে হবে না।
 
পুলাউ পেনাংও নানা কাজে ব্যস্ত। এখানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের ইমিগ্রেশন ডেস্ক। এছাড়া ৫০০ রিঙ্গিত খরচ করলে এখান থেকে তিন দিন দুই রাতের জন্য প্রমোদ তরীতে উঠা যাবে।
 
তবে পেনাং থেকে পুলাউ পেনাং আরও দর্শনীয়। এখানে রয়েছে পাহাড় ঘেরা মনোরম পরিবেশ।   প্রচুর রেস্তোরাঁ, রাস্তার পাশের ক্যাফে, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর,অকৃত্রিম সমুদ্র সৈকত ও অসংখ্য বাঙালি মার্কেট।
 
পুলাউ পেনাংয়ে ওয়াত চায়ামাংকালারাম বৌদ্ধ মন্দির সবার নজর কাড়বে। এটি একদিকে হেলানো।
 
পেনাং এর রাষ্ট্রীয় মসজিদ গ্রীনলেন বন্দরের কাছেই। এটা মালয়েশিয়ার সবচেয়ে জমকালো মসজিদ হিসেবে পরিচিত। মসজিদে প্রার্থনা হলে একটি ঝাড়বাতি রয়েছে যার মাপ বিশ ফুট বাই ষোল ফুট।
 
পুলাউ পেনাংয়ে ৬৪ তলা বিশাল একটি গোলাকার শপিং মল রয়েছে। এখানে পছন্দমতো পণ্য কেনা যাবে।
 
পেনাং পাহাড় স্থানীয় লোকজন ও পর্যটকদের জনপ্রিয় মিলনস্থান। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮৩০ মিটার উঁচু এই পাহাড়ে তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সে. পর্যন্ত নেমে আসে এবং এখান থেকে জর্জ টাউনের সুন্দর চলমান দৃশ্য ও মালয় উপদ্বীপের উপকূলভূমির দৃশ্য দেখা যায়।

জর্জ টাউন থেকে পেনাং সমুদ্র বন্দরকে বিদায় দেয়ার সময় ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ নবনির্মিত দীর্ঘ সেতুর পথটুকু যেন চোখের পলকেই ফুরিয়ে যায়। কারণ এই পথটুকু পাড়ি দেয়ার সময় বার বার ফিরে দেখতে ইচ্ছে করবে পেনাং বন্দরকে। প্রকৃতির অপরূপ  সৌন্দর্য ভরা পেনাং সমুদ্র বন্দর। ব্যস্ততম এই সমুদ্র বন্দর যেন অপরূপ রূপের ডালি মেলে ধরেছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫  ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৫
এমআইএস/জেডএম

** কুয়ালালামপুরের গাবতলী-সায়েদাবাদ!
** চলছে রেড টি শার্ট র‌্যালি, বাংলাদেশি সাবধান
** কৃষিক্ষেতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে বাংলাদেশি শ্রমিক!
** কবর দেয়া ও কাপড় পরা শিখছে ওরা!
** কোরবানির গরু বছরে একবারই খোঁয়াড়ে আসে
** সুন্দর আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে সঙ্গী মেঘদল
** ঈদ উপলক্ষে মালয়েশিয়ায় হোটেল মার্কে ৩০ শতাংশ ছাড়
** এয়ার এশিয়ায় কম খরচে মালয়েশিয়া

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ