ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

লাইফস্টাইল

শুনতে শুনতে শেখা

প্রীতি ওয়ারেছা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১১
শুনতে শুনতে শেখা

শেখার অনেকগুলো পদ্ধতির মধ্যে শুনে শেখাটা মানুষের জীবনে অনেক বেশি সময় ধরে চলে এবং অনেক বেশি কার্যকরী। জন্মের পর একটা শিশু তার মায়ের ভাষাটা রপ্ত করে শুনে শুনেই।

তারপর তাকে আদব কায়দা,পারিবারিক ও সাংস্কৃতিক জীবনাচারণ এবং ধর্মীয় অনুশাসন শিক্ষা দেওয়া হয়। এইসব গুরুত্বপূর্ন আচরণের বেশির ভাগ শিশু শিক্ষালাভ করে পরিবারের বড় সদস্যের কাছে শুনে।

শিশুরা প্রকৃতিপ্রদত্ত অসাধারণ মেধা এবং স্মরণশক্তি নিয়ে পৃথিবীতে জন্ম লাভ করে। অনেক সময় জীবনে তারা একবার যা শুনে বা দেখে সেগুলো তাদের স্মৃতিতে স্থায়ী হয়ে যায়। শিশুরা স্কুলে যেতে শুরু করলে তখন টেক্সট বুকের, ক্লাস ওয়ার্ক, হোম ওয়ার্ক, সাপ্তাহিক ক্লাস টেস্ট এসব লেগেই থাকে। এর ফাঁকে অভিভাবক চিন্তিত থাকেন সন্তানকে ধর্মীয় আচার গুলো হাতে কলমে শেখানোর বিষয়ে।

যেমন, নামায আদায়, কোরআন শিক্ষা। স্কুলের পড়ালেখার বাইরে এই বিষয়ে সময় দেওয়াটা তখন খুবই কষ্টকর হয়ে যায়। তারপরেও ধর্মীয় অনুশাসন মানুষকে সঠিক পথ প্রদর্শন করে আর সেই লক্ষেই পড়ালেখা ও খেলাধুলার পাশাপাশি সব অভিভাবকেরই এই বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে শিশুবয়স থেকেই শেখানোর প্রচেষ্টা থাকে। নামায শিক্ষাটা খুব সহজেই আপনি শিশুকে শিখিয়ে দিতে পারেন।

ছড়া, গান, কবিতা এসব বাচ্চারা শুনে শুনে যেভাবে ঠোঁটস্থ করে ধর্মীয় শিক্ষাটাও শিশুরা সেভাবেই আনন্দের সাথে শিখতে পারে। এর জন্যে বাবা মাকে খুব বেশি শ্রম দিতে হবেনা। বই হাতে ধরিয়ে মুখস্থ করার জন্য সন্তানকে পেরেসানি করার দরকার নাই। আপনি যদি একটু সচেতন বাবা মা হন তাহলে দেখবেন শুধু আপনার একটু সহযোগিতায় কত সহজে বাচ্চারা সবকিছু আয়ত্ব করছে।

শিশুর তিন বছর বয়সের পর থেকেই প্রতিদিন ঘুমানোর প্রস্তুতি হিসাবে বিছানায় শুয়ে বাচ্চাকে গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়ানোর পাশাপাশি নির্দিষ্ট একটা সুরা বা নামাযের কোন একটি বিষয় একবার করে শুনাতে থাকুন(অন্যান্য ধর্মানুসারীরা তাদের ধর্ম অনুযায়ী ) কয়েকদিন পর সেটি আপনার সাথে শিশুকে বলতে বলুন। তারও কয়েকদিন পর দেখবেন শিশুটি সেটি একাই বলতে পারছে। একটা শিখে ফেললে তবেই আরেকটি আগের মত করে শুরু করুন।

এভাবে অনেকগুলো শিখে গেলেও প্রতিরাতে একবার করে বলার চর্চাটা চালিয়ে যেতে হবে। বাচ্চাকে বলার জন্য চাপ দেওয়ার দরকার নাই, আপনি নিজেই নিয়মিত বলুন তাতেই সে শিখে ফেলবে। বাচ্চাকে ধর্মীয় আচার শেখানোর সময় তাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিন তার পছন্দ অপছন্দের। যেদিন বাচ্চার শুনতে ভাল লাগবে না সেদিন শুনাবেন না। তখন বরং নিজ নিজ ধর্মীয় নৈতিক মূল্যবোধপূর্ণ কাহিনী, হাদিসগুলো শোনান যদি সে তা পছন্দ করে শোনে।
    
এভাবে একসময় শিশুটি নামাযের সব উপকরণ স্বাচ্ছন্দে শিখে যাবে। এবার নামায পড়ার বয়স হলে শুধু নামাযের নিয়মটি শিখিয়ে দিন।

খেয়াল রাখতে হবে গল্পের ফাঁকে আমরা যেন কোনরকম ধর্মীয় গোঁড়ামি ওদের ভেতর ঢুকিয়ে না দেই।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।