ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

লাইফস্টাইল

সন্তান জন্মের আগে সঠিক প্রস্তুতি

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২১
সন্তান জন্মের আগে সঠিক প্রস্তুতি

যদি আপনাকে জিজ্ঞাস করা হয় পৃথিবীতে আপনার সবচেয়ে প্রিয় জিনিসটি কী? আমার বিশ্বাস কোনো কালবিলম্ব না করেই আপনি যা উত্তর দেবেন তা হলো আপনার আদরের সন্তান।  

আমাদের সবারই কাম্য আমাদের সন্তান যেন সুস্থ সবলভাবে জন্মগ্রহণ করে।

কিন্তু সন্তান জন্মের আগে সঠিক প্রস্তুতি না নেওয়ার ফলে হয়তো সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

যেহেতু মা সন্তানকে গর্ভে ধারণ করেন, তাই একজন সুস্থ সবল মা একটি সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়ার অন্যতম পূর্ব শর্ত। এজন্য যখনই কোনো মা সন্তান নেওয়ার কথা চিন্তা করবেন তার অন্তত ছয় মাস আগে থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত। এ সময় থেকেই পুষ্টিকর ও সুষম খাবারের প্রতি তার গুরুত্ব দিতে হবে। মনে রাখা উচিত, মা যদি পুষ্টিহীনতায় ভোগেন তাহলে বাড়ন্ত গর্ভের সন্তানটিও প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হবে, যা তার মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ব্যাহত করবে।

গর্ভে আসা থেকে শুরু করে প্রসব পর্যন্ত সময়টিকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।

*গঠন পর্ব (১-১২ সপ্তাহ)
*বর্ধন পর্ব (১৩-২৮ সপ্তাহ)
*পূর্ণতা পর্ব (২৯-৪০ সপ্তাহ)

এই তিন পর্বের মধ্যে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বদেন ১ম এবং ২য় পর্বটিকে। গঠন পর্বে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সবচেয়ে বেশি। এজন্য এই সময়ে মায়েদের অনেক সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।

এই তিন পর্বে কিছু বিষয় মেনে চললে আপনার গর্ভের সন্তানটির যথাযথ বিকাশ নিশ্চিত করতে পারেন।

পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ করুন। যাতে খাবারটি হয় সুষম অর্থাৎ শর্করা, আমিষ, স্নেহ, ভিটামিন, খনিজ লবণ ইত্যাদি বিদ্যমান থাকে। খাদ্য গ্রহণের সময় তিনবেলা থেকে বাড়িয়ে পাঁচবেলা করুন।
    
খাবার থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি না পেলে কিছু বিকল্প ওষুধ যেমন- আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, ফলিক এসিড ইত্যাদি ট্যাবলেট গ্রহণ করতে পারেন। এগুলোর মধ্যে ফলিক এসিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এটি আপনার সন্তানের মস্তিষ্কের বিকাশে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে।
    
যে কোনো ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে (যেমন: ব্যথা, বমি বন্ধের ওষুধ) বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতিত কোনো ওষুধই সেবন করবেন না। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে সব ওষুধই সন্তানের বিকলাঙ্গতায় ভূমিকা রাখে।

পরিমিত বিশ্রাম গ্রহণ করুন। তারাতারি ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করুন।
    
দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকুন। মনে রাখবেন মা যদি হাসি-খুশী থাকে তাহলে সন্তানের বিকাশ ভালো হয়।
    
একান্ত প্রয়োজন ছাড়া আল্ট্রাসনোগ্রাফি করবেন না, কারণ এর ক্ষতিকর রশ্মি সন্তানের শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে।

দূরের পথে যতায়াত করা থেকে বিরত থাকুন, মনে রাখবেন প্রথম তিন মাস যাতায়াত করা গর্ভপাতের সবচেয়ে বড় কারণ।

প্রতিদিন একই রকম খাবার না খেয়ে কিছুটা ভিন্নতা আনতে পারেন, তবে খাবারের পুষ্টিমান যেন অক্ষুন্ন থাকে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।

কিছু কিছু খাবার গর্ভপাতে ভূমিকা রাখে (যেমন: কাঁচা পেপে) চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে সেগুলো পরিহার করুন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন এবং আরামদায়ক কাপড় পরিধান করুন।
গর্ভধারণের শেষ পর্বে যেকোনো জটিলতা মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকুন।

সর্বোপরি পরিবারের সবার সহযোগীতায় সঠিক নিয়ম মেনে চলার মাধ্যমে সুস্থ সবলভাবে আপনার ফুটফুটে সন্তানটি পৃথিবীর আলো দেখুক এটিই সবার কাম্য। তাই আপনার স্বপ্নপূরণের প্রস্তুতিতে যেন কোনো ঘাটতি না ঘটে এটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব স্বামী-স্ত্রীসহ পরিবারের সবার ওপর।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২১
এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।