ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

লাইফস্টাইল

ভূমিকম্প-সচেতনতা

হেলেন চৌধুরী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১১
ভূমিকম্প-সচেতনতা

সম্প্রতি তুরস্কে ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে তিনশতাধিক মানুষের মৃত্যু এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি আমাদের নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে।

দেশে প্রায় ৬১ বছর পরে বড় এবং দীর্ঘস্থায়ী ভূমিকম্প অনুভূত হয় গত ১৮ সেপ্টেম্বর।

সন্ধ্যে ৬:৪২ মি: থেকে সন্ধ্যে ৬:৪৪ মি:, এই দুই মিনিট স্থায়ী হয় ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে তার মাত্রা ছিল ৬.৮। বাংলাদেশ ও উত্তর পূর্ব ভারতে অনুভূত কম্পনটির উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দূরে ভারতের সিকিম রাজ্যের রাজধানী গ্যাংটক থেকে ৬৪ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি কম্পন অনুভূত হয় দিনাজপুর, পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, রংপুর ও গাইবান্ধা এলাকায়। কম্পনের ফলে রাজধানী ঢাকার কয়েকটি ভবনের ক্ষতি হয়।

ভূমিকম্প, একটি প্রাকৃতিক দূর্যোগ এই দূর্যোগ যে কোন মূহূর্তে আবার হানা দিতে পারে।

 সে জন্য সবাইকে ভূমিকম্প হলে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে।

  • কম্পন শুরু হলে বালিশ, কম্বল, বই-খাতা, কাঁথা দিয়ে ডেকে রাখতে হবে
  • কম্পন না থামা পর্যন্ত খাট, ডাইনিং টেবিল, ও রুমের কোণে আশ্রয় নিতে হবে
  • চুলা, বিদ্যুৎ জ্বালানো থাকলে বন্ধ করতে হবে
  • জানালার পার্শ্বে দাড়ানো একদমই যাবে না
  • উঁচু ভবনে থাকলে লিফট ব্যবহার করা যাবে না
  • আর আপনি যদি যানবাহনে চলাচল করছেন, এমন অবস্থায় ভূমিকম্প শুরু হয়। তখন আপনাকে রাস্তার পার্শ্বের খোলা জায়গায় গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করে অবস্থান করতে হবে
  • ভূমিকম্পের সময় টর্চলাইট হাতে রাখা প্রয়োজন
  • ভূমিকম্পের সময় ভাঙ্গা দেয়ালে আপনি যদি চাপা পরেন তাহলে, কোন রকম নড়াচড়া করবেন না এবং শ্বাস নালিতে যাতে ধুলাবালি ঢুকতে না পারে সেজন্য যথা সম্ভব নাক-মুখ হাত দিয়ে ডেকে রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে উদ্ধার কর্মীদের খবর দেয়ার চেষ্টা করতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী, বাংলাদেশে রিখটার স্কেল ৬.৯ মাত্রায় ভূমিকম্প হলে শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকায়ই বাহাত্তর হাজার ভবন ধসে পড়বে সেই সাথে লাখ লাখ মানুষ মৃত্যু বরণ করবে। বহুতল ভবন নির্মাণ করার আগে আমাদের যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে:

  • বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বিল্ডিং কোড মানা
  • ভবনের উচ্চতা ও ওজন অনুযায়ী শক্ত ভীত দেওয়া
  • অবকাঠামোগুলোতে রেইনফোর্সড কংক্রিট ব্যবহার
  • গ্যাস ও বৈদ্যুতিক লাইন নিরাপদ ভাবে তৈরী করতে হবে
  • জলাশয় ভরাট করেই বাড়ি বা স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না
  • প্রতিটি তলা একই রকম রাখতে হবে।
  • বাড়ি নির্মাণের সময় M.S. রড এবং R.C.C কলাম ব্যবহার করতে হবে।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হচ্ছে না বলেই আমাদের দেশে প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলো সব সময় তারা করে ফিরছে। তাই আমরা যদি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্যে একটু সচেতন হই তাহলে এই বিপর্যয়গুলো থেকে আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি। সেই জন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো। গাছ পরিবেশের ভারসাম্যকে রক্ষা করে এবং দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি অনেকটা কম অনুভূত হয়। এজন্যে গাছ লাগানোর পাশাপাশি আমরা গাছের যত্ন নেব এবং দেশকে সবুজ চাদরে ডেকে দেব। এতে দেশ যেমন সবুজের সজীবতায় ভরে উঠবে ঠিক তেমনি প্রাকৃতিক দুর্যোগ অনেকাংশে কমে আসবে। জীবনে প্রতিটি বাঁকে বাঁকে আমরা যদি সচেতন থাকি, সাবধান থাকি তবে জীবনকে ঝুঁকি মুক্ত রাখতে পারব।

তাই আসুন-আতঙ্কিত না হয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে জীবনকে নিরাপদ রাখার চেষ্টা করি।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।