ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

লাইফস্টাইল

বিশ্বজুড়ে রমজান বৈচিত্র্য

মারিয়া সালাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১০
বিশ্বজুড়ে রমজান বৈচিত্র্য

বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের কাছে রমজান মাস সংযম এবং রহমতের মাস হিসেবে পরিচিত। তাই বিশ্বের বৃহত্তর মুসলিম দেশগুলো নানা উৎসাহ এবং উদ্দীপনার সাথে রমজানকে বরণ করে নেয়।

রমজানের মূল শিক্ষাকে অপরিবর্তিত রেখে তার সাথে নিজস্ব আচার এবং আঞ্চলিক রীতিনীতির সমন্বয় ঘটিয়ে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় এ মাসটি।

রমজান উপলক্ষে গ্যাটে ইনস্টিটিউট মাসব্যাপী চিত্র প্রদর্শনী এবং লেকচার সিরিজের আয়োজন করেছে।   এই বিশেষ আয়োজনে প্রাধান্য পেয়েছে বিভিন্ন মুসলিম দেশের রমজান পালনের আঞ্চলিক রীতিনীতি। এর ওপর ভিত্তি করে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর-এর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো কিছু মুসলিম দেশের স্থানীয় আচার-অনুষ্ঠান।  

মালদ্বীপ: ইসলাম মালদ্বীপের রাষ্ট্রীয় ধর্ম। এ দেশের জনসংখ্যার বেশিরভাগই সুন্নি। নানা রকম সংস্কৃতিক আচার-অনুষ্ঠান এবং গানবাজনার মাধ্যমে এখানে রমজানকে বরণ করা হয়। সূর্যাস্তের পর সবাই একত্রে ইফতার করে এবং আঞ্চলিক নাচ ও গানের আয়োজন করে। ঘরে ঘরে চলে কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা। নৈশভোজের জন্য তৈরি করা হয় নানা মজাদার খাবার। সবাই একত্রে বসে এসব খাবার খায় এবং বিভিন্ন গল্পে মেতে উঠে। এসব খাবারের মধ্যে প্রাধান্য পায় মাছের নানা পদ ।

মাসজুড়ে চলে এ ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ সময় আঞ্চলিক নাচ গানের সাথে আধুনিক সঙ্গীতের এক অভূতপূর্ব সংমিশ্রণ চোখে পড়ে মালদ্বীপের পথে পথে।

পাকিস্তান: পাকিস্তানি  মুসলিমরা  বিভিন্ন সম্প্রদায়ে বিভক্ত। রোজার মাস উপলক্ষে তারা সবাই আলাদা আলাদাভাবে পালন করে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান। ধর্মীয় আচারের সাথে মসজিদে মসজিদে গাওয়া হয় নানা প্রকার গজল এবং কাওয়ালি। সেহরির সময় গান গেয়ে এবং বাদ্য বাজিয়ে জাগিয়ে তোলা হয় ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের।
ইফতার ও নৈশভোজের সময় বিভিন্ন খাবারের আয়োজন করা হয়। খাবারের তালিকায় প্রাধান্য পায় মাংসের নানা পদ। এই দেশটির রোজার সময়ের আচার-অনুষ্ঠান অনেকটাই আমাদের দেশের মতো।

ইরান: নানান আচার অনুষ্ঠান ও বিশেষ নিয়মনীতি পালনের মাধ্যমে ইরানীয়ানরা এই মাসটিকে বরণ করে নেয়। ঢোল পিটিয়ে, পাথর ছুড়ে এবং কার্পেট পরিষ্কার করে তারা রমজানের আগমনকে স্বাগত জানায়। ইরানের বিভিন্ন এলাকা এবং গোত্রের রোজা পালনের রীতিনীতিতে আছে ভিন্নতা।

ইরানের সিরাজ শহরে শাবানের শেষ শুক্রবার থেকেই শুরু হয় রমজান পালনের উৎসব। তারা এ সময় প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করে। শহরের পার্ক এবং বাগানগুলোতে বেড়ে যায় মানুষের আনাগোনা। নতুন বিবাহিতদের ইফতার এবং ফুলের তোড়া উপহার দেয় কাছের মানুষেরা ।

উত্তর প্রদেশের ইরানীয়রা রমজানের কদিন আগে থেকেই রোজা রাখে। তাদের ভাষায় এই রীতিকে বলে ‘পিশাশো’। রমজান উপলক্ষে তারা তৈরি করে এক ধরনের কেক। শিশু এবং বয়স্করা গান গেয়ে বাড়ি বাড়ি যায় এবং পিঠা চায় ।


তুরস্ক: রমজান উপলক্ষে এ দেশের লোকরা আত্মীয় ও বন্ধুদের বাড়িতে বেড়াতে যায়। তাছাড়া সরকারিভাবে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের। এসব অনুষ্ঠানে সবাই একত্র হয়ে বিশেষ প্রার্থনা করে। মাসজুড়ে তারা দরিদ্রদের টাকা এবং খাদ্য দান করে।

তারা রমজান উপলক্ষে প্রস্তুত করে বিশেষ খাদ্য এবং স্কুল, মসজিদ এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে একত্র হয়ে ইফতার করে।

ইন্দোনেশিয়া: ইন্দোনেশিয়ার লোকেরা রমজান উপলক্ষে লিমবাং নদীতে গোসল করে। এই রীতিকে স্থানীয় ভাষায় বলে ‘মানডি বেলিমাউ’ । ১৭০০ সালের গোড়ার দিক থেকে তারা এই রীতি পালন করে আসছে। শরীর ও মনকে রমজানের আগে পবিত্র করার লক্ষ্যে তারা এই নিয়ম পালন করে।
তাছাড়া তারা এ সময় স্থানীয় সাধুদের কবর জিয়ারত করে ও বিভিন্ন আঞ্চলিক খাদ্য গ্রহণ করে ইফতার করে।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২১১৮, আগস্ট ১৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।