ঢাকা, বুধবার, ৯ আশ্বিন ১৪৩২, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৭

লাইফস্টাইল

ভালোবাসা-স্নেহ সবই তাদের প্রাপ্য...তবে

শারমীনা ইসলাম, লাইফস্টাইল এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৪০, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৬
ভালোবাসা-স্নেহ সবই তাদের প্রাপ্য...তবে

মোটরসাইকেল কিনে না দেয়ায় সন্তানের আগুনে দগ্ধ বাবার মৃত্যু! সংবাদটি আমাদের চিন্তিত করেছে, করেছে সঙ্কিত, ব্যথিত।  

সব সন্তান বাবা মায়ের কাছেই অনেক প্রিয়।

সন্তানের মঙ্গল চেয়ে, তাদের ভবিষ্যৎ আরও সুন্দর করতেই সব চেষ্টা করেন বাবা মা। সন্তানের বেড়ে ওঠার সময়ে ১৩ থেকে ১৯ বছর এই বয়ঃসন্ধি সময়টি তাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে তাদের মানসিক এবং শারীরিক বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে। চারপাশের পরিবেশ, বন্ধু এবং সমাজের অনেক কিছু নিয়ে সে ভাবতে থাকে। অনেক সময় সে নিজের মতো করে সবকিছু পেতে চায়। যা হয়তো সব সময় তাকে দেওয়া সম্ভব হয় না। আর এই না পাওয়া অথবা কোনো বাধা থেকে তার মধ্যে তৈরি হয় হতাশা, কখনো বা শখের বশেই সে জড়িয়ে পড়ে অসামাজিক কোনো কাজে বা মরণঘাতী নেশায়। কেউ কেউ তো প্রিয় বাবা-মায়ের জীবন নিতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। তাই এই স্পর্শকাতর সময়টিতে সন্তানের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের বিশেষ করে বাবা মায়ের তৈরি করতে হবে ভালো বন্ধুত্ব। তাদেরকে সঠিক পথে সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখতে বাবা মাকে যা করতে হবে:   

খাবার টেবিলে একসাথে
পরিবারের সবাই এখন ব্যস্ত। ঠিক ঘড়ির সময় ধরে খাবার টেবিলে তিন বেলা হাজির হওয়া সত্যি সম্ভব নয়। তবে ইচ্ছা থাকলে একবেলা তো অবশ্যই সম্ভব। পরিবারের সবাই মিলে রাতের খাবার একসঙ্গে খাওয়া বাধ্যতামূলক করে দিন। খাওয়ার সময় টিভি না দেখে বা গম্ভীর মুখে তাড়াহুড়ো করে খাওয়া শেষ না করে, সারাদিন কে কী করেছে গল্পে গল্পে জেনে নিন।  

তার কথার গুরুত্ব দিন
অনেক সময় টিনএজাররা এমন সব বলতে থাকে যার হয়তো তেমন অর্থ থাকে না বা কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও বড়রা গুরুত্বের সঙ্গে নেন না। আপনার সন্তানকে নিরাপদ রাখতে ছোট ছোট এই বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। অন্যথায় সে বড় কোনো সমস্যায় পড়লেও আপনার সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবে না।

টিনএজারদের ছোটমানুষ ভাবার কোনো কারণ নেই। তারা প্রতিদিন নতুন নতুন বিষয় শিখছে এবং সে বিষয়গুলোর সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিচ্ছে। সন্তানের চিন্তার গুরুত্ব দিলেই সে আপনাকে আরও শ্রদ্ধা করবে এবং আপনাদের মধ্যে সম্পর্ক হবে আরও মধুর।  

মাসে অন্তত একদিন
সারা মাসের একটি দিন ফ্রি রাখুন। এই দিনে কি করা যায় তা নিয়ে সবাই মিলে পরিকল্পনা করুন। সন্তানকে নিয়ে বাইরে কোথাও ঘুরতে যান। তার পছন্দের কোনো খাবার খান একসঙ্গে কেনাকাটা করুন। নিয়মিত এটা করতে থাকলে ফ্যামিলি বন্ডিং আরও দৃঢ় হবে। কিছুদিন পরে দেখবেন সে এই বিশেষ দিনটির জন্য অপেক্ষা করছে।

কী করছে তারা
সারাদিন বাবা মা দুজনকেই বাইরে থাকতে হয়। সন্তান যখন বাড়িতে একা থাকছে তারা কী করছে, বন্ধুদের সঙ্গে কী ধরনের কথা হচ্ছে, অথবা ইন্টারনেটে কোন সাইটগুলোতে সে বেশি সময় ব্যয় করছে তার খোঁজ রাখুন। মাঝে মাঝে সন্তানের বন্ধুদের পরিবারসহ বাড়িতে ডাকুন। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন। তাতে আপনার বুঝতে সুবিধা হবে আপনার সন্তানটি কাদের সঙ্গে মিশছে।

নিজের কাজ
নিজের পড়ার টেবিল, বিছানা বা কাপড়গুলো পরিষ্কারের দায়িত্ব সন্তানকেই দিন। অতিথি এলে চা নাস্তা তৈরিতেও তার সাহায্য চান। বাড়িতে ছোট ভাইবোন বা বয়স্ক কেউ থাকলে তাদের দেখাশোনার কিছু দায়িত্ব তাকে পালন করতে বলুন।

সবকিছুতেই হ্যাঁ নয়
সন্তানের সঙ্গে খুব ভালো বন্ধুত্ব নিশ্চয় তৈরি করতে হবে। তার সব প্রয়োজন সময়মতো পূরণ করতে হবে। তবে তার কোনো অযোক্তিক চাহিদা থাকলে কষ্ট করে তা পূরণ করা ঠিক নয়। নিজের পরিবারের আথির্ক অবস্থা সবার জানা থাকা প্রয়োজন।

সবার ভালোবাসায় গড়ে উঠবে আমাদের টিনএজার।
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।