ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

লাইফস্টাইল

করোনায় হৃদরোগ ও উচ্চরক্তচাপ রোগীদের ঝুঁকি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২০
করোনায় হৃদরোগ ও উচ্চরক্তচাপ রোগীদের ঝুঁকি

বিশ্বে প্রতিবছর যত মানুষ মারা যায় তার ৩১ শতাংশ বা প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ মারা যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। কিন্তু করোনার বা কোভিড-১৯ ভাইরাসের কারণে বর্তমান পরিস্থিতিতে সকল পরিসংখ্যান হার মেনে যেতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।

ইতোমধ্যে গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, এজমা বা ফুসফুসের সমস্যা, ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সারের রোগীদের করোনার কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি।

সাধারণত ৬০ বছর বয়সের চেয়ে বেশি বয়স্ক ব্যক্তিদের এবং হৃদরোগ ও ফুসফুসের রোগ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি থাকে, তবে এখন মাঝবয়সী এমনকি তরুণরাও উল্লেখযোগ্যহারে আক্রান্ত হচ্ছে।

হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের অনেকক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে কাজেই তারা সাবধানে থাকবেন।

করোনা ভাইরাসের লক্ষণগুলো হলো:

•       জ্বর

•       হাঁচি ও কাশি

•       গলা ব্যথা

•       মাথা ব্যথা

•       শ্বাসকষ্ট

•       অবসাদভাব

•       এবং কারো কারো ক্ষেত্রে সর্দি ও ডায়রিয়ার উপসর্গও থাকতে পারে

হৃদরোগ ও উচ্চরক্তচাপ রোগীদের ঝুঁকি কতটুকু

চিহ্নিতও হৃদরোগ ও উচ্চরক্তচাপ রোগীকে আরও বেশি যত্নবান হতে হবে। এই ধরনের রোগীদের জন্য "নিরাময়ের চেয়ে প্রতিকার ভাল" প্রবাদটি খুবই প্রযোজ্য। যেকোনো ধরনের হৃদরোগী বিশেষ করে হার্ট ফেইলিওর বা ভাল্বে সমস্যা আছে অথবা পেসমেকার লাগানো রয়েছে বা ভাল্ব রিপ্লেস্মেন্ট করা হয়েছে এমন রোগীদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। আমি হৃদরোগীদের এই রোগের সংক্রমণ এড়াতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলো শক্তভাবে অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করবো।

করোনায় উচ্চরক্তচাপের মেডিসিন কি ক্ষতিকর

অনেকের মধ্ একটা শঙ্কা কাজ করছে যে, উচ্চ রক্তচাপের মেডিসিন এই পরিস্থিতিতে নিরাপদ কিনা? উচ্চ রক্তচাপের মেডিসিন সাধারণত দুটি গ্রুপের অন্তর্গত ১) Angiotensin-Converting Enzyme Inhibitors (ACEI) যেমন ramipril, perindopril, lisinopril, ইত্যাদি  এবং ২)  Angiotensin Receptor Blockers (ARBs) যেমন losartan, telmisartan, olmesartan, azilsartan ইত্যাদি। মানুষের ওপর গবেষণায় এখন পর্যন্ত ক্ষতিকর কোনো প্রভাব পরিলক্ষিত হয়নি বিধায় আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজিস্টস ও ইউরোপীয়ান সোসাইটি অব হাইপারটেনশন মতো স্বনামধন্য সোসাইটিগুলো জোর দিয়ে বলেছে যে এসব গ্রুপের সেবন করা যাবে।

 

হৃদরোগীদের জন্য আমার পরামর্শ থাকবে, ব্যায়াম ও ডায়েট প্লানে কোনো পরিবর্তন আনবেন না। এখন বাহিরে যাওয়া উচিত নয়, তাই ঘরেই ব্যায়াম অব্যাহত রাখুন। চিকিৎসকের নির্দেশিত ওষুধ সেবনে কোনো ধরনের গাফিলতি করবেন না। সামান্য অসুস্থতায়  চিন্তিত হবেন না, চিকিৎসকের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ সম্ভব না হলে ফোনে যোগাযোগ করে পরামর্শ নেওয়া নেওয়া যেতে পারে। রোগীর মারাত্মক অসুস্থতা বা হার্ট অ্যাটাকের মতো লক্ষণ দেখা দিলে কিংবা শ্বাসকষ্ট হলে অথবা জ্ঞান হারিয়ে ফেলার মতো অবস্থা হলে হার্টের চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে এমন হাসপাতালে রোগীকে দ্রুততার সাথে নিয়ে যেতে হবে।

হৃদরোগীরা অথবা যে কেউ করোনা সংক্রান্ত কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে  আমাদের হটলাইন ০৯৬৭৮ ৬০ ০০ ৬০ নাম্বারে ফোন করে বিনামূল্যে তথ্য পরামর্শ নিতে পারেন | 

***লেখক: প্রিন্সিপাল কনসাল্টেন্ট, এএফসি হেলথ ফরটিস হার্ট ইন্সটিটিউট খুলনা

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২০
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।