ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

লাইফস্টাইল

ন্যান্সির ভেতর বাহির

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১০

মেঘ-বৃষ্টি-আলো-বাতাস... প্রকৃতির সব আয়োজন বৃথা হয়ে যায় যদি প্রিয়জন কাছে না থাকে। ইদানিং গ্রামীন ফোনের একটি বিজ্ঞাপনে এক গ্রাম্যবধূর একাকিত্বের কথাগুলো মাঝে বলা হচ্ছে ।

এই বিজ্ঞাপনটির মাঝে ব্যবহার করা হয়েছে আবেগী এক জিঙ্গেল ... আমারে ছাড়িয়া বন্ধু কই রইলা রে। জিঙ্গেলে কন্ঠ দিয়েছেন এ সময়ের তুমুল জনপ্রিয় গায়িকা ন্যান্সি।

জিঙ্গেল, প্লে-ব্যাক, স্টেজ শো আর অডিও সেক্টরে এখন ন্যান্সির সমান ব্যস্ততা । তার ভিন্ন ধরনের  গায়কি  শ্রোতাদের করে রাখে মুগ্ধ। মাত্র তিন বছর বয়সে আজকের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী ন্যান্সির গানের হাতেখড়ি ওস্তাদ তারাপদ দাসের কাছে। পাশাপাশি চর্চা ছিল নাচের । এমন কি ছোটবেলায় নাচের জন্য বেশ কয়েকটি পুরস্কারও পেয়েছেন। তবে সব কিছুর উর্ধ্বে ছিল গান। মনের গহীনে সযতেœ লালন করে রেখেছিলেন স্বপ্ন, একদিন বড় শিল্পী হবেন। এই স্বপ্নের বাস্তবায়ন সম্পর্কে ন্যান্সি বলেন, ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন স্টেজ প্রোগ্রামে গান গেয়ে আসছি। গান গেয়ে পুরস্কারও পেয়েছি অনেক। ২০০৩ সালে রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হই। আমাদের পারিবারিক একটা অনুষ্ঠানে পরিচয় হয় ফেরদৌস ওয়াহিদ আঙ্কেলের সঙ্গে। অনুষ্ঠানে আমার গান শুনে তিনি মুগ্ধ হন। আমাকে তিনি হাবিব ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। এরপর হাবিব ভাইয়ের পাঞ্জাবীওয়ালা অ্যালবামটিতে কন্ঠ দিই। অ্যালবামটি জনপ্রিয়তা পাওয়ায় আমিও পরিচিতি পাই।

ন্যান্সির এরপরের গল্প  তো স্বপ্নের মতোই। এই অ্যালবামের পর শুধুই সামনের দিকে এগিয়ে চলা। ইতিমধ্যে বেশ কিছু সিনেমায় প্লেবাক করেছেন। গত বছর ‘থার্ড পার্সন সিঙ্গুলার নাম্বার’ ছবিতে  দ্বিধা গানটি গেয়ে আলোচনায় চলে আসেন, যার রেশ এখনো চলছে। শুধু কি ‘দ্বিধা’! তার গাওয়া প্রায় সব গানই শ্রোতারা সাদরে গ্রহণ করেছে। আকাশ ছোয়াঁ ভালবাসা ছবিতে ‘পৃথিবীর যত সুখ’ গানটি দিয়ে ন্যান্সির প্লেব্যাকে অভিষেক হয়। এরপর একে একে কন্ঠ দিয়েছেন- চন্দ্রগ্রহণ, আই লাভ ইউ, এইতো প্রেম, খোঁজ দ্য সার্চ, ভালবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না, দ্য স্পিড, লাভ টোয়েন্টি ওয়ান সহ বেশ কিছু সিনেমায়। সম্প্রতি ‘এরই নাম প্রেম’ ও ‘এরই নাম ভালোবাসা’ ছবিতে ন্যান্সি কলকাতার জনপ্রিয় শিল্পী নচিকেতার সঙ্গে কন্ঠ দিয়েছেন। এছাড়াও এবার ঈদে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা  চারটি সিনেমায় তিনি প্লেব্যাক করেছেন।

ন্যান্সির প্রথম একক অ্যালবাম ‘ভালবাসা অধরা’। বছর দুয়েক আগে এটি বের হয়। তবে এ অ্যালবামটি নিয়ে নিজের মধ্যেই আছে তার অতৃপ্তি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, একজন শিল্পীর পরিচয় বহন করে তার সলো অ্যালবাম। তাই অ্যালবামের কাজ যথেস্ট সময় নিয়ে ধীরে-সুস্থে করা উচিত। আমার প্রথম অ্যালবামটি করেছি খুব তাড়াহুড়া করে। সেরকম পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি ছিল না বললেই চলে। এজন্যই অ্যালবামটির গানগুলো শ্রোতাদের স্পর্শ করতে পারে নি বলে আমি মনে করি। তাই দ্বিতীয় একক অ্যালবামে কাজটা সময় নিয়ে করতে চাই। কারণ আমার করে কাছে শ্রোতাদের প্রত্যাশা অনেক। ভালো কিছু গান উপহার দিয়ে সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে  চাই। ন্যান্সি জানান, এরই মধ্যে অ্যালবামটির কাজ শুরু করেছেন। সুর ও সঙ্গীত পরিচালনায় থাকছেন দেশের আলোচিত একাধিক মিউজিশিয়ন। আসছে ঈদের ৪/৬টি মিক্সড অ্যালবামে গান করেছেন ন্যান্সি। মধ্যে বেশ কয়েকটি মিক্্রড অ্যালবামের কাজ করেছেন তিনি।

গান করতে গেলে শিল্পীদের বিভিন্ন অভিঙ্গতার মুখোমুখি হতে হয়।   সেটা মধুর কিংবা তিক্ততার হতে পারে। এরকম একটি অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাইলে ন্যান্সি বললেন কিছুদিন আগে রাস্তা দিয়ে হাঁটছি। চার-পাঁচ বছরের একটা মেয়ে দৌড়ে এসে বললো,আন্টি ‘ভেতর- বাহির’ একটু গাইবেন। মেয়েটির কথা শুনে আমি তো অভিভূত । এই যে ভক্তদের এত ভালবাসা, ওটাই আমার বড় পাওয়া। আবার কেউ কেউ মোবাইলে নোংরা কথা এস এম এস পাঠায় , তখন খুব কষ্ট পাই। গান বিষয়ক চিন্তা ন্যান্সির মাথায় সবসময় ঘুরপাক খায়। একটু ফুসরত পেলেই তিনি টিভি কিংবা বই নিয়ে বসে পড়েন। বই পড়াও সংগৃহ করা তার অর্নতস হবি।   হুমায়ূন, বুদ্ধদেব, মারিওপূজো, শঙ্কর প্রমূখের বইয়ের একনিষ্ঠ মুগ্ধ পাঠিকা এই শিল্পী। ব্যবসায়ী স্বামী সৌরভ ও সাড়ে তিন বছরের মেয়ে রোদেলাকে নিয়ে সাভারে ন্যান্সি সাজিয়েছির সংসার।

গান নিয়ে বিশেষ কোন পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মা আর শিশুর মধ্যে থাকে অদুশ্য সুতার বন্ধন। গান আমার কাছে সন্তানের মত। চাই আজীবন সুরের খেলায় মেতে থাকতে। সুরের মায়াজালে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রাখতে চাই। এ ছাড়া গান নিয়ে আর কিছু বলার নেই।

এক চিলতে ন্যান্সি
ডাক নাম    : ন্যান্সি
পুরো নাম    : নাজমুন মুনিরা
জন্ম          : ১৩ ডিসেম্বর, নড়াইল
বাবা          : নাইমুল হক
মা            : জোছনা হক
স্বামী         : আবু সাঈদ সৌরভ
রাশি          : ধনু
পড়াশোনা    : এইচ এস সি
নিজের প্রিয় পাঁচ গান: বাহির বলে দুরে থাকুক, পৃথিবীর যত সুখ, হাওয়ায় হাওয়ায়, আমি তোমার মনের ভেতর, এতদিন কোথায় ছিলে
প্রিয়শিল্পী    : সৈয়দ আবদুল হাদী।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।