ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

লাইফস্টাইল

দু’দণ্ড শান্তি পেতে বটের ছায়ায়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৯
দু’দণ্ড শান্তি পেতে বটের ছায়ায় বটগাছ

বহুদূর যেতে হবে, হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত পথিক একটু জিরিয়ে নেয় বটের ছায়ায়। এদৃশ্য গ্রাম বাংলার খুব চেনা ছিল একটা সময়। এখন সেই পথিকও আর হেঁটে পথ পারি দেন না আর শহুরে জীবনে কোথায় সে মায়াভরা বটের ছায়া? 

এই গরমে সেই আগের মতো দু’দণ্ড শান্তি খুঁজতে যেকোনো ছুটির দিনে ঘুরে আসতে পারেন, তেমনই এক বটের ছায়ায়। এটি যে-সে বট গাছ নয়, প্রায় পাঁচ’শ বছরের ঐতিহ্যবাহী বট ও পাকুড় গাছ।

সেখানে ঘুরে এসে লিখেছেন ফরিদ ফারাবী।  

ঢাকার পাশেই ধামরাই উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের সাইট্টা গ্রামে রয়েছে প্রায় পাঁচ বিঘা জমি জুড়ে ডালপালা ও শেকড় ঘিরে রয়েছে বট-পাকড় গাছে।  

বৃক্ষরাজি এমনিতেই কাছে টানে, আর তা যদি হয় শত বছরের পুরনো সেক্ষেত্রে তো আর কোনো কথাই নাই। ঐতিহ্যবাহী বটগাছ ও পাকুড় গাছের খোঁজ পেয়ে তাই আর ইচ্ছা দমিয়ে রাখতে পারিনি।  

এক ছুটির দিনে বের হয়ে গেলাম ধামরাইর উদ্দেশ্যে। লম্বা ছুটি হওয়াতে বাস চালকেরা সবাই নিয়মিত রুট ফেলে ঢাকা আরিচা ট্রিপ দিতেই ব্যস্ত।  

সরাসরি বাস না পেয়ে গাবতলী থেকে নবীনগর হয়ে  পৌঁছাই ঢুলিভিটা। সেখান থেকে অটোতে ধানতারা বাজার।  

যেতে যেতে পরিচয় হলো আরও দুই পর্যটকের সাথে। তারাও যাচ্ছেন সাইট্টার দিকে। বাজারের গরম গরম মিষ্টি খেয়ে সবাই মিলে ভ্যানে করে রওয়ানা হলাম সাইট্টার পথে।  

বটগাছধামরাইর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহুকাল আগে থেকেই সমৃদ্ধ। এছাড়া কৃষিজ পণ্য উৎপাদনেও ধামরাই বেশ এগিয়ে। প্রচুর পরিমাণ লেবু ও কলা উৎপাদন হয় এঅঞ্চলে। রাস্তার পাশেই বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চোখে পরে লেবু বাগান।  

অল্প কিছু দূর যেতেই কাঁচা মাটির রাস্তা ধরে নেমে আসলাম। দূর থেকেই চোখে পড়ে সুবিশাল বটগাছ। বলা হয়ে থাকে এই গাছ দুটি প্রায় ৫০০ বছর আগে দেবীদাস বংশের পূর্বপুরুষদের কেউ রোপন করেছিলেন। গাছ দু’টি একটা আরেকটার সঙ্গে এমনভাবে মিশে আছে যে, দেখে আলাদা করাই দুষ্কর। পাতায় শেকড়ে ঝুকে থাকায় দূর থেকে একটা বিশাল ঝোপের মতোই মনে হয়।  

তৎকালীন সনাতন ধর্মীদের বিশ্বাস অনুসারে বটগাছকে নারী আর পাকুড়-গাছকে ধরা হত পুরুষ। সে হিসেবে এই গাছ দুটোকে স্থানীয়রা অনেকেইস্বামী-স্ত্রী বলে থাকেন। নানা রকমের মিথ প্রচলিত থাকায় গাছগুলোর ডালপালা কেউ কাটতে সাহস পায়না।  

বটগাছ
তীব্র গরমের দাবদাহে গাছের সুশীতল ছায়ায় যেন স্বর্গীয় প্রশান্তি অনুভব করছিলাম। দেশের নানা প্রান্ত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছিলাম সবাই। ছবি তোলা ও আশপাশ ঘুরে দেখায় কেটে গেলো লম্বা সময়। দুপুর পেরিয়ে গেলে ফেরার পথ ধরলাম।  

সাইট্টা  যেতে 
ঢাকা থেকে ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা নেমে সেখান থেকে অটোতে ধানতারা বাজার আসতে হবে। ভাড়া ৫০-৬০ টাকা। ধানতারা থেকে রিক্সা বা ভ্যানে করে ২০ টাকা ভাড়ায় যাওয়া যাবে সাইট্টা  বটগাছের সামনে। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েও আসা যায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৯
এসআইএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad