ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

লাইফস্টাইল

শারদের হাট: দেশিপণ্যের মেলা

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৮
শারদের হাট: দেশিপণ্যের মেলা শারদের হাট

‘ধর্ম যারযার উৎসব সবার’ এই বিশ্বাসে উজ্জীবিত কয়েকজন উদ্যোক্তার আয়োজনে রাজধানীতে শুরু হতে চলেছে এক জমজমাট প্রদর্শনী। 

‘শারদের হাট’ শীর্ষক প্রদর্শনীটি অনুষ্ঠিত হবে ধানমন্ডির WVA (ডব্লিউভিএ) অডিটোরিয়ামে, আগামী ৬ থেকে ৮ অক্টোবর।  

আসন্ন দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে থাকছে কসমেটিক্স, অর্গানিক বিউটি কেয়ার প্রোডাক্ট, গহনা, গহনা বানানোর সরঞ্জাম, দেশীয় শাড়ি, বই ইত্যাদি।

বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকবে চোখ ধাঁধানো পার্টি ডিজাইনের ব্যাগ আর লোভনীয় সব খাবার।  

এ আয়োজনে যারা থাকছে: 
১. রাঙা
২. তুগুন
৩. অ্যাস্টেরিয়া
৪. সুইট পটেটো
৫. প্রিয়তমেষু
৬. ওয়াও ক্রাফট
৭. মৃন্ময়ী 
৮. রেনে বাংলাদেশ 
৯. ফ্লেভারস বাই পুনিজ কিচেন
১০. হেবাং
১১. রসুইঘর
১২. বইয়ের জাহাজ

২০১৪ সালের পহেলা বৈশাখ থেকে শুরু হয় রোকসানা রশীদের তাঁতে বোনা দেশি শাড়ির অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘সুইট পটেটো’। রোকসানার মতে, যত দিন যাচ্ছে বিদেশি কাপড়ের আগ্রাসন ততই বাড়ছে। বলা যায়, বিদেশি কাপড়ের বিরুদ্ধে পাল্টা অবস্থান তৈরি করতেই এ প্রয়াস। প্রথমে শখের বশে অল্পকিছু শাড়ি নিয়ে নিজেদের মধ্যেই ছিল, পরে গণ্ডি বড় হতে হতে ক্রেতার চাহিদাও বাড়তে থাকে। এভাবেই দাঁড়িয়ে গেল সুইট পটেটো। এখন দেশে এবং বিদেশে শাড়িপ্রেমীদের কাছে ‘সুইট পটেটো’ একটি প্রিয় নাম।

নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে প্রিয়াঙ্কার, আর এরকমই দু’টি প্রচেষ্টা ‘তুগুন’ ও ‘হেবাং’ থাকছে শারদের হাটে। এই ইভেন্টে বেচাবিক্রির পাশাপাশি নতুন নতুন কাস্টমারদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হবে বলে আশা করেন প্রিয়াঙ্কা। কাপড়ের ব্যাপারে তার মূল লক্ষ্য আরামদায়ক ও স্টাইলিশ কাপড় মানুষের কাছে তুলে ধরা।  

মাশহুদা হক ইফার 'প্রিয়তমেষু' শুরু হয়েছিল খুব ক্ষুদ্র পরিসরে।  ইফা বলেন, এদেশের তাঁতিদের কাছ থেকে দেখে দেখে আমার মধ্যে যে পরিমাণ মুগ্ধতা তৈরি হয়েছে তা বলে বোঝানো যাবেনা। প্রচণ্ড গরমে ফ্যান ছাড়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা একটানা কাজ করে শাড়িতে শৈল্পিক স্বত্বা ফুটিয়ে তুলতে তাদের মনোযোগ ও ধৈর্যের কোনো তুলনা হয়না। তাদের এই কষ্টের কাজ সবার কাছে নিয়ে আসা এবং তাদের পারদর্শিতা তুলে ধরাই আমার লক্ষ্য। এই পথচলায় অসংখ্য অপরিচিত ও পরিচিত মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি যা আমাকে এই কাজ করে যাওয়ার শক্তি যোগায়।

অ্যাস্টেরিয়ার শুরু ২০১৩ সালে, যখন অনলাইনে রূপচর্চার সামগ্রী বিক্রি অতটা জনপ্রিয় হয়নি। এই ধরনের সামগ্রীর জন্য তখন সবাই স্থানীয় দোকানগুলোর ওপরই ভরসা করতেন। রাজধানীর বাইরে শখের এই জিনিসগুলো খুঁজে পাওয়া যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি রাজধানীতেও হাতে গোনা কিছু প্রতিষ্ঠান ছাড়া মানসম্মত কসমেটিকস্‌ খুঁজে পাওয়া যেত না বললেই চলে। তাছাড়া অনেক নকল পণ্যে বাজার সয়লাব ছিল। নিজে ডাক্তার হওয়ার সুবাদে এসব নিম্নমানের নকল পণ্যের ক্ষতিকর দিকগুলো জানতেন মিতি নাজনীন ও সানজিদা আলম। এভাবে নিজস্ব গণ্ডির মানুষদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের প্রসাধনী দেশে নিয়ে আসার তাগিদ অনুভব করেন তারা।  

বোহেমিয়ান আর এথনিক ধাঁচের হ্যান্ড মেড গহনার প্রতি সবসময়ই ভালোবাসা ছিল ঈথা চাকমার। দেশের বাজারে এই ধাঁচের গহনার অভাব থেকেই ‘রাঙা’ সৃষ্টির তাগিদ অনুভব করেন তিনি। স্বপ্ন আছে ভবিষ্যতে আমাদের এথনিক গহনাগুলোকেও নিয়ে আরও কাজ করার।

নিজে মজাদার খাবার খেতে এবং অন্যদের খাওয়াতে পছন্দ করেন লাখীয়া, এ ব্যাপারটি মাথায় রেখেই ‘রসুইঘরে'র  যাত্রা। দেখা যায়, সময়ের অভাবে, অসুস্থতা ও বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে অনেকে প্রিয় খাবারটি খেতে পারেন না অথবা প্রিয়জনকে খাওয়াতে পারেন না। এই মানুষগুলোকে তাদের মন মতো খাবারটি রান্না করে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ইচ্ছে নিয়েই এই উদ্যোগ। ধীরে ধীরে এরসঙ্গে যোগ হয়েছে রান্নায় কাজে লাগে এমন প্রয়োজনীয় তেল, মশলা, ঘি, মধু, পিঠা, ফ্রোজেন খাবার ও আনুষঙ্গিক উপাদান। চেষ্টা থাকে কাঁচামাল কেনা থেকে শুরু করে প্যাকেজিং পর্যন্ত খাবারটি যেন হয় ফ্রেশ।  

যেকোনো ছোট ছোট জিনিস দেখলেই সেটা দিয়ে এটা-ওটা বানাতে ইচ্ছা হয় আনিকা আনানের। আঁকাআঁকির এই ভূতই আসলে ‘ওয়াও ক্র্যাফট’-এর অনুপ্রেরণা। উদ্যোগটির হাত ধরে হেঁটে চলছেন আনিকা ও তার জীবনসঙ্গী নিয়াজ। তারা কাজ করছেন হাতে আঁকা দেশীয় কাপড়ের ব্লাউজ, কুর্তি, শাড়িসহ কাঠ, মেটাল, আর্টিফিশিয়াল ক্লে, ঝিনুক, মাটি ইত্যাদির গহনা নিয়ে।  

রাতজাগা বই পড়ুয়া তরুণদের নিয়ে কিছু একটা করতে হবে এই চিন্তা থেকেই ২০১৪ সালে জন্ম হয় ‘বইয়ের জাহজ’। বর্তমানে চারজন নাবিক বিশ্বের চারটি দেশ থেকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন এই জাহাজ। সাগর কান্তি দেব আছেন ফ্রান্সে, আরাফাত হোসেন আছেন যুক্তরাজ্যে, ওয়াসিফ ই এলাহি আছেন অস্ট্রেলিয়াতে আর সুখ পাখি আছেন বাংলাদেশে। ইংলিশ, ফ্রেঞ্চ, জার্মান, ইতালিয়ান, স্প্যানিশ, আরবিসহ বিভিন্ন ভাষার খুবই দুর্লভ বই থেকে শুরু করে একেবারে হাল আমলের বেস্ট সেলার বইসমূহ অত্যন্ত কম খরচে দেশে আনছে বইয়ের জাহাজ। দেশে আছি বলে বিদেশি অরিজিনাল প্রিন্টের বই সুলভে পাচ্ছি না এই আফসোস যেন কোনো পড়ুয়ার না থাকে সেই লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে বইয়ের জাহাজ।

‘রেনে বাংলাদেশের’ শুরু ২০১৫ সালে। বাজারে দেশীয় ব্র্যান্ডের ব্যাগের শূন্যস্থান পূরণের জন্য সানজানা আর নাইমুলের হাত দিয়ে এর শুরু। দেশীয় বিভিন্ন উপাদান যেমন চামড়া, আর্টিফিশিয়াল চামড়া, পাট, কাপড়সহ নানা উপাদান দিয়ে ব্যাগ এবং বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে এই উদ্যোগ। নিজেদের ৩য় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিশেষ ছাড় নিয়ে রেনে বাংলাদেশ থাকছে শারদের হাটে।

পুনিজ কিচেন দেশের অন্যতম পরিচিত অনলাইন কেক শপ। এর উদ্যোক্তা আনিকা আলম ও মোস্তফা রুমি প্রথমে সখ থেকেই তাদের এ ব্যবসা শুরু করেন। নিজেদের দোকান রয়েছে রাজধানীর পান্থপথে। ১৬ থেকে ১৭টি ফ্লেভারের পাশাপাশি রয়েছে স্পেশাল থিম বেসড কেক।

দুই বন্ধু সামিয়া ও রাকশান্দার হঠাৎ একটা কিছু করার চিন্তা নিয়ে 'মৃন্ময়ী'র পথচলা। সামিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমরা দু'জনই গহনা খুবই পছন্দ করি এবং অনেকদিন ধরে এ নিয়ে কিছু একটা করতে চাচ্ছিলাম। দেশি গহনা তৈরি দিয়ে শুরু। আমাদের দুই বান্ধবীর সখে গড়া আমাদের এই মৃন্ময়ী।

মেলা প্রতিদিন সকাল ১১ টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।  

বাংলাদেশ সময় : ১৭২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৮
এসআইএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।